বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন বিমান হামলায় আরও চারজন নিহত

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, ক্যারিবীয় সাগরে একটি নৌকায় চতুর্থবারের মতো বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় নৌকায় থাকা চারজন নিহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি এই হামলা চালানো হয়। তিনি হামলার ভিডিও প্রকাশ করেন। 

ভিডিওতে দেখা যায়, ঢেউ পেরিয়ে দ্রুতগতিতে চলা একটি ছোট নৌকা হঠাৎ বিমান হামলায় আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়।

হেগসেথ দাবি করেন, নিহতরা “নারকো-সন্ত্রাসী” এবং নৌকাটি বিপুল পরিমাণ মাদক বহন করছিল। তার ভাষায়, “এই নৌকাটি আমেরিকায় বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল—যা আমাদের জনগণকে বিষাক্ত করার ষড়যন্ত্র। চারজন পুরুষ নারকো-সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। কোনো মার্কিন বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।”

এটি এ ধরনের চতুর্থ হামলা। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে টানা তিনটি হামলায় ১৭ জন নিহত হয়। প্রথম হামলা হয়েছিল ২ সেপ্টেম্বর, যেখানে ১১ জন মারা যান। এরপর ১৫ ও ১৯ সেপ্টেম্বরের হামলায় আরও ৬ জন নিহত হয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দাবি করেন, “নৌকাটিতে এত পরিমাণ মাদক ছিল যা দিয়ে ২৫ থেকে ৫০ হাজার মানুষকে মেরে ফেলা সম্ভব।”

তবে হামলাগুলো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে সতর্ক করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘ সনদ অনুসারে মাদক পাচারকে ‘সশস্ত্র হামলা’ হিসেবে গণ্য করা যায় না, যা আত্মরক্ষামূলক আক্রমণের বৈধতা দেয়।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন মাদক পাচারকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘আগ্রাসন’ হিসেবে চিত্রিত করছে। হেগসেথ প্রতিশ্রুতি দেন, এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে। তার ভাষায়, “আমাদের গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত করেছে নৌকাটি মাদক পাচারে জড়িত। যতদিন আমেরিকার বিরুদ্ধে এ আক্রমণ চলবে, এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে।”

হোয়াইট হাউস মুখপাত্র ক্যারোলাইন লিভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট নিজেই এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যুক্তি দেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে বিদেশে দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব হামলা বৈধ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কংগ্রেসে একটি গোপন নথি জমা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন, যেখানে বলা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র এখন লাতিন আমেরিকার মাদক চক্রগুলোর সঙ্গে একটি “অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘাতে” জড়িয়ে পড়েছে। তবে এ ঘোষণাকে সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।

ভেনেজুয়েলার সরকার ইতোমধ্যে উপকূলে সামরিক বাহিনী মোতায়েন বাড়িয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র পুয়ের্তো রিকোসহ ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে। মানবাধিকার সংগঠন ও সাবেক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা এসব হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ভিজিটিং স্কলার টেস ব্রিজম্যান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আরও চারজন মানুষ নিহত হলো। ট্রাম্প এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট সংজ্ঞা দেননি, কে ‘সন্ত্রাসী’ আর কাকে বিনা বিচারে হত্যা করা যাবে।”

তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “যদি সমুদ্রে এভাবে হত্যা বৈধ করা হয়, তবে এটি যেকোনো জায়গায় ঘটতে পারে।”  সূত্র: আলজাজিরা

কিউএনবি/অনিমা/০৪ অক্টোবর ২০২৫,/সকাল ১০:৫৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit