কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগ বললো কোটা সংস্কারের পক্ষে তারাও
Reporter Name
Update Time :
মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪
১২৫
Time View
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ছাত্রলীগের বাধায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবির কর্মসূচি পুরোপুরিভাবে পালন করতে পারেনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বাধার মুখে তারা কয়েক মিনিটের মধ্যেই সংক্ষিপ্তভাবে তাদেরকে কর্মসূচী শেষ করতে হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে উভয়পক্ষ অবস্থান নিলে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এ সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোটা সংস্কারের পক্ষে তারাও।
কিন্তু জামায়াত-বিএনপি এটাকে ইস্যু করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবির কর্মসূচি হিসেবে প্রেসক্লাবের সামনে তাদের অবস্থান কর্মসূচী, প্রচারপত্র বিতরণ ও আলোচনাসভা করার কথা ছিল। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের পাশাপাশি জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও এ সময় জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেনসহ ছাত্রলীগের নেতার্মীদের জটলা বাড়তে থাকে।
প্রেসক্লাবের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট আলোচনা হয়। কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবির কর্মসূচী পালনকে কেন্দ্র করে কোনো অঘটনা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এর দায় ভার কে নিবে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের জানানো হয়। ছাত্রলীগের এই তৎপরতা ও বাধার মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা কর্মসূচী থেকে পিছু হাঁটেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতেই ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ সহ কয়েকটি স্লোগান দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্যরা।
সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী সানিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘সরকারের যে কোটা আছে আমরা সেটির যৌক্তিক সংস্কার চাই। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চলছে।আমাদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে চাইছে। কিন্তু সারা বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে অন্যায়ভাবে অত্যাচার ও নিপীড়ন করা হচ্ছে। আমরা এই অত্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হােক। আমরা থাকব পড়ার টেবিলে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু আমাদের থাকতে হচ্ছে রাজপথে। সরকারের কাছে দাবি চলমান সমস্যার সমাধান হোক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যেন কোনো হামলা না হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহারসহ হামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তারা। সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যেন কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার না হন।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আমরাও চাই কোটার যৌক্তিক সংস্কার হোক। কিন্তু চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। জামায়াতসহ বিএনপির লোকজন কোটার আন্দোলনকে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করেছে। তারা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে যারা কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করতে এসেছেন তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সুন্দরভাবে কর্মসূচী পালন করতে পারলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই বলে তাদের জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের কাছে তথ্য আছে যে জেলা ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের কর্মসূচীর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে এবং একটি নির্দিষ্টস্থানে জড়ো হয়ে বিশঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করবে।’