ডেস্ক নিউজ : শবে বরাত তওবা ইস্তেগফার, নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত ও তাসবিহ তাহলিল পাঠ, জিকির আজকার করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। এ রাতেই আল্লাহ তাআলা অধিক পরিমাণে বান্দার তাওবা কবুল করে থাকেন।
এজন্য আমাদের উচিত হলো, এ রাতকে মহামূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ মনে করে নফল নামাজ ও জিকির আজকার এবং দোয়ায় মশগুল হওয়া। কারণ, কে না চায় যে, তার মনের আশা প্রত্যাশা কবুল হোক। চাওয়া পাওয়া পূরণ হোক।
হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন শাবান মাসের অর্ধেক হয়। অর্থাৎ বরাতের রজনী (শবে বরাত) আসে, তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়ো। আর দিনের বেলা রোজা রাখো।
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা এ রাতে সূর্য ডোবার সাথে সাথে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন, আছে কী কোনো গুনাহ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। কোনো রিজিক প্রার্থী আছে কী? আমি তাকে রিজিক দিব। কোনো বিপদগ্রস্ত মুক্তি পেতে চায় কী? আমি তাকে বিপদমুক্ত করবো। আছে কী এমন, আছে কী এমন? এমন বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। (সুনানে ইবনে মাজাহ)
হযরত সালাবা রা. থেকে বর্ণিত, পনেরোই শাবান রাতে আল্লাহ তাআলা সৃষ্টির প্রতি রহমতের দৃষ্টি করেন। মুমিন বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন। কাফিরদেরকে অবকাশ দেন (তওবা) ক্ষমার জন্য। (বাইহাকি শুয়াবুল ইমান)
সহিহ ইবনে হিব্বানের বর্ণনায় মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে- মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত এ রাতে আল্লাহ তাআলা সবাইকে ক্ষমা করেন।
বাইহাকির বর্ণনায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ রাতেই সিদ্ধান্ত হবে, কারা জন্ম গ্রহণ করবে এবং কারা কারা মৃত্যু বরণ করবে। বান্দার আমল আল্লাহর কাছে উপস্থিত করা হবে। রিজিক বণ্টন করা হবে।
এ ছাড়াও আল্লাহ তাআলা শাবানের পনেরো তারিখ প্রথম আসমানে আসেন, এ রাতে বনি কালব গোত্রের মেষপালকের গায়ে যে পরিমাণ পশম আছে, সে সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ ও জামে তিরমিজি)
তবে এ শবে বরাত পালনের রাত কেন্দ্রিক কিছু প্রথা পালন থেকে আমাদের বিরত থাকা দরকার। যেসবে মানুষের জন্য সময় নষ্ট ও কষ্ট ছাড়া তেমন কল্যাণ নেই। যেমন ঘটা করে বাসা বাড়িতে বিপুল আয়োজন করে হালুয়া রুটির ব্যবস্থা করা। এমনকি যার ফলে সে রাতে বাসা বাড়ির নারীরা আর নফল ইবাদত করার সময় পান না।
কেবল রুটি হালুয়া তৈরিতেই ক্লান্ত হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন প্রকারের আলোকসজ্জা ও আতশবাজির মাধ্যমে অপচয় ও স্বাভাবিক শৃঙ্খলা নষ্ট করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া। দলবদ্ধভাবে এ রাতে ইবাদত করাকে আবশ্যক মনে করা। বিশেষ নিয়মে, বিশেষ সুরা দিয়ে নফল নামাজ আদায় করাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা। সকলে একত্র হয়ে ইবাদত উৎসব অনুষ্ঠান উদ্যাপন করা ইত্যাদি।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক পদ্ধতিতে, স্বাভাবিকভাবে নফল নামাজ জিকির তেলাওয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে গুনাহ মাফ করে শবে বরাতের প্রকৃত তাৎপর্য ও গুরুত্ব বোঝার তাওফিক দান করুন।
কিউএনবি /আয়শা/২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪/রাত ৮:৩২