আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রথমবারের মতো মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসাতে সফল হয়েছে ইলন মাস্কের কোম্পানী নিউরালিংক। ইলন মাস্ক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ পোস্ট করে এই তথ্যটি শেয়ার করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, মানুষের মস্তিষ্কে চিপ সংযোজন নিউরোটেকনোলজি কোম্পানির জন্য একটি বিশাল বড় পদক্ষেপ। আর প্রথম এই ইমপ্লান্ট গ্রহণকারী রোগীকে বলা হচ্ছে ‘লিঙ্ক’। ইলন মাস্ক সোমবার (২৯ জানুয়ারি) তার পোস্টে লিখেছেন, ‘গতকাল একজনের মস্তিষ্কে নিউরালিংক বসানো হয়েছে এবং তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।’

প্রথম মানুষের মস্তিষ্কে ব্যবহৃত নিউরালিংক পণ্যটির নাম ‘টেলিপ্যাথি’ বলে জানান ইলন। তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক ফলাফল খুবই ভালো এবং নিউরনের স্পাইকগুলো ভালোভাবে নজর রাখছে এই চিপ।’প্রসঙ্গত, নিউরালিংক গত বছর মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের কাছ থেকে ইমপ্লান্টের জন্য মানুষের পরীক্ষা শুরু করার অনুমতি পাওয়ার পরে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে মস্তিষ্ক ও কম্পিউটারের মধ্যে সরাসরি একটি যোগাযোগের পথ তৈরি করা হচ্ছে। যারা তাদের অঙ্গ-প্রতঙ্গ হারিয়েছেন তাদের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহারকে অনেক সহজ করে দেবে এই ডিভাইসটি। এটি শুধু চিন্তা দ্বারাই কোনরকম ডিভাইস ছাড়া আপনার ফোন বা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। শুধু তাই নয় এটা মস্তিস্কের ক্ষমতা বাড়িয়ে মানুষ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে এমন একটি সম্পর্ক তৈরি করতে পারে, যেখানে দুজনেই একসঙ্গে বড় কিছু করতে পারবে।
উল্লেখ্য, মানুষের মস্তিষ্কে মেশিন বসিয়ে জটিল রোগ সারানোর পদ্ধতি এই প্রথম। ইলন মাস্কের নিউরালিংক কর্পোরেশনের তৈরি এই ডিভাইস মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি দেবে মানুষকে। মস্তিষ্কের ক্ষতও সারাবে। ইলন মাস্ক দাবি করেছেন, ডিমেনশিয়া, ডিপ্রেশন, পার্কিনসন্সের মতো রোগ সারাতে পারবে ব্রেন-মেশিন। এমনকি স্নায়ুর জটিল রোগও সারিয়ে তুলবে ধীরে ধীরে। প্রথমবার মানুষের ব্রেনে বসানোর পরে দেখা গেছে, ব্রেনের কোথায় ক্ষত তৈরি হয়েছে, কোন স্নায়ুতে গণ্ডগোল তাও দেখাতে পারবে এই ব্রেন-মেশিন।
নিউরলিংকের ডিভাইস, যাকে ‘লিঙ্ক’ বলা হয়, একটা ছোট মুদ্রার সমান এই চিপ। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই ডিভাইসটিকে মানুষের মস্তিষ্কের ভিতরে স্থাপন করা হয়। এটি এমন এক ডিভাইস যা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। ইলন মাস্ক বলেছেন, ‘যদি স্টিফেন হকিং শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েও একজন স্পিড টাইপিস্টের চেয়ে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারেন, তাহলে অন্যসব প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও পারবেন। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
কিউএনবি/আয়শা/৩০ জানুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৪:৪৩