জোঁক
——–
পরিবারে থাকা সুযোগ সন্ধানী সন্তানেরা হয় অনেকটা জোঁকের মতো। নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী বাবা মায়ের কাছ থেকে সে সর্বোচ্চ সুবিধাগুলো তারা চুষে নেয়।
বাবা মায়ের সামর্থ্য থাক বা না থাক্, তাদের কষ্ট হচ্ছে কি না হচ্ছে এটা তার দেখার বিষয় না। বাবা মায়েরাও সন্তানের চতুরতার কাছে হার মানে। নিজেরা ঋনগ্রস্ত হয়ে হলেও ওদের জন্য পৃথিবী উজার করে দিতে চায়। এসব সন্তানেরা সময়ের সাথে সাথে ধনী হয়।পয়সাওয়ালা হয়..।বিদেশ যায় কিংবা ব্যবসা করে..।গাড়ী বাড়ীর মালিক হয়।
হেসে খেলে আরামে আয়েশে পড়ালেখা করতে গিয়ে ৬/৭ টা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিও পরিবর্তন করে। আবার ব্যবসা করতে গিয়ে বাবা মায়ের কষ্টের টাকা ব্যবসায়ও ইনভেস্ট করে। অর্থাৎ জীবন নিয়ে ইচ্ছামতো খেলে..। কারন তার কোনো পিছুটান নাই। অত্যন্ত চিকণ বুদ্ধির সাথে শুধুমাত্র নিজের আখের গুছায়।
এক সময় গার্ডিয়ান লেভেলের কাছ থেকে স্বার্থ ফুরালে তখন শুধু একক পরিবার নিয়ে ব্যস্ত হয়। সেখানে স্থান পায় শুধু স্ত্রী/স্বামী কিংবা সন্তান। দিন শেষে এরা বাবা মায়ের কাছে ভান্ ধরে, সে খুব স্ট্রাগল করছে… পরিশ্রম করেই যাচ্ছে..। এখনো কোনো আশানুরূপ ফলাফল পাচ্ছে না। আর তাই পরিবারের প্রতি কোনোওও দায়িত্ব পালন করতে পারছে না…।বাবা মায়ের নাকের উপর অনন্তকালের জন্য ঝুলন্ত থাকে স্ট্রাগল নামক মূলা।
এটি একটি রুপক গল্প।
তবে সত্যি কথা বলতে, কোনো সন্তান যদি বাবা মা কিংবা পরিবারের প্রতি কর্তব্যপরায়ন হয় সে কখনো সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে না। সে চিন্তা করে না একদিন আমি সামার্থ্যবান হয়ে দুনিয়া উল্টায় ফেলবো। বরং যে কোনো অবস্থা থেকেই সে নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্যটুকু তার পারিবারিক কর্তব্যের পেছনে ব্যয় করে। তবে এটাও সত্যি যে, স্বার্থপর জোঁক টাইপের সন্তান প্রত্যেক পরিবারে কমপক্ষে একজন করে হলেও পাওয়া যায়। যদি আপনার পরিবারে না থাকে তবে আপনি বিশাল ভাগ্যবান।
লেখিকাঃ ফায়াজুন্নেসা চৌধুরী। প্রভাষক, ডিপার্টমেন্ট অফ সিএসই,ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। নিয়মিত লেখালেখি করেন। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর লেখা বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে। এই লেখাটি তাঁর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে অনুমতি স্বাপেক্ষে সংগৃহিত।
কিউএনবি/বিপুল/১৬.০৯.২০২২/ দুপুর ১২.৫০