রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০৪:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঈদের সিনেমার প্রচারণায় এগিয়ে নায়িকারা বিদায়বেলায় ভক্ত-সতীর্থদের ভালোবাসায় সিক্ত অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস কারিশমার প্রাক্তন স্বামীর মৃত্যুর ঠিক আগের ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য! ইরানে হামলা চালালে মার্কিন জাহাজে আক্রমণের হুমকি হুথিদের ইরানকে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তা করতে রাশিয়া প্রস্তুত: পুতিন ইরানে আগ্রাসন: ঢাকার তীব্র নিন্দা, ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার তাগিদ অকারণেই ঘামছে হাত-পা, দেখুন সমাধান প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান: রয়টার্স ম্যাথুসের পর চান্দিমালও তাইজুল ম্যাজিকে হাওয়া গত ২৪ ঘন্টায় দেশে রেকর্ড ৩৫২ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু ১

শিল্পোন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধুনিকায়ন এখন সময়ের দাবি : আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া।

বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি ।
  • Update Time : বুধবার, ৭ মে, ২০২৫
  • ৪১ Time View
বাদল আহাম্মদ খান নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যা রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৮০ কিমি দূরত্বে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংযোগস্থলে অবস্থিত। জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষ হলেও এখনও জেলার অনেক এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছায়নি। অথচ এই জেলাতেই অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র—আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (ATPCL), যা প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে ৭০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
আধুনিকায়নে প্রতিবন্ধকতা :
এই কেন্দ্রটির প্রকৃত উৎপাদন সক্ষমতা ১৭৭৭ মেগাওয়াট হলেও, পুরাতন যন্ত্রপাতি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও গ্যাস সরবরাহের ঘাটতির কারণে তা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আধুনিক গ্যাস স্মার্ট টারবাইন প্রযুক্তি সংযোজনই হতে পারে আশুগঞ্জের নতুন প্রাণ।
২০ বছরের সম্ভাবনা ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট :
দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো আধুনিক বিদ্যুৎ প্রযুক্তির মাধ্যমে শিল্প-অর্থনীতি গড়ে তুলেছে। আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র যদি Siemens বা General Electric-এর প্রযুক্তিতে আধুনিকায়ন করা যায়, তবে আগামী দুই দশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে উঠতে পারে একটি পূর্ণাঙ্গ “ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন (IEZ)”।
গ্যাসভিত্তিক শিল্পনগরীর বাস্তবতা :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিতাস, শালদা, তারাপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে। কসবা উপজেলার সম্ভাবনাময় কাশিরামপুর ক্ষেত্রও উন্নয়নের অপেক্ষায়। এই গ্যাস স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে পারে বাংলাদেশের প্রথম গ্যাস-ভিত্তিক শিল্পশহর।
করণীয় : বিদ্যুৎ কেন্দ্র আধুনিকায়নে ৪টি মূল পদক্ষেপ :
১. পুরাতন যন্ত্র প্রতিস্থাপন: ১৯৮০ দশকের টারবাইন ও বয়লার অপসারণ করে স্মার্ট গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তি সংযোজন।
২. গ্যাস সরবরাহ চুক্তি: স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
৩. বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন : গ্রাম পর্যায়ে স্মার্ট গ্রিড, সাবস্টেশন ও মিটারিং ব্যবস্থা স্থাপন।
৪. বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ: জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে PPP চুক্তির মাধ্যমে যৌথ উন্নয়ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া বলেন :
> “আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে যদি আন্তর্জাতিক মানে আধুনিকায়ন করা যায়, তবে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয়, সমগ্র পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই—স্থানীয় গ্যাস ব্যবহার নিশ্চিত করে আধুনিকায়ন ত্বরান্বিত করা হোক এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বচ্ছ পরিবেশ গড়ে তোলা হোক।”
তিনি আরও জানান, ভূঁইয়া গ্রুপ ইউকে লিমিটেড ইতোমধ্যে একাধিক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে এবং  বিদ্যুৎ খাতে দ্রুত অগ্রগতি হলে তারা এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী।
সম্ভাব্য সুফলসমূহ :
শিল্পায়ন : ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে রোডে সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর এবং সিলেট-চট্টগ্রাম হাইওয়ে রোডে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কসবা এবং স্থলবন্দর  এলাকা আখাউড়া জুড়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ) গঠন সম্ভব হবে। অর্থনৈতিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। 
কর্মসংস্থান : প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২-৩ লক্ষ মানুষের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে যুব সমাজের হতাশা দূর হবে। ব্যাপক কর্মসংস্থানের কারণে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুব সমাজ রক্ষা পাবে। রপ্তানি : বিদ্যুৎ-নির্ভর শিল্প যেমন টেক্সটাইল, সিরামিক, প্লাস্টিক ও ফুড প্রসেসিং-এর রপ্তানি বৃদ্ধি আবে। তাছাড়া দেশের রপ্তানি খাতে আরও নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। রপ্তানি বৃদ্ধির করে  বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। 

GDP প্রবৃদ্ধি : জাতীয় অর্থনীতিতে ০.৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নয়—এটি হতে পারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অর্থনৈতিক রূপান্তরের মূল চালিকা শক্তি। এর আধুনিকায়ন এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং একটি জাতীয় প্রয়োজন। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পরিবহন অবকাঠামোর সমন্বয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের “ইনার ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব”। 

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৭ মে ২০২৫, /বিকাল ৫:৪৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit