ডেস্ক নিউজ : ভারতের তুলনায় কম শুল্ক আরো হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ওয়াশিংটনের সর্বশেষ শুল্ক কাঠামোতে ভারত ও চীনকে বড় আকারে শুল্কের আওতায় আনার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সামনে রপ্তানির নতুন জানালা খুলেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, হস্তশিল্প ও কৃষিপণ্যের জন্য মার্কিন বাজার হতে পারে আরও বিস্তৃত ও লাভজনক।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণায় জানানো হয়, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও ব্রিকস জোটে সক্রিয় ভূমিকার জন্যও ভারতকে ‘অপ্রীতিকর ফল’ ভোগ করতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এ ঘটনাকে ভারতের জন্য কূটনৈতিক ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মোদি সরকার দেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি ধ্বংস করেছে।
দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যদি কৌশলগত বাণিজ্য কূটনীতি ও মার্কিন বাজারের চাহিদা বুঝে এগোতে পারে, তবে ভারতের তুলনায় বাড়তি সুবিধা পেতে পারে রপ্তানিকারকরা। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও শুল্কনীতির প্রতিটি পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে আগাতে হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এড়াতে সফল হয়েছি। এটা আমাদের পোশাক খাত ও এ খাতের ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জন্য সুসংবাদ।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেলও একই কথা বলেন। তার ভাষায়, এ সিদ্ধান্ত অনেকাংশেই বাংলাদেশের জন্য খুশির খবর। যুক্তরাষ্ট্রে চীনের বাজার হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় প্রথমে ভারতকে সেই শূন্যস্থান পূরণে এগিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আমাদের চেয়ে ভারতের ওপর বেশি শুল্ক নির্ধারণ হয়েছে—২৫ শতাংশ। অর্থাৎ, মার্কিন ক্রেতারা এখন বাংলাদেশকেই চীনের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের ঘোষণা অনুযায়ী, অন্যান্য দেশের মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
কিউএনবি/অনিমা/১ আগস্ট ২০২৫/রাত ৯:৪১