স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটিতে ইঞ্জিনের সামান্য ত্রুটি দেখা দিলেও মাত্র পাঁচ হাজার টাকার অভাবে মেরামত করা সম্ভব না হওয়ায় সপ্তাহব্যাপী রোগীবহন করা বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দাবি ফান্ডে টাকা না থাকায় আপাতত মেরামত করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় জরুরী রোগীদের পোহাতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। অন্যদিকে এ সুযোগে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসে রোগেীদের গুনতে হচ্ছে তিনগুনের বেশি টাকা। এ নিয়ে রোগীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রীয়া। এমনটি জানা গেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা ভুক্তভোগী বিভিন্ন রোগীদের সাথে কথা বলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মন্ত্রনালয় থেকে নতুন এ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ দেওয়া হয় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।সেই থেকে রাতদিন স্বল্পমূল্যে(কি:মি: প্রতি ১০ টাকা) জরুরী রোগী বহন করে আসছিল। চালক একলাস আলী জানান, গত ১৪ এপ্রিল রোগী নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করে ফেরার পথে এসিপাম্পে ত্রুটি দেখা যায়। এক পর্যায়ে ইঞ্জিন গরম হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মটরগ্যারেজে মেরামতের জন্য নিয়ে গেলে জানানো হয় পার্টস এবং মিস্ত্রীখরচসহ মোট পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। কিন্তু ফান্ডে কোন টাকা না থাকায় মেরামত করা সম্ভব হয়নি।
এ্যাম্বুলেন্স চালক একলাস আলী জানান, এ্যাম্বুলেন্স মেরামতের জন্য আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে ১৪ এপ্রিল থেকে রোগীবহন বন্ধ রয়েছে। এ্যাম্বুলেন্সটি বর্তমান হাসপাতালের গ্যারেজে তালা মেরে রাখা হয়েছে। এদিকে একমাত্র সরকারি এ্যাম্বুলেন্সটি সেবাদান বন্ধ রাখায় রোগী ও স্বজনদের পকেট কাটছে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স চালকরা। খেদাপাড়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হাফিজুর রহমানকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রয়োজন।
হাফিজুর রহমান জানান, সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে মনিরামপুর থেকে যশোরে যেতে ভাড়া নেওয়া হয় পাঁচ থেকে ছয়’শ টাকা। কিন্তু এ সুযোগে বেসরকারি এ্যাস্বুলেন্সে ভাড়া দিতে হয়েছে দুই হাজার টাকা। আবার আনিচুর রহমান নামে অন্য এক রোগী জানান, শনিবার সন্ধ্যায় মনিরামপুর থেকে যশোর যেতে তাকে দিতে হয়েছে বাইশ’শ টাকা। ফলে রোগী ও তার স্বজনদের মাত্রাতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে গতকাল রোববার সকাল ১০ টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফায়াজ আহমেদ ফয়সালের সাথে কথা হয়। তিনি জানান এ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধের ব্যাপারে তিনি অবহিত নন।
পরে চালক একলাসকে ডাকা হয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে। এ সময় একলাস আলী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলেন, স্যার ১৪ এপ্রিল এ্যাম্বুলেন্সটির বিষয় জানিয়ে মেরামতের জন্য আপনার বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়। এ কথা শেষ হতে না হতেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি এবার মনে পড়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, আপাতত ফান্ডে(তহবিল) টাকা না থাকায় এ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ফান্ডের জন্য আজই উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জাননো হবে। যশোরের সিভিল সার্জন ডা, মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ অবহিত করেননি। তবে এ ব্যাপারে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
কিউএনবি/আয়শা/২০ এপ্রিল ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:০৮