রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০১:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা প্রচারে পবা উপজেলায় উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ নতুন মৌসুমে নিজের লক্ষ্যের কথা জানালেন ওলমো হিজবুল্লাহ অস্ত্র সমর্পণ করবে না, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধেই থাকবে মোহরে ফাতেমি কী, বর্তমান কত টাকা? এশিয়া কাপে বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ আবুধাবিতে জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনে আগ্রহ নেই মানুষের, জানালো জাতিসংঘ ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন ৮ ফল, পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের আজওয়া খেজুরের উপকারিতা নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে দেশ নিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা ছিল তার অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়নি: সারজিস ঐকমত্য হলে ৮ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে: উপদেষ্টা আসিফ

ঋণ পরিশোধে কঠিন চ্যালেঞ্জ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ৪২ Time View

ডেস্ক নিউজ : অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সরকার। কারণ মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যয়কে উসকে দিয়েছে। এতে সামনের দিনগুলোতে মূলধনসহ ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হবে।

অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি-বিবৃতিসংক্রান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সেখানে আরও বলা হয়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও ঋণ ব্যবস্থাপনায় সংস্কার আনা জরুরি। অন্যথায় ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তেই থাকবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস’র সাবেক মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরি যুগান্তরকে জানান, রাজস্ব আদায় সন্তোষজনক নয়, যে কারণে সরকারের ঋণনির্ভরতা বাড়ছে। অত্যাবশ্যকীয় ও উন্নয়নকাজ করতে গিয়ে ঋণ নিতে হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, তা পরিশোধ করতে হবে। রাজস্ব আদায় না বাড়িয়ে ঋণনির্ভরতা বাড়তে থাকলে সেক্ষেত্রে এমন সময় আসবে যখন পরিশোধের চাপ বড় আকারে গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি, অপচয় ও অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় না করে ঋণের অর্থ উৎপাদনশীল খাতে খরচের বিষয়টি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, সরকারের ঋণের দায় (গত মার্চ পর্যন্ত) ১৯ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ছুঁইয়েছে। এর মধ্যে দেশি ঋণ (অভ্যন্তরীণ) ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা, যার মধ্যে ব্যাংকের ঋণ ছয় লাখ ৮২ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ আট লাখ ২৬ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছর (২০২৪-২৫) শেষে অর্থাৎ জুনে এই ঋণ সাড়ে ১৯ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করতে পারে-এমন ধারণা অর্থ বিভাগের। সরকারের এ ঋণনির্ভরতা অব্যাহত থাকলে নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) মোট ঋণের স্থিতি প্রায় ২২ লাখ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে। সরকারের দেশি ও বিদেশি ঋণ নিয়ে অর্থ বিভাগের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে। ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে ব্যয় বেড়েছে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের প্রভাবে। কারণ একই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ করতে এখন আরও বেশি টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টাকার মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা এ সমস্যাকে আরও তীব্র করে তুলছে।

ইআরডির সূত্র মতে, বর্তমান মোট বৈদেশিক ঋণের মধ্যে প্রায় ৫৩ শতাংশই নেওয়া হয়েছে মার্কিন ডলারে। অর্থাৎ ঋণের বড় একটি অংশ মার্কিন ডলারে সঞ্চিত আছে। এছাড়া ঋণের ২২ শতাংশ হচ্ছে জাপানিজ মুদ্রা ইয়েনে নেওয়া, চীনের ইউয়ানে আছে ৭ শতাংশ এবং বাকি চার শতাংশ অন্যান্য মুদ্রায়। ইতোমধ্যে পুরোনো ঋণের মেয়াদপূর্তি, টাকার অবমূল্যায়ন ও কিছু ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে আগামী বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধে ব্যয় বাড়বে বলে অর্থ বিভাগের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেখানে আরও বলা হয়, টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এসব ঋণ পরিশোধে সবচেয়ে বেশি ব্যয় গুনতে হচ্ছে। যা রীতিমতো চাপের মুখে ফেলছে অর্থনীতিকে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হিসাবে চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের আসল পরিশোধে ব্যয় হয় ২৬১ কোটি মার্কিন ডলার, যা বেড়ে আগামী ২০২৭-২৮ অর্থবছরে দাঁড়াবে ৩৩৪ কোটি ডলারে। এসব ঋণের বিপরীতে আসছে অর্থবছরে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শুধু সুদ পরিশোধের জন্য, যার মধ্যে এক লাখ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ এবং ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবলের (আইএমএফ) মানদণ্ডে একটি দেশ তার মোট জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। সে পর্যন্ত ঋণ নেওয়াকে ঝুঁকিমুক্ত হিসাবে গণ্য হয়। সেক্ষেত্রে সরকারের ঋণের অনুপাত জিডিপির ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৩৭ দশমিক ৭২ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এক্ষেত্রে সতর্ক করে অর্থ বিভাগ বলেছে, যদিও বাংলাদেশে ঋণ জিডিপির অনুপাত বর্তমান আইএমএফ’র নির্ধারিত নিরাপদসীমার মধ্যে রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক শৃঙ্খলা এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এক্ষেত্রে নিবিড় মনিটরিং ও সময়োপযোগী সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। সেখানে আরও বলা হয়, দেশের ঋণ পরিস্থিতির মধ্যমেয়াদি চিত্র অনেকটা নির্ভর করবে সরকারের নেওয়া কার্যকর কৌশলগুলোর বাস্তবায়নের ওপর। সেক্ষেত্রে রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স বাড়ানো এবং ডলারের মূল্য স্থিতিশীল আনতে না পারলে ঝুঁকির মধ্যে পড়ার শঙ্কা থাকবে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এমনিতে কাঙ্ক্ষিতমাত্রায় বাড়ছে না রাজস্ব আহরণ। মূলত রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ, অর্থনৈতিক সংকট, আস্থার অভাব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিসহ নানা কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও স্থবিরতার মুখে আছে। এর প্রভাবে সন্তোষজনক রাজস্ব আহরণ হচ্ছে না। আর আয় কম হওয়ায় সরকার নানা কার্যক্রম পরিচালন করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত বেশি হচ্ছে। সেই ঋণ ও সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে পুনরায় ঋণ করতে হচ্ছে সরকারকে।

 

কিউএনবি/আয়শা/১৭ জুন ২০২৫, /বিকাল ৪:৪৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit