ডেস্ক নিউজ : করোনা মহামারি পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরি। তিনি বলেছেন, সকলের জন্য সমতাভিত্তিক ভবিষ্যৎ অর্জনে ও সবুজ বিশ্ব নির্মাণে বৈশ্বিকভাবে উদ্ভাবনী সমাধানের দিকে সকলকে এগিয়ে যেতে হবে। সকলের মনে রাখতে হবে কভিড পরিস্থিতি সমগ্র বিশ্বেই আমূল পরিবর্তন এনেছে। গভীর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, স্বাস্থ্যঝুঁকি, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা সংকট, জীবিকা সংকট ইত্যাদি সকল বিষয় বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের সাথে জড়িত।
অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতি ও স্থিতিশীল সমাজ নির্মাণে সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক পুনরূদ্ধার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নারীরা অগ্রযাত্রীর ভূমিকা পালন করতে পারে। আজ রবিবার ফিলিপাইনের ম্যানিলায় ‘প্রায়োরিটাইজিং উইমেন রাইটস অ্যান্ড এম্পাওয়ারমেন্ট ইন কভিড-১৯ প্যান্ডেমিক রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি আরো বলেন, সমগ্র মানবতা আজ কভিড পরবর্তী পরিস্থিতির মুখোমুখি। কভিড মহামারি সকল সেক্টরে ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
নারী ও মেয়েদের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ গভীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সমাজের দরিদ্র অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ঘরে থেকে ভার্চুয়ালি কাজ করার নতুন ব্যবস্থা, ভ্যাক্সিন গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়গুলো নারীদের জীবন, জীবিকা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করেছে। কভিড মহামারিকালীন নারী ও মেয়েরা সহিংসতার শিকার হয়েছে। কভিডকালীন বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সীমান্ত পেরিয়ে বৈশ্বিকভাবে এসকল সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বিনিয়োগ দরকার। আন্ত দেশীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, দৈনন্দিন খরচ কমানো ইত্যাদি উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক পুনরূদ্ধারে সচেষ্ট হতে হবে। বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট বিশ্বের প্রতিটি দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। তাই সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সুশীল সমাজসহ সকলের মনোযোগী হতে হবে। সমাজের অতিদরিদ্র ব্যক্তিদের সহায়তা, আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা জাল বাস্তবায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সমাজের অতি দরিদ্র গোষ্ঠী যেন ছিটকে না পরে সে লক্ষ্যে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
স্পিকার বলেন, নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা, কোলেটারেল ফ্রি লোন, ক্যাশ ইনসেন্টিভস, শ্রমবাজারে তাদের প্রবেশ বৃদ্ধি ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। এর মাধ্যমে বৃহত্তর উন্নয়ন ও সবুজ বিশ্ব নিশ্চিতকরণ সম্ভব। নারী ও মেয়েদের প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার বিরূদ্ধে তাদের সুরক্ষা দিতে হবে। ই-কমার্সের মাধ্যমে অনলাইন প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জনে তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বিস্তৃত করতে হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৩ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:৫৮