ডেস্ক নিউজ : মক্কা নগরীতে কাবাঘর নির্মাণের ৪০ বছর পেরিয়ে গেছে এর মধ্যে। তখন মসজিদুল আকসা নির্মাণ করেন নবী ইয়াকুব (আ.)। মসজিদুল আকসা ফিলিস্তিনের রাজধানী জেরুজালেমে অবস্থিত। এটি বিশ্বাসী মানুষের প্রথম কিবলা। ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতি। পৃথিবীর প্রায় সব মুসলমান এ মসজিদকে ভালোবাসেন। হৃদয়ে ধারণ করেন। তাদের কাছে এর বেশ গুরুত্ব রয়েছে। মুসলমানদের কাছে এ মসজিদ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ, এর কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো—
পৃথিবীর দ্বিতীয় মসজিদ
মসজিদুল হারাম বা কাবাঘর পৃথিবীর প্রথম ঘর ও প্রথম মসজিদ। এটি সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে অবস্থিত। এরপরই ভূপৃষ্ঠে বানানো হয়েছে মসজিদুল আকসা। আবু জর গিফারি (রা.) বলেন, ‘আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, প্রথম কোন মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বললেন, মসজিদুল হারাম। বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদুল আকসা। বললাম, এ দুইয়ের নির্মাণের মাঝখানে কত পার্থক্য? বললেন, ৪০ বছর।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৪২৫)
মুসলমানদের প্রথম কিবলা
মক্কার মুসলমানরা শুরুতে মসজিদুল আকসার দিকে মুখ ফিরিয়ে নামাজ পড়তেন। মদিনায় গিয়েও এভাবে ১৬ মাস পার হলো। এর মধ্যে মুহাম্মাদ (সা.) চেয়েছেন, কাবা হোক মুসলমানদের কিবলা। আল্লাহর কাছে আকাঙ্খাও করেছেন এর ব্যাপারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে মসজিদে বনু সালামায় জোহর নামাজ পড়ছিলেন একদিন। দুই রাকাত নামাজ পড়লেন। তখন কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ পেলেন। নামাজের ভেতরই তিনি কাবাঘরের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কায় পবিত্র কাবার সামনে থাকাবস্থায় বায়তুল মাকদিসের দিকে মুখ করে নামাজ পড়েন। মদিনায় হিজরতের পর দীর্ঘ ১৬ মাস সেদিকে ফিরেই নামাজ পড়েন। অতঃপর মুসলিমদের কিবলা পরিবর্তন করে পবিত্র কাবা করা হয়।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৮৩৬)
নবীজি (সা.)-এর ইসরা ও মিরাজ
নবীজি (সা.) যখন জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে রাত্রিকালীন ভ্রমণ বা মিরাজে যান, তখন মক্কা থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে প্রথম আসমানে গমন করেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাঁকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
বরকত ঘিরে আছে চারপাশ
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)। আরেক আয়াতে আছে, ‘আর আমি তাঁকে (ইবরাহিম) ও লুতকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলাম সেই ভূখণ্ডে, যেখানে আমি বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণ রেখেছি।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৭১)
সত্যের ওপর বিজয়ীদের ভূমি
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের একটি দল সত্যের ওপর বিজয়ী থাকবে, শত্রুর মনে পরাক্রমশালী থাকবে। দুর্ভিক্ষ ছাড়া কোনো বিরোধী পক্ষ তাদের কিছুই করতে পারবে না। আল্লাহর আদেশ তথা কিয়ামত পর্যন্ত তারা এমনই থাকবে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, তারা কোথায় থাকবেন? তিনি বললেন, তারা বায়তুল মাকদিস এবং তার আশপাশে থাকবেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২১২৮৬)
কিউএনবি/আয়শা/০৮ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ৯:৫০