আলমগীর মানিক,রাঙামাটি : কোনো ধরনের কোন ধরনের সরকারি নিষেধ না থাকলেও আমলাতান্ত্রিক প্যাঁচে ৬ বছর ধরে পার্বত্যাঞ্চলের বাজার ফান্ড এলাকায় বন্ধ থাকা ঋণ কার্যক্রম চালু করাসহ বাজার ফান্ডের বন্দোবস্তি প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে গঠিত “বাজার ফান্ড ভূমি অধিকার সংরক্ষণ কমিটি”র নেতৃবৃন্দ রোববার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে অবিলম্বে রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
রাঙামাটি জাতীয়তাবাদী আইনজীবি সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পনির ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাস শাকিলের নেতৃত্বে “বাজার ফান্ড ভূমি অধিকার সংরক্ষণ কমিটি”র নেতৃবৃন্দ রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো: হাবিব উল্লাহ মারূফ এর সাথে বৈঠক করে ৬ বছর ধরে পার্বত্যাঞ্চলের বাজার ফান্ড এলাকায় বন্ধ থাকা ঋণ কার্যক্রম চালু করাসহ বাজার ফান্ডের বন্দোবস্তি প্রক্রিয়া অবিলম্বে চালুর দাবি জানান।
এসময় জেলা প্রশাসক বাজার ফান্ড ভূমি অধিকার সংরক্ষণ কমিটির নেতৃবৃন্দকে জানান, আমি আপনাদের দাবির বিষয়টি আমার বিভাগীয় কমিশনারকে অবহিত করেছি এবং এই বিষয়ে আজ-কালের মধ্যেই রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
এসময় “বাজার ফান্ড ভূমি অধিকার সংরক্ষণ কমিটির নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসককে জানান, অবিলম্বে তিন পার্বত্য জেলায় পতিত সরকারের প্রতিনিধি কর্র্তৃক কোনো ধরনের লিখিত নির্দেশনা ছাড়াই শুধুমাত্র মৌখিক নিষেধাজ্ঞায় প্রায় ৬ বছর ধরে বন্ধ থাকায় ঋণ কার্যক্রম ও বন্দোবস্তি প্রক্রিয়া চালু করা না হলে পাহাড়ের সকল বাসিন্দাদের নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামবে “বাজার ফান্ড ভূমি অধিকার সংরক্ষণ কমিটি”।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর খাগড়াছড়ির পতিত সরকারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস কর্তৃক খাগড়াছড়ি বাজারফান্ডের খাস জমি নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লেখা এক চিঠির প্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণ ‘বাজার ফান্ড’র হাত ধরে বন্ধকী ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করেছে তিন জেলার প্রশাসন।
কোন ধরনের সরকারি নিষেধ না থাকলেও আমলাতান্ত্রিক প্যাঁচে ৬ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এ ঋণ কার্যক্রম।
শত বছর ধরে চালু থাকা এ ঋণ না পেয়ে ব্যবসা বাণিজ্য লাটে উঠেছে প্রায় ৪০ হাজার ব্যবসায়ীর। ইতোমধ্যেই অর্থাভাবে ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করে রাঙামাটি থেকে চলে গেলে কয়েকশো ব্যবসায়ি-ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। জানাগেছে, ১৯৩৭ সালের বাজার ফান্ড ম্যানুয়েল অনুযায়ী পরিচালিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থনীতির ভীত মজবুত করতে নতুন বাজার ও ব্যবসায়ী সৃষ্টি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে এ ফান্ডের জন্য। এ ফান্ডের হাত ধরে ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করেন।
১৯৮৯ সালে পার্বত্য তিন জেলায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা চালুর আগ পর্যন্ত এ বাজার ফান্ডের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ। এরপর আইন অনুযায়ী বাজার ফান্ডটি (প্রতিষ্ঠান) পার্বত্য জেলা পরিষদের উপর ন্যস্ত হওয়ায় পরিষদের চেয়ারম্যান এ ফান্ডের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর থেকেই তিন জেলার বাজার ব্যবস্থাপনা জেলা পরিষদের তদারকিতেই চলে আসছিল। আন্দোলনকারিরা জানান, শীঘ্রই তিন পার্বত্য জেলায় তীব্র আন্দোলনে নামার লক্ষ্যে তিন জেলার সংশ্লিষ্ট্য সকলের সাথে তারা যোগাযোগ করে আন্দোলন কর্মসূচীর প্রস্তুতি নিবেন।
কিউএনবি/আয়শা/১০ আগস্ট ২০২৫/রাত ১১:৪৮