আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং প্রতিবেশী দেশগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় দুবাই বিমানবন্দরের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত রয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির কারণে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্ব হচ্ছে এবং উড়োজাহাজ অবতরণ করতে পারছে না বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ফ্লাইট নামা শুরু হলেও পুরো বিমানবন্দর অনেকটাই অচল। বিদেশি যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত ১ নম্বর টার্মিনালে উড়োজাহাজ অবতরণ করছে। তবে ফ্লাইটের উড্ডয়ন এখনও বিলম্বিত আছে। বিভিন্ন মহাদেশের মধ্যে ফ্লাইট চলাচলের সংযোগের প্রধান কেন্দ্র দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। গত বছর ৮ কোটির বেশি যাত্রীকে সেবা দিয়েছিল এ বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা বিমানবন্দরের পরই ব্যস্ততম এ বিমানবন্দরের অবস্থান।
মঙ্গলবার দুবাই বিমানবন্দরগামী বা বিমানবন্দর ত্যাগের অপেক্ষায় থাকা ৫০০ এর বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বুধবার, প্রায় ৩০০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং আরও শতাধিক দেরি হয়েছে। দুবাইয়ের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ কোম্পানি এমিরেটাস জানিয়েছে, দুবাইয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তাদের সব ফ্লাইটের যাত্রীদের চেক-ইন বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক্স-এ পোস্ট করে কর্মকর্তারা যাত্রীদের বুকিং নিশ্চিত করলেই বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
দুবাই বিমানবন্দরের প্রধান পল গ্রিফিথস বলেছেন: “এটি একটি অবিশ্বাস্যভাবে চ্যালেঞ্জিং সময়। জীবন্ত স্মৃতিতে, আমি মনে করি না যে কেউ এর মতো পরিস্থিতি দেখেছে।”অ্যান উইং নামে একজন ব্রিটিশ পর্যটক- যিনি তার স্বামী এবং তিন সন্তানের সঙ্গে লন্ডনে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন, বলেছেন: ‘এটি ভয়ঙ্কর, আমরা পশুদের মতো গাদাগাদি করে অবস্থান করছি – এটি বিপজ্জনক এবং অমানবিক।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ বিমানবন্দরে কোনো খাবার নেই, ফলে তার পরিবার দুপুরের খাবার খেতে পারেনি এবং কর্তৃপক্ষ শুধু কয়েক বোতল পানি দিয়েছিল তাদের।’বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্যার পানিতে বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার সমস্ত রাস্তা বন্ধ থাকায় আটকে পড়া যাত্রীদের খাবার পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আমিরাতের ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজি তথ্যানুসারে, মঙ্গলবার রাত ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশটিতে ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালে তথ্য সংগ্রহ শুরু হওয়ার পর থেকে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে এবং সারা দেশের অসংখ্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে।
রেকর্ড বর্ষণের ফলে দেশটির প্রধান মহাসড়কগুলোর কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে এবং দুবাইজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টির কারণে বাসিন্দারা তাদের গাড়ি রাস্তায় পরিত্যাগ করতে বাধ্য হন। এদিকে দুবাইয়ের রোডস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আরটিএ) ভারী বৃষ্টির কারণে লাল এবং সবুজ লাইনের বেশকিছু মেট্রো স্টেশন এবং অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিস সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে।
কিউএনবি/আয়শা/১৮ এপ্রিল ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:০০