শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মাটিরাঙ্গা জোনের উদ্যােগে  বিশেষ মানবিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান। মাটিরাঙ্গায় পলাশপুর জোনের বিশেষ অভিযানে  ভারতীয় পিস্তল ও তাজা গুলি উদ্ধার। শিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সেক্রেটারি জেনারেল সিবগাতুল্লাহ কুষ্টিয়া সীমান্তে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে পুশইনে বিজিবি’র বাঁধা : পতাকা বৈঠকে ফেরত ভারতের রাজনীতিতে বিজেপির কৌশল ও কংগ্রেসের বিপর্যয়: বাংলাদেশের বিএনপির জন্য শিক্ষণীয় ভারত থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে ম্যান সিটির মালিকপক্ষ মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষ: ঝালকাঠিতে অ্যাডভেঞ্চার-৯’ কর্মী আটক ৪ শহীদ ওসমান হাদীর স্মরণে রাঙ্গামাটিতে নওগাঁর পত্নীতলায় তৃণমূলে গণমানুষের নেতৃত্বে গড়ে উঠছে পুষ্টি সমৃদ্ধ গ্রাম বরিশালে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ কতটা তীব্র হতে পারে

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৪৫ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ট্রাম্প চীন ছাড়া সব দেশের সঙ্গে তার বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ স্থগিত করেছেন। এতে নিশ্চিত হয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্রতর হয়ে উঠবে। নতুন ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর ইতোমধ্যেই উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। তবে উভয় পক্ষই প্রাথমিকভাবে একটি চুক্তির বিষয়ে আগ্রহী ছিল, যা অন্তত উত্তেজনা হ্রাস করতে পারত। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পর বেইজিং কয়েকটি প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনে পাঠিয়েছিল এই আশা করে যে, এতে বোঝা যাবে ট্রাম্প কী ধরনের ছাড় খুঁজছেন এবং কীভাবে আলোচনা শুরু করা যায়। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েকটি বিষয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, যাতে এটি প্রতিযোগিতামূলক হয়, মুদ্রার মূল্যায়ন থেকে শুরু করে ডলারকেন্দ্রিকতার গ্যারান্টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প বিনিয়োগের বিষয়েও।

ট্রাম্প, তার পক্ষ থেকে, শি জিনপিংয়ের প্রশংসা করেছিলেন ‘তিনি একজন আশ্চর্যজনক লোক’ বলে এবং দুজনের মধ্যে একটি প্রাথমিক বৈঠকের জন্য বারবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনি পরামর্শ দেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা শুরু করুক, যাতে পরে তিনটি দেশ তাদের সামরিক ব্যয় অর্ধেকে নিয়ে আসতে পারে।

এখন আর চুক্তির সম্ভাবনা নেই। বরং যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে, যা উভয়ের জন্যই বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, অসৎ বাণিজ্যের জন্য চীনের শাস্তি হবে বিদ্যমান গড় ৪২ শতাংশ শুল্কের ওপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি। এত উচ্চহারের শুল্কের ফলে কিছু চীনা পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আর প্রতিযোগিতামূলক থাকবে না। আরও গুরুত্বপূর্ণ, এই সর্বশেষ পদক্ষেপে চীনের নেতৃত্বের মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মেছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন আসলে আলোচনায় আগ্রহী নয়; বরং চীনের অর্থনীতি ধ্বংস করতে চায়।

আগের শুল্ক বৃদ্ধির সীমিত প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে চীন এখন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যের ওপর চীন সর্বজনীন ৩৪ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, যার ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর প্রায় ১৪৩.৫ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হবে। চীন কিছু কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদাথের রপ্তানির ওপরও নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, কিছু মার্কিন কোম্পানিকে অবিশ্বাস্য ব্যবসার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং ‘ডুপন্টের’ বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা তদন্ত ঘোষণা করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের মতামত হলো, চীনের অর্থনীতি এতই দুর্বল যে এর কোনো প্রভাব নেই অর্থনৈতিক সংঘর্ষে। তারা মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হলে চীন সহজেই অন্যান্য রপ্তানির বাজারে প্রবাহিত হবে এবং ইউরোপ, জাপান এবং বৈশ্বিক দক্ষিণের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করবে। তবে বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র হলে এমন অতি আত্মবিশ্বাস গুরুতর ভুল গণনার দিকে নিয়ে যেতে পারে। চীনের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের কাছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর আর্থিক উদ্দীপনার জন্য যথেষ্ট স্থান রয়েছে, যদি তারা এটি ব্যবহার করতে চায়। এ পর্যন্ত তারা তা করতে বিরত ছিল, কারণ তারা অর্থনৈতিক কাঠামোগত সংস্কারের এজেন্ডায় গতি বজায় রাখার চেষ্টা করছিল। আন্তর্জাতিক বিরোধের জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি অবস্থায় তারা সম্ভবত ছিপি খুলতে পারে।

অন্যদিকে ট্রাম্প সম্ভবত বিশ্বের ওপর তার অর্থনৈতিক আক্রমণ থেকে পিছিয়ে এসেছেন, কিন্তু তিনি এটি পরিত্যাগ করেননি। এর মানে হলো, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক একটি অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হচ্ছে, যা উল্লেখযোগ্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। চীনের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যেতে পারে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবধমান মূল্যস্ফীতি এবং ধীর প্রবৃদ্ধি মোকাবিলা করছে।

এ বিরোধ কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে? যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনীতির মধ্যে কঠোর বিচ্ছিন্নতার সবচেয়ে সম্ভাব্য ফলাফল হলো বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ভয়াবহ বিঘ্ন সৃষ্টি। অনেক কোম্পানি স্রেফ বন্ধ হয়ে যাবে, কিন্তু বড় চোরাচালান নেটওয়ার্কের আত্মপ্রকাশ ঘটা শুরু হবে, যখন চীনা উৎপাদকরা আমেরিকার বাজারে প্রবেশ করতে চাইবে এবং আমেরিকান উৎপাদকরা হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো খুঁজে বেড়াবে। কিছু চীনা পণ্য লাতিন আমেরিকার দেশগুলোয় চলে যাবে, যে দেশগুলোর বেশির ভাগই মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধি থেকে রক্ষা পেয়েছে।

এটি বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে। যুক্তরাষ্ট্র চোরাচালান দমন করতে চাইবে। চীন কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো লক্ষ্যবস্তু করবে, যাতে সেগুলো আমেরিকান উৎপাদকদের কাছে না পৌঁছায়। উভয় পক্ষই তাদের প্রভাব বজায় রাখতে তৃতীয় দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করবে, যা প্রক্সি বিরোধের আশঙ্কা তৈরি করবে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক, উভয় পক্ষই একে অপরের জাতীয় নিরাপত্তার সংবেদনশীলতার ওপর আরও সরাসরি আক্রমণ করার জন্য প্রলুব্ধ হতে পারে।

অ্যান্টিওয়ারডটকম থেকে ভাষান্তরিত

জেইক ওয়ার্নার : ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত কুইন্সি ইনস্টিটিউটের পূর্ব এশিয়া প্রোগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক

 

কিউএনবি/আয়শা/১৬ এপ্রিল ২০২৫,/বিকাল ৪:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit