আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় মার্কিন সিনেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আইসক্রিম কোম্পানি বেন অ্যান্ড জেরির সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রবীণ প্রগতিশীল অ্যাকটিভিস্ট বেন কোহেনকে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ সময় তিনি স্লোগান দিতে থাকেন, কংগ্রেস গাজায় শিশু হত্যা করতে বোমা কেনে। অথচ দেশের দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সুবিধা কমিয়ে দেয়! এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে। হাতে হ্যান্ডকাফ পরার আগ মুহূর্তে তিনি আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ক্ষুধার্ত শিশুদের খাবার পৌঁছাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ দিন।
পরবর্তীতে মুক্তি পাওয়ার পর বেন কোহেন বলেন, ঘটনাটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে আমাদের কিছু একটা করতেই হতো। যুক্তরাষ্ট্র দেশের সামাজিক খাত সংকুচিত করে ইসরাইলের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র অনুমোদন করেছে।
বিষয়টিকে ‘কেলেঙ্কারি’ বলে উল্লেখ করেছেন কোহেন। তিনি আরও বলেন, আমেরিকার নাম ব্যবহার করে, আমাদের অর্থ দিয়ে যা করা হচ্ছে, তা ঘৃণা করে এ দেশের অধিকাংশ মানুষ।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষত ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরাইলের প্রতি জনমত ক্রমাগত নেতিবাচক হয়ে উঠছে। তবে ব্যয় পরিকল্পনার বাইরেও কোহেন পুরো বিষয়টিকে নৈতিক ও ‘আধ্যাত্মিক’ সংকট হিসেবে দেখেন।
তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সমর্থন করা ও তাতে জড়িয়ে পড়া আমাদের মানবিক অস্তিত্ব এবং দেশের নীতিগত অবস্থানের মূলকে নাড়া দেয়। যুক্তরাষ্ট্র তার অর্ধেকেরও বেশি স্বাধীন বাজেট যুদ্ধ খাতে ব্যয় করে। যদি এর অর্ধেকটাও বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যবহার করা হতো, তাহলে বিশ্বে এত সংঘাত থাকত না।
একটি দৃষ্টান্ত টেনে তিনি বলেন, যদি কোনো তিন বছরের শিশু গিয়ে মানুষকে মারতে শুরু করে, আপনি তাকে বলেন, তোমার কথা দিয়ে বোঝাও। দেশগুলোর মধ্যেও সমস্যা থাকতে পারে, কিন্তু সেটা যুদ্ধ ছাড়া সমাধান করা সম্ভব।
কোহেন বলেন, আমি জানি আমার কণ্ঠ অনেকের চেয়ে জোরাল। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে, আমি লাখো মানুষের হয়ে কথা বলছি।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা
কিউএনবি/আয়শা/১৬ মে ২০২৫, /দুপুর ২:২৮