মনিরুল ইসলাম মনি : শার্শা(যশোর)সংবাদদাতা : যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় ইছামতি নদীর উজানের পানিতে কয়েকম একর ফসলের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। যে কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শতশত প্রান্তীকক কৃষক ও মৎস চাষি। সেই সাথে সীমান্ত এলাকার প্রায় অর্ধশত গ্রামের কাঁচা মাটির রাস্তা ঘাট চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ জন্য বিপাকে পড়েছে স্কুল, কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ।
সম্প্রতি বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টি ও ভারতের ইছামতি নদী থেকে আসা অতিরিক্ত পানিতে চরম ভোগান্তীর সৃষ্টি হয়েছে গ্রামীন জনপদে। বিশেষ করে শার্শা উপজেলার সীমান্ত ঘেষা গ্রাম দাউদখালি, রুদ্ররপুর, গোগা, কায়বা, ভুলোট, পুটখালী, দৌলতপুর, বড়আঁচড়া, সাদীপুর, রঘুনাথপুর, সরবানহুদা,ঘিবা, ধান্যখোলা, বাহাদুরপুর, শিকারপুর, শালকোনা, শিববাসসহ অনেক গ্রাম এলাকায় ফসলি জমি ভেষে ছয়লাব হয়ে গেছে। সেই সাথে হাটু কাদার সৃষ্টি হয়েছে কাঁচা রাস্তা ঘাট। ক্ষতি হয়েছে এসব এলাকার পুকুর, ঘের, বৈড়ী, বাওড় ও মাছ চাষের জলাশয়।
সূত্রে ও সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টি ও ভারতের ইছামতি নদীর পানিতে শার্শা উপজেলার সীমান্ত গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা গেছে এবছর ভারত সীমান্তের ইছামতি নদীর পানি ঢুকে প্লাবিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে কায়বার সাহেবের খাল ও সরবান হুদার কোদলার খাল দিয়ে বেশি বেশি ভারতীয় পানি প্রবেশ করছে ।
এ কারনে সীমান্তে বসবাসকারী অনেকের বাড়ির উঠানে হাটু পানি জমে গেছে। সেই সাথে পাকা সড়কের উপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় গ্রামীন অবকাঠামো রাস্তা-ঘাটের চরম ক্ষতি সাধন হয়েছে। অনেক মৎস চাষীর লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দৌলতপুর গ্রামের কুষক তাজউদ্দিন মোল্লা জানায়, একটানা বৃষ্টি ও ভারতের পানি দেশে প্রবেশ করে আমাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। এই মাঠে আমরা চাষাবাদ করে থাকি।
আমন ধান রোপন করেছিলাম। মাঠে শত শত কৃষকের আমন ধান ছিল কয়েকশ একর জমিতে । সব পানিতে তলিয়ে ন্ষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখন পথে বসা ছাড়া অন্য কোন উপায় নাই। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ লিয়াকোত হোসেন জানান,পুটখালী গ্রামে অনেক মাছের ঘের পানিতে ভেসে মাছ বেরিয়ে গেছে। তিনি বলেন কিছু করার নাই। কারন প্রতি বছর ভারতীয় পানিতে আমরা ক্ষতি গ্রস্থ হই।
একাধারে বৃষ্টির পানি অন্যদিকে ভারতের পানি আমাদের জমিতে আসা সব মিলিয়ে মাছের ঘের, ফসলের মাঠ যেমন ভেসেছে তেমনি জমির বীজতলাও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শার্শার কায়বা এলাকায়ও ইছামতি নদীর পানিতে ফসলি জমি সহ ঠেঙ্গামারী ও আওয়ালী বিল এলাকার ৫শ একরের বেশি ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় একধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন গত বছর শার্শা উপজেলা প্রশাসন কায়বা ইউনিয়নের ঠেঙ্গামারী ও আওয়ালী বিলের পানি নিষ্কাষনের জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দিলেও ঐ ইউনিয়নের দুই ব্যাক্তি সেই টাকার দৃশ্যমান কোন কাজ না করে ভুয়া ভাউসার জমা দিয়ে সেই টাকা হজম করে দিয়েছে বলে জানান। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী প্রান্তীক চাষীরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডাঃ কাজী নাজিব হাসান বলেনন চলতি বছর অতিবর্ষনে ও শাশা সীমান্ত এলাকার ভারতয়ি ইছামতি নদীর পানি এলাকায় প্রবেশ করে অনেক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন সীমান্ত এলাকার ক্ষতির বিষয়টি শার্শা উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদপ্তর পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
কিউএনবি/আয়শা/১০ আগস্ট ২০২৫/রাত ১১:২১