সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন

শরীয়তপুরে প্রকল্প শেষের দিকে, সুবিধা মিলেনি খামারীর

খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি ।
  • Update Time : বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৩৫ Time View

খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলা ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৬ হাজার খামারী রয়েছে। খামার ও খামারীদের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ^ ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এনএটিপি-২ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে তবুও খামারীদের কাছে সহায়তা পৌঁছেনি। অথচ প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা বিল ভাউচারের মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে এনএটিপি-২ প্রকল্প শুরু হয়। প্রকল্পের সেবা খামারীদেও দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রতি ইউনিয়নে ১ জন করে সীল নিয়োগ দেওয়া হয়। ৫ বছর মেয়াদী এই প্রকল্প ২০২৩ সালের ৩০ জুন শেষ হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারীদের গৃহপালিত পশু-পাখি পালন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, কৃমি দমন ক্যাম্প, টিকা প্রদান ক্যাম্প ও এক্সপোজার ভিজিট হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও বেশীরভাগ খামারী এই প্রকল্পের খবরই জানেন না।


ডোমসার ইউনিয়নের কোয়ারপুর গ্রামের মোকছেদ তপাদারের স্ত্রী বিউটি, শৌলপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সারেঙ্গা গ্রামের জসিম সরদার, রশিদ সরদার, কাদির সরদার, বিনোদপুর সুবেদার কান্দির সেলিম মাদবর ও কাজী কান্দির কালু মিয়াদের প্রত্যেকের ২ থেকে ১০টি পর্যন্ত গাভী রয়েছে। পাশাপাশি হাঁস-মুরগী ও ছাগলও আছে। এদের কেউ এই প্রকল্পের বিন্দুমাত্র কোন সুবিধা পায়নি বলে দাবী করেছেন। পশুর চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ডেকে আনলে ফি দিতে হয় পাশাপাশি ঔষধ কিনে নিতে হয়। প্রতিটি হাঁস-মুরগীর ভ্যাকসিনের জন্য ২০ টাকা করে দিতে হয়।

বিনোদপুর কাজী কান্দি গ্রামের বিধবা নাছিমা বেগম বলেন, তার ৫টি গাভি ছিল। কিছুদিন পূর্বে একটি গাভি বিক্রি করেছে। এখনও তার গোয়ালে ৪টি গাভি রয়েছে। গত বছর পশু চিকিৎসক খালেক এসে নাম লিখে নেয় এখনো তার কোন খবর আসেনি। সরকারি সহায়তা পেলে তিনি আরো ভালো ভাবে গাভি পালন করতে পারতেন। শৌলপাড়া সারেঙ্গা এলাকার সীমা আক্তার জানায়, তার ৪টি গাভী ও ৭০টি হাঁস-মুরগী রয়েছে। বছর খানেক পূর্বে তাকে এক বেলা প্রশিক্ষণ করিয়ে একটি খাবারের প্যাকেট ও ২০০ টাকা দিয়েছে। এর বাইরে সে আর কিছুই পায়নি।

শৌলপাড়া ইউপি সদস্য লিয়াকত হোসেন বলেন, তিনি পরপর ২ বার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তার এলাকায় প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের মাধ্যমে কোন চিকিৎসা বা সহায়তা দিতে দেখিনি। একজন ফার্মেসী মালিক জানায়, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার ফার্মেসী থেকে মাঝে মধ্যেই অলিখিত মেমো নিয়ে যায়। গতবার একসাথে ২০০ মেমো নিয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে ওই কর্মকর্তা ফার্মেসী মালিককে ফোনে জানিয়েছেন, ‘অডিট আসতে পারে, আপনাকে ফোন করলে বলবেন আমি আপনার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করেছি। এতে বুঝতে বাকি থাকে না প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা বিল ও ভাউচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে ভাগ বাটোয়ারা হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তরুন কুমার রায় বলেন, ৩৩টি সিআইজির মাধ্যমে ৩ হাজার ৯৬০ জনকে পশু-পাখি পালন সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ে চিকিৎসা ক্যাম্প করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এক্সপোজার ভিজিট, এলইও বেতন, টিএ/ডিএ ও সীল টিএ/ডিএ জ্বালানী খাতে অর্থ ব্যয় হয়েছে। এককথায় এই প্রকল্পের শুরুতেই তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। প্রকল্প লুটপাট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সদর উপজেলায় থাকবেন। তার যোগদানের পূর্ববর্তী সময়ে ২ বছরে চরজন কর্মকর্তা বদলী হয়েছেন। তালিকা অনুয়ায়ী তিনিই একমাত্র কর্মকর্তা একাধারে এক স্টেশনে ৬ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।

কিউএনবি/আয়শা/০৫ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit