আমার শাড়ি
—————-
আলমারিটা খুললে চোখে ভাসে শাড়ির সমাহার ।
স্কুল টিচারদের এতো শাড়ি
না এতো যে সে স্কুল নয় । এটাতো নামকরা স্কুল ।
এর ভালবাসাই আলাদা।
বাংলানববর্ষ সাদা লালপাড় শাড়ি
কপালে টিপ, খোঁপায় বেলফুল ।
হাতে চুড়ি ‘ কানে ঝুমকো ‘ গলায় মালা ।
খাওয়া ষোড়শ ব্যান্জন । নানা পদ । নানা ভর্তা ।
ইংরেজি নববর্ষ । আরে কাতান না পরলে কি চলে ।
আর খাওয়া বুফে না চাইনিজ ।
তারপরে বিজয় দিবস । সবুজ লালপাড় শাড়ি ।
একুশ ফেব্রুয়ারি সাদা কালো পাড় শাড়ি ।
ওমা ছাব্বিশ মার্চ । এখানেও শাড়ি ।
আবার ভ্যালেন্টাইন্স — ডে ।এর রং কি লাল না পিঙ্ক ।
তা নিয়ে তর্ক । অবশেষে পিঙ্ক ।
পহেলা ফাল্গুন — বাসন্তি শাড়ি ।
আর ফুলে ফুলে ছেয়ে গেলো পথ ঘাট মাঠ
হু তারপরে রয়েছে বাৎসরিক খাওয়া ।
শাড়ি পরো । না– না নির্দিষ্ট রং ।
না থাকলে কিনতে চলো ।
আরও রয়েছে কারো জন্মদিন।
তা নিজের হাসব্যান্ড, বাচ্চা , নাতিন যেই হোক ।
এরপরে আসো বাৎসরিক প্রোগ্রাম ।
স্পোর্টস ,পুরস্কার বিতরণী , ফেয়ারওয়েল , পিকনিক
স্টাডিটুর , মিলাদ । শুধুই শাড়ির বাহার ।
রয়েছে রেগ- ডে ।এখানেও শাড়ি ।
শুধু কি শাড়ি । রয়েছে এর সাথে মিলিয়ে ব্যাগ , স্যান্ডেল , সাজ
জয়তু শাড়ি ।
যদি হয় আমার মতো মানুষ ।
তবে তা যে বড় কষ্টের ।
তাও মেলাতে হয় , কিনতে হয় ।
এখন ভাবি কি হবে এতো শাড়ি দিয়ে?
এই যে আমার এক প্রিয় আপাকে দেখতাম ।
কতো সুন্দর সুন্দর শাড়ি পরতেন । লাইভে আসতেন ।
কিন্তু শেষ শাড়ি তার সাদা ধবধবে ছিলো ।
সেই মুখ ঢেকে দেয়া ।
তাহলে এই শাড়িটাই শুধু আমার ।
অন্যগুলো নয় । এগুলো আমার নয় ।
আমার কখনো ছিলোনা ।
আর হবেওনা আমার ।
শুধু সাদাটাই ।।
কবি পরিচিতঃ শিখা নাহার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে। এরপরে ভিকারুননিসা স্কুল ও কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে অদ্যাবধি কর্মরত। নিয়মিত কাব্য চর্চা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কাব্য বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে। এই কবিতাটি তাঁর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে সংগৃহিত।
কিউএনবি/বিপুল/১৭.০৮.২০২২/ বিকাল ৫.৩০