আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার কারণে ‘জরিমানা’ হিসেবে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে পাল্টা শুল্কসহ ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন দাবি করছেন, এই কূটনৈতিক পরিকল্পনায় ধাক্কা খাবে আমেরিকা।
বোল্টন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন তৈরি করে ট্রাম্প এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যাতে ভারত আবার রাশিয়া ও চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই নীতি শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়, ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ, ভারত বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শক্তি এবং আমেরিকার ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ কৌশলে মূল স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি ভারতকে নিয়ে এই দূরত্ব বাড়তে থাকে, তবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, এমনকি কোয়াডের কার্যক্রমও প্রভাবিত হতে পারে। ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হচ্ছে, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনার গতি কমেছে এবং কিছু প্রতিরক্ষা চুক্তি বাস্তবায়নেও ধীরগতি এসেছে। যদিও ভারত সরকার প্রকাশ্যে এসব আশঙ্কা অস্বীকার করছে।
এদিকে, ট্রাম্প- পুতিন বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পুতিনের আলাদা আলোচনাও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি কাড়ছে। চীনও এই সময়টাকে কৌশলগতভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে—আগামী দিনে মোদি শেষ পর্যন্ত কার দিকে হাত বাড়াবেন? আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখবেন, নাকি রাশিয়া-চীন জোটের দিকে আংশিক ঝুঁকবেন?
বোলটনের এই মন্তব্য শুধু আমেরিকার রাজনীতিতে নয়, বিশ্ব কূটনীতিতেও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, ভারত–আমেরিকা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ শুধু দুই দেশের জন্য নয়, গোটা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষমতার ভারসাম্যের ওপরও প্রভাব ফেলবে।
কিউএনবি/আয়শা/১০ আগস্ট ২০২৫/বিকাল ৪:৩০