রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে আর সামরিক শাসনের শঙ্কা নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩
  • ১১৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : বুধবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি। ভারতের দৈনিক পত্রিকা হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এসেছে বাংলাদেশে দুই দলের বিরোধী অবস্থানের কারণে সামরিক শাসকের উত্থান ঘটতে পারে, এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারি না। এগুলো আমি মনে করি না। গ্রাউন্ড রিয়েলিটি ইজ বিএনপি বড় মিটিং করে, শুনেছি ওরা টাকাটুকা দেয়, তখন লোক আসে। কিন্তু আমাদের বৃহত্তর জনগণের কাছে যদি যান, তারা আওয়ামী লীগকেই পছন্দ করে।’

তিনি আরও বলেন,আমরা শক্ত অবস্থানে আছি। সুতরাং শক্ত অবস্থানে থাকলে বিদেশি বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র কাজে লাগবে না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে লাগবে না। সেসব দেশে ষড়যন্ত্র সাকসেসফুল হয়, যেখানে আপনার অভ্যন্তরীণ সংঘাত থাকে বেশি। আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ সংঘাত খুব কম। সুতরাং এখানে সেটা হবে না। মন্ত্রী বলেন, আর বিএনপিও চাইবে না যে দেশটা ধ্বংস হোক। কারণ দেশটা আমরা ধ্বংস করতে চাই না। যেখানে এগুলো হয়েছে, সেগুলো কিন্তু মানুষের জন্য অমঙ্গল ডেকে নিয়ে এসেছে। দেখেন, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া- সব জায়গায়ই অমঙ্গল। বিএনপিও সেটা চাইবে না। সুতরাং আমার বিশ্বাস, তারাও একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়… তারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাহলে নিশ্চয়ই তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা (বিএনপি) অংশ নিয়েছিল, সেখানে তাদের একই জায়গায় দুই-তিন প্রার্থী দিয়েছে। যে কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। এবার তারা ভুল বুঝবে, প্রতিটি সিটের জন্য তারা একজন প্রার্থী দেবে। তাহলে তাদের অবস্থান আরও ভালো হবে। আমার ধারণা, তারা যদি গণতন্ত্রের ওপর বিশ্বাস রাখে, বিশ্বাস না রাখলে অন্য জিনিস। যদি বিশ্বাস রাখে, তাহলে নির্বাচনের মাধ্যমে.. আর এ বছর নির্বাচন খুব স্বচ্ছ ও সুন্দর হবে। বাংলাদেশ নিয়ে কি তাহলে বিদেশিরা ষড়যন্ত্র করছে, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,বিদেশিদের ষড়যন্ত্র নিয়ে আপনার মাথাব্যথার দরকার নেই। আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, আমরা এগিয়ে যাব। দেশবাসী আমাদের সাথে আছে, আমরা অবশ্যই এগিয়ে যাব তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে। এরইমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন উঠেছে যে বাংলাদেশ এবার সদস্যপদ পাবে না। নতুন সদস্য নেয়ার ক্ষেত্রে ব্রাজিল ও ভারত কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারত যেহেতু প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশ তাদের কাছে কোনও অনুরোধ করবে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাহ, আপনি তো সব উত্তরও দিয়ে দিয়েছেন। আমরা যেটা শুনেছি, আপনিও তাই বলেছেন।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট দেখা করেছিলেন। তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তখন ধারণা ছিল, তারা নতুন কিছু দেশকে ব্রিকসের সদস্য করবেন। তখন বলেছিলেন, আমরা আরও আটটি দেশকে সদস্য হিসেবে নিতে চাই, যারা শক্তিশালী অর্থনীতি। তখন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, কারা? তিনি তখন বলেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ইত্যাদি। চিন্তা করলাম, আর আমরা তো ব্রিকস ব্যাংকে যোগ দিয়েছি। আমরা তো একটি উদীয়মান রাষ্ট্র। আমাদের জিডিপিও অনেক বেশি—ফোর হান্ড্রেড সিক্সটি ফাইভ বিলিয়ন ডলার। যা দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে বেশি,’ যোগ করেন তিনি।

মন্ত্রী আরও বলেন,এটা আমাদের ওপেনিং হতে পারে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রেসিডেন্টকে বললেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ আছে নেলসন ম্যান্ডেলার কারণে। তখন প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছিলেন যে দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন। সে কারণেই দেশটিতে যাওয়া।

‘এখন তো নতুন ডেভেলপমেন্ট হয়েছে। শুনেছি, প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিনিধি আসবেন। আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় সবাই আসবেন। আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে এখনও আমাদের সম্পর্ক জোরালো হয়নি। ইট ইজ অ্যা রাইজিং স্টার। আমরা সেই সুযোগে বিভিন্ন দেশের লোকের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাব,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

আব্দুল মোমেন বলেন, আর সেখানে অনেক সুযোগও আছে। যে কারণে সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনারা জানেন, আফ্রিকায় আমাদের মিশনও ছিল না। আমি আসার পর দুটি মিশন করেছি। আরও খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর আমাদের ওখানের রাষ্ট্রদূতেরাও আলাদা হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী সেখানে গেলে তাদের নির্দেশনা দিলে তারা আরও উদ্দীপ্ত হবে।তাহলে আমরা এবার ব্রিকসের সদস্যপদ পাচ্ছি না; এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,এটি তাদের সিদ্ধান্ত। সেখানে যে বিতর্কের বিষয়টি, যা প্রশ্নের সময় আপনি বলেছেন। তিনটি দেশ চাচ্ছে নতুন সদস্য নেবে। আর ভারত ও ব্রাজিল বলছে, আগে নেয়ার একটি নিয়মকানুন তৈরি হোক, তারপর নেয়া হোক। এটি তাদের বিতর্ক, আমাদের না। যখন নেয় নেবে।

ভারত প্রতিবেশী দেশ, তাদের প্রতি কেনো অনুরোধ থাকবে কিনা, এম প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিনের মধ্যে তো ভারত যাচ্ছিই। আরও অন্যান্য দেশে যাচ্ছি, তখন দেখা হবে। দেখা তো হবেই বটে। বিশেষ কোনো আয়োজন আমরা সেখানে করবো, নাকি ভারতে করা হবে, সেটা আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’রোহিঙ্গাদের আগমনের আরও একটি বছর পার হতে যাচ্ছে। তাদের প্রত্যাবাসনের কোনো সুযোগ তৈরি হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এখন এটা বলতে পারব না। কারণ দু-দুবার তারিখ দেয়ার পরেও হলো না। মিয়ানমারই তারিখ দিয়েছিল।

আর এখন তো কিছু লোক উঠেপড়ে লেগেছে, যাতে তারা না যান। আমাদের কিছু বন্ধুপ্রতীম দেশ মনে করে যে তাদের এই দেশে স্কিল ট্রেনিং দিয়ে অ্যাবজর্ব করে ফেলা উচিত। কারণ পশ্চিমা দেশগুলোতে শরণার্থী যারা যান, তারা ওই দেশে স্থায়ী হয়ে যান। প্রত্যাবাসনের কোনো উদহারণ পশ্চিমা দেশগুলোতে খুব একটা নেই। আব্দুল মোমেন আরও বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা, এসেছে যখন তাদের অ্যাবজর্ব করে নাও। সেদিন যে দুজন কংগ্রেসম্যান এসেছিলেন, তারাও একথা বলেছিলেন। আমরা বলেছি, জি না, আমরা হলাম দুনিয়ার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। প্রতিবছর এখানে ২০ লাখের বেশি লোক জব মার্কেটে আসেন, অন্য লোক আমাদের দরকার নেই। তাদের নিজ দেশেই ফিরে যাওয়া উচিত।

আর আপনারা কিছু নিয়ে যান। আপনারা তো নেননি, বলেকয়েও নেননি। আপনারা তো বলেছিলেন, অনেক লোক নেবেন, আপনাদের বন্ধু দেশগুলোকেও বলবেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া। আপনারা বরং সেটির জন্যই চেষ্টা করেন। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে তারা যায়। মিয়ানমার আমাদের শত্রু দেশ না, প্রতিবেশী দেশ জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, তাদের কিছু অসুবিধা ছিল বলে তাদের বের করে দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতেও তারা রাজি। কিন্তু কোন সময় নেবে, সবই তাদের ওপর নির্ভর করে। কারণ তারাই সমস্যা তৈরি করেছে। সমাধানও তাদের। আমরা চাপ দিচ্ছি। রোহিঙ্গাদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের না। দুনিয়ার সব দেশের। তাদের যাতে নিয়ে যাওয়া হয়, যারা এখানে আসেন, তাদের সেটা বলেছি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৬ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১০:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit