সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

নাকের অ্যালার্জির ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো কী?

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩৭ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : অ্যালার্জি নামক ব্যাধিটির সঙ্গে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। এটি মানুষের দেহের একটি যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। খুব অল্পসংখ্যক লোকই পাওয়া যাবে এ রোগের আক্রান্ত নন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কম-বেশি সবাই কিছুটা হলেও ভুক্তভোগী। আর নাকের অ্যালার্জি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে একটি অতি পরিচিত নাম। 

এটি একটি জটিল রোগ, যা কি না মানুষের জীবনকে কষ্টদায়ক করে তোলে। যে কোনো বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। অ্যালার্জির কারণে হাঁচির উপদ্রব হয় এবং এক সময় তা শ্বাসকষ্টেও রূপ নিতে পারে। 

নাকের অ্যালার্জিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যালার্জিক রাইনাটিস বলা হয়। যার অর্থ হচ্ছে অ্যালার্জিজনিত নাকে প্রদাহ। সাধারণত অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলো মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালিতে প্রবেশ করলে অ্যালার্জির উদ্ভব হয়। অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থকে অ্যালার্জন বলা হয়।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের কারণ : 

নানা ধরেনের অ্যালার্জন যা সচরাচর বা ঋতু পরিবর্তনের কারণে বাইরে দেখা যায়। ঘরে বা অফিসে জমে থাকা পুরোনো ধুলাবালি, পরাগ রেণু, পোষা প্রাণীর পশম বা চুল। নানা ধরনের ছত্রাক, ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়া ইত্যাদির কারণেও নাকে অ্যালার্জি হয়। 

বংশগত কারণে অনেক সময় এ রোগ হয়ে থাকে। কারও বাবা-মা বা ভাই-বোনের এ রোগ থাকলে তার দেহেও এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে। আবহাওয়া বা বাতাসের আর্দ্রতার তারতম্যের কারণেও এ রোগ হতে পারে। 

বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি জাতীয় খাদ্য যেমন : চিংড়ি, ইলিশ মাছ, ডিম, পাকা কলা, গরুর মাংস, বেগুন, দুধ, তামাক ইত্যাদি গ্রহণ করলেও অ্যালার্জি হয়। মাইট হচ্ছে অ্যালার্জির সবচেয়ে বড় শত্রু। এটি অতি ক্ষুদ্রাকৃতির, যা কি না ঘরের জমে থাকা ধুলা, বিছানা, বালিশে থাকে। নিঃশ্বাসের সঙ্গে যদি এটি শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে তবে অ্যালার্জি রোগীর জন্য মারাত্মক আকার ধারণ করে।

নাকের অ্যালার্জির ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো হলো-

নাক বন্ধ হওয়া। সাধারণত এক নাক, কখনো কখনো দুই নাকই বন্ধ হয়ে যায়। নাক দিয়ে পানি বা পানিজাতীয় পদার্থ নিঃসৃত হওয়া। মাত্রাতিরিক্ত হাঁচি হওয়া। নাকে চুলকানো বা নাকের ভিতর কিছু আছে এমন মনে হওয়া। শ্বাসকষ্ট হওয়া। নাকের ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া। মাথাব্যথা ও ঘোরা অনুভব হওয়া। কাশির উপক্রম হওয়া। চোখ চুলকানো বা শরীরে অন্য কোনো স্থানে চুলকানি হওয়া। শরীরে জ্বর জ্বর বা ম্যাজম্যাজ ভাব হওয়া।

চিকিৎসা : 

এসব রোগীর জন্য প্রথমে করণীয় হচ্ছে যেসব উপাদান অ্যালার্জির প্রকোপ বৃদ্ধি করে তা থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা। চিকিৎসকরা এ ধরনের রোগীদের অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সোডিয়াম ক্রোমোগ্লাইকেট ও স্টেরয়েড ন্যাজাল স্প্রে দিয়ে থাকেন। নাকের বন্ধভাব অল্প সময়ের জন্য নিরাময়ের পদ্ধতি হিসেবে নাকের ড্রপ দেওয়া হয়ে থাকে রোগীদের। তবে হার্টের রোগীদের জন্য জাইলো-মেটাজোলিন জাতীয় নাকের ড্রপ ব্যবহার একেবারেই উচিত নয়। অ্যান্টিহিস্টামিন শিশুদের এবং গর্ভবতীদের জন্য সেবন ঠিক নয়। 

এছাড়া বর্তমানে অ্যালার্জির অন্যতম চিকিৎসা ভ্যাকসিন। কেউ কেউ ভ্যাকসিনকেও প্রাধান্য দিতে থাকেন। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই উচিত হবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ বিষয়ে চিকিৎসা নেওয়া। তাই অ্যালার্জি নিয়ে কোনো অবস্থায়ই অবহেলা করা ঠিক নয়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে আরও বেশি যত্নবান ও সচেতন হওয়া জরুরি। এ ছাড়া প্রাথমিক অবস্থা থেকে অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। কথায় আছে রোগ-বালাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

লেখক: অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

কিউএনবি/অনিমা/০৯ আগস্ট ২০২৫/বিকাল ৩:২৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit