মোঃ সালাহউদ্দিন আহমেদ,নরসিংদী : নরসিংদী পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার মানিক মিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুলের আদালতে হাজিরা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি পৌর শহরের ভেলানগর এলাকায় প্রকাশ্যে খুন হন নরসিংদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কমিশনার মানিক মিয়া। পরদিন তার ভাই আমির ইসলাম আমু বাদী হয়ে নরসিংদীর প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন ও তার ভাই সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল, সমালোচিত যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়ার স্বামী সুমনসহ মোট দশজনকে আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন।
২০১১ সালে মামলার ৩নং আসামি মেয়র লোকমান হোসেনের মৃত্যুর পর বাকি নয়জনকে নিয়েই চলতে থাকে মামলার কার্যক্রম।এরমধ্যে মামলা চলে যায় দ্রুত বিচারিক আদালতে। সেখান থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রায় ২১ বছর পর আজ মামলার ১নং আসামি সদ্য সাবেক পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল নরসিংদী আদালতে হাজিরা দিতে আসে। এ সময় বাদী পক্ষের সঙ্গে আসামি পক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়। হাজিরা শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় কামরুজ্জামান কামরুলকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ শ্লোগান দেয় সাধারণ জনতা ও বাদী পক্ষের লোকজন। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুলের গাড়ি উদ্দেশ্য করে বোতল ছুড়ে মারে জনতা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।নিহত মানিক কমিশনারের ভাই ও মামলার বাদী আমির ইসলাম আমু বলেন, কামরুল শুধু আমার ভাইকেই হত্যা করেনি, সে কুলসুম নামে একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সে ডাকাতি মামালায় আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও প্রদান করেছে।
এত অপরাধ করেও তার বিচার হচ্ছে না। শুধু মাত্র কালো টাকার জোর আর ক্ষমতা খাটিয়ে সে বারবার বেঁচে যাচ্ছে। আমু কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, আমার ভাই আওয়ামী লীগের দুর্দিনের আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগে ছিলেন। পরিতাপের বিষয় হলও চাঞ্চল্যকর এই হত্যার বিচার আমরা ২১ বছরেও পাইনি।মামলার বাদী ও সাক্ষীর ভাষ্য, প্রতিবারই তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং আজও আদালত প্রাঙ্গণে না আসতে তাদেরকে ভয় দেখানো হয়েছে। তারা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
কিউএনবি/অনিমা/১৭ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:০৫