চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা : যশোরের চৌগাছায় সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কাশেমকে মোবাইলে হত্যার হুমকি ! মঙ্গলবার ২ আগষ্ট এ ঘটনায় তিনি চৌগাছা থানায় একটি জিডি করেছেন। জানা যায়, ১ আগষ্ট উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর সরকারি বাওড় মৎস্য প্রকল্পকে ঘিরে চৌগাছা সদর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে (০১৭১১-৫৭৮৮৬৫ নাম্বারে) কল করে এই হত্যার হুমকি দেয়া হয়। পুলিশের তালিকাভ’ক্ত সন্ত্রাসী ইউনুস আলী ও ইমরান হোসেন এ হত্যার হুমকি দেয় বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি। এ ঘটনায় ২ আগষ্ট চেয়ারম্যান কাশেম ইউনুস আলী ও ইমরান হোসেনের নামে চৌগাছা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেছেন। অভিযুক্ত ইউনুস আলী লস্করপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে ও ইমরান হোসেন মনমথপুর গ্রামের পান্নু মিয়ার ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। জিডির বিষয়টি চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ নিশ্চিত করেছেন।
জিডিতে লিখিত ভাবে চেয়ারম্যান কাশেম বলেছেন, ১ আগষ্ট রাতে আমার মুঠোফোনে ইউনুস লস্করপুর নামে সেভ করা ০১৭৯৬-৪৪১৮৮৭ নং নাম্বার থেকে কল করে ইউনুছ আলী নিজে অকথ্য ভাষায় আমাকে গালাগালি করে। সে বলে,“তুই বেড়গোবিন্দপুর বাওড় ও ডায়নার বিল নিয়ে আমার ক্ষতি করছিস। আমরা বিল বাওড় ম্যানেজারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে করে খাচ্ছি তাতে তোর সমস্যা কি” বলেই মুখ গালিগালাজ করে,“ এবার কিন্তু তোকে গুলি করে খুন করে ফেলবো” বলে হুমকি দেয়। এমন সময় ইউনুসের সাথে ইমরান হোসেন ও বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করে বলে,“তোর ভাই মিন্টু চেয়ারম্যানকে যেভাবে গুলি করে মারা হয়েছে তোকেও সেই ভাবে মেরে ফেলা হবে”।
বেড়গোবিন্দপুর সরকারি বাওড় বর্তমান ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন অন্যান্যদের নিকট বাওড়ও বিল অবৈধ ভাবে লিজ দিয়েছেন। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আবুল কাশেম শুরু থেকেই বিরোধীতা করে আসছেন। সোমবার ১ আগষ্ট দুপুরে ও চেয়ারম্যান কাশেম যশোর মৎস্য অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালকের (পিডি যশোর) দপ্তরে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করেছেন। এ কারণেই এদিন রাতেই তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। আবুল কাশেম বলেন, আমি পিডির দপ্তরে অভিযোগ করলাম গোপনে সেটা সন্ত্রাসীরা জানলো কিভাবে ?।
সূত্রে প্রকাশ, সম্প্রতি বেড়গোবিন্দপুর বাওড় ও বিলের বিভিন্ন দূর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিনসহ অবৈধ বিল দখলদারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই সন্ত্রাসীরা রায়হান হোসেন নামে একজন সাংবাদিককে লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় রায়হান চৌগাছা থানায় একটি জিডি করেন। তার পরেও সন্ত্রাসীরা বহাল তবিয়তেই তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য এই বেড়গোবিন্দপুর বাওড়কে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ৩নং সিংহঝুলি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান মিন্টুকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেবারও মিন্টুকে হত্যার আগে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছিল তারা। চেয়ারম্যা মিন্টু ও থানায় জিডি করে ছিলেন। এবারো সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে। আবারো সেই বেড়গোবিন্দপুর বাওড় ও ডায়নার বিল নিয়ে চৌগাছা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা মৎস্যজীবি লীগের আহ্বায়ক আবুল কাশেমকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ জনপথেই বর্তমান সরকারের আমলেই ৩ জন জনপ্রতিনিধি খুন হয়েছে। অনেকে আশঙ্কা করে বলেছেন,“ তবে কি সেই শহীদদের তালিকার পরবর্তী টার্গেট শহীদ চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান মিন্টুর চাচাত ভাই ও সদর ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ? ।
কিউএনবি/আয়শা/০২ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:৫৪