ডেস্ক নিউজ : সরেজমিনে দেখা যায়, নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা যেন বিষাক্ত বাতাসের কুণ্ড। যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে পুরো এলাকা। আর লাহারহাট মহাসড়কের ধুলোবালি দেখে যে কারও মনে হতে পারে এগুলো কুয়াশা কিংবা মেঘ। এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় নাক দিয়ে শ্বাস নেয়াই যেন দায় চলাচলকারীদের। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে এখন পূর্ণ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তদের ভিড়। হাসপাতালের বিছানায় অর্ধশত শ্বাসকষ্টের রোগী। ভুক্তভোগীরা বলছেন, বরিশাল নগরীতে অতিরিক্ত ধুলাবালিতে অসুস্থ হচ্ছেন তারা। নাছিমা নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, কিছুদিন আগে বাবা বরিশাল আসে গ্রামের বাড়ি থেকে। এরপর হঠাৎ করে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এখন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
আবির নামে আরেক রোগীর স্বজন জানান, ১ বছর হলো গ্রাম থেকে বাবা-মাকে বরিশালে নিয়ে আসি। এখানের আবহাওয়াতে তারা অভ্যস্ত হতে পারে নাই। তাই বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরের উপ পরিচালক এ এইচ এম রাশেদ বলেন, নাগরিকরা নিজেরা সচেতন না হলে আসলে বায়ু দূষণ রোধ করা কঠিন। আমরা চেষ্টা করছি বায়ু দূষণ রোধ করতে। পাশাপাশি সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে যথাযথ অভিযান পরিচালনা করা গেলেই বায়ু দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ধুলোবালির দূষণে ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি। তাই প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান স্বাস্থ্য বিভাগের। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতিদিনই গড়ে ২০ থেকে ৫০ জন হাসপাতালে শ্বাসকষ্টের রোগী ভর্তি হচ্ছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নগরীর বাসিন্দা।
বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের উপ পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, বায়ুবাহিত রোগ প্রতিরোধে মাস্ক পরাসহ নানাভাবে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। যদিও আমাদের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনসহ সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। বিশ্বব্যাংকের ২০২০ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। এরপরই অবস্থান বরিশালের।
কিউএনবি/আয়শা/০৩ এপ্রিল ২০২৩,/রাত ৯:৪৮