বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের মেহেদীর রং না শুকাতেই লাশ হলো নববধু তাছলিমা আক্তার। বিয়ের ৪ দিনের পর পাষন্ড স্বামী তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে।মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর মধ্যপাড়ায় স্বামী আব্দুল হামিদ এ হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটায়।এ ঘটনা টের পেয়ে বড় ভাই আব্দুল হানিফ এগিয়ে গেলে তাকে ছুড়িকাঘাত করে পালিয়ে যায় আব্দুল হামিদ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ।এলাকাবাসী ও নববুধুর স্বজন সূত্রে জানা গেছে, হীরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ মিয়ার প্রবাসী পুত্র আব্দুল হামিদের সাথে ৭/৮ মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বাসুদেব গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে তাছলিমা আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়।
গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুই পরিবারের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে আব্দুল হামিদ। এরমধ্যে একবার তাছলিামকে নিয়ে শশুর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ আশে পাশের লোকজন হৈ চৈ শুনে হামিদের বাড়িতে এসে দেখে হামিদ কলা কেটে স্ত্রীকে হত্যা করেছে।এদিকে খবর পেয়ে নিহতের ভাই আব্দুল কুদ্দুছ ঘটনাস্থরে এসে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন আর বোনের নাম নিয়ে বিলাপ করছিলেন। তিনি বলেন, ৭/৮ মাস আগে বিদেশে থাকা অবস্থায় হামিদের সাথে বোনের বিয়ে হয়। গত শুক্রবার অনুষ্ঠান করে বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠাই। এসময়ের মধ্যে কোন ঝামেলা হয়েছে কিনা বলতে পারিনা। আমি আমার বোনের হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় কয়েজন জানায়, হামিদ ৬ বছর বিদেশ ছিল। ১৫/২০ দিন আগে দেশে ফিরে আসে। সে কারও সাথে মিশতো না। সামাজিক মাধ্যমেও একটিভ ছিল না। হামিদের বড় ভাই সেন্টু মিয়ার স্ত্রী রুবি আক্তার বলেন, গোসলখানায় যাওয়ার সময় তাছলিমাকে রান্না ঘরে বড় বাশঝাড়ে বসে থাকতে দেখে গেছি। তাকে বলেছি আজকে থেকে তুমি আমাদের ঘরে খেও।এই বলে আমি গোসলখানায় চলে যাই। কিছুক্ষণ পর চিৎকার চেচামেচি শুনি দৌড়ে এসে দেখি হামিদ ও হানিফ দুই ভাই ধস্তাধস্তি করছে। হানিফের মুখে রক্ত। হানিফ বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। পাশের বাড়ির একজন লোক এগিয়ে এসে হামিদের হাত থেকে হানিফকে রক্ষা করে। হামিদ তখন দৌড়ে পালিয়ে যায়।আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নূরে আলম বলেন, দুপুরে হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। রক্তাক্ত অবস্থায় নববধুকে বিছানায় পেয়েছি। মরদেহের সুরতহাল করা হয়েছে। আসামীকে ধরার জন্য বাইপাস সড়ক ও সীমান্ত এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
কিউএনবি/অনিমা/১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪,/রাত ১১:১০