এম এ রহিম চৌগাছা, (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় সতিনের পিতা পিতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন প্রথম স্ত্রী। মামলায় উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের আইনাল হকের ছেলে তিব্বত আলীকে একমাত্র আসামী করা হয়েছে। চৌগাছা থানার মামলা নং ১১ তারিখ ১৬ জুলাই। ১৫ জুলাই সোমবার বেলা ২ টার দিকে চৌগাছা পৌরভবনের সামনে শফি উদ্দীন মল্লিকের বাড়ির ৪র্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগি গৃহবধু জানান, আজ থেকে ১০ মাস পূর্বে ঝিনাইদাহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর আনন্দবাজার এলাকার আজিজুল হক মোড়লের ছেলে কালাম মোড়লের সাথে আমার বিয়ে হয়। আমরা স্বামী স্ত্রী ঢাকা শহরে বসবাস করে আসছিলাম। সম্প্রতি আমার স্বামী যশোরের চৌগাছা শহরের পৌরভবনের সামনে শফি উদ্দীন মল্লিকের বাসা ভাড়া নেয়। এর আগে কিছুদিন আমরা যশোর শহরে বসবাস করতাম।
গত ১৩ জুলাই আমি আমার স্বামীর চৌগাছার ভাড়া বাড়িতে এসে জানতে পারি, সে চৌগাছা উপজেলার জগদিশপুর মির্জাপুর গ্রামের আইনাল হকের ছেলে তিব্বত আলীর মেয়ে আফরিন সুলতানা (১৪) কে বিয়ে করেছে। আফরিন উপজেলার স্বর্পরাজপুর দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। এনিয়ে আমার স্বামীর সাথে দুইদিন ধরে বাক বিতন্ডা হয়ে আসছিল। যার ফলে আমার স্বামী আমার সাথে মারমুখি আচরণ শুরু করে। এ জন্য সোমবার ১৫ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে আমি চৌগাছা থানায় গিয়ে আমার নিরাপত্তাহীনতার কথা জানায়। বাহিরের কিছু কাজ শেষে এদিন দুপুর ২ টার দিকে আমি বাসায় ফিরে রুমে প্রবেশ করি। এ সময় বাসায় অবস্থান করা আমার সতিন আফরিনের পিতা তিব্বত আলী আমাকে জাপটে ধরে।
এ সময় আমি তার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করলে আমার জামা ও পাজামা ছিড়ে ফেলে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হই। আমি অনেক চেষ্টা করে ঘর থেকে বের হয়ে চিকিৎসার জন্য চৌগাছা সরকারি মডেলহাসপাতালে ভর্তি হই।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চৌগাছা থানায় সংবাদ দিলে দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে আমার খোঁজ-খবর নেন। পরে থানার পুলিশ আমাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সাঈদুর রহমান ইমন জানান, প্রাথমিকভাবে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগিকে পরীক্ষার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।এ ব্যাপারে মির্জাপুর গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি জানান, তিব্বতের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বাল্য বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা হলে তিনি বেশ কিছু দিন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক ছিলেন। এর পরেও তিনি আবারও ৮ম শ্রেণিতে পড়া নিজের মেয়েকে কালাম মোড়লের প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার সাথে বিয়ে দিয়েছেন। এলাকাবাসি আরও জানান, তিব্বত তার জামাই কালাম মোড়লের বোনের সাথেও পরকীয়া স¤পর্কে জড়িয়ে পড়েছে।
চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। চৌগাছা থানার মামলা নং ১১ তারিখ ১৬ জুলাই। আসামীকে আটকের চেষ্টা চলছে।
কিউএনবি/অনিমা/১৬ জুলাই ২০২৪,/বিকাল ৫:৪৬