আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়ার পুনর্গঠনে ২১৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশটিতে ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসানের পর দেশটির পুনর্গঠন সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থী কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি।
বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “তেরো বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ার পুনর্গঠনে ব্যয় হবে ২১৬ বিলিয়ন ডলার।”
দেশটিতে ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অবকাঠামো এবং নির্মাণ সম্পদ মূল্যায়ন করে প্রতিবেদনে ব্যয়ের পরিমাণের এ কথা বলা হয়েছে।
২০১১ সালে আসাদের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নৃশংস দমনের মাধ্যমে শুরু হওয়া সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত এবং দেশের অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
গত ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রবল বিদ্রোহের মুখে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদ দেশ ছেড়ে মস্কোতে পালিয়ে যান। এর মাধ্যমে বাশার ও তার বাবা হাফিজ আল-আসাদ যুগের অবসান ঘটে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার সংঘাত-পূর্ব মোট মূলধনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যার মধ্যে অবকাঠামো, আবাসিক ভবন এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ভবনগুলোর প্রত্যক্ষ ভৌত কাঠামোগত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আনুমানিক ১০৮ বিলিয়ন ডলার। মূল্যায়ন বিভাগগুলোর মধ্যে অবকাঠামো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোট ক্ষতির ৪৮ শতাংশ এবং ৫২ বিলিয়ন ডলারের সমতুল্য।
প্রতিবেদনে ভৌত সম্পদের ব্যয় অনুমান করা হয়েছে ১৪০ বিলিয়ন থেকে ৩৪৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে, ‘একটি রক্ষণশীল সেরা অনুমান’ ২১৬ বিলিয়ন ডলার।
যুদ্ধের প্রাথমিক বছরগুলোতে ভারী বোমাবর্ষণের শিকার প্রধান বিদ্রোহী ঘাঁটি আলেপ্পো প্রদেশ এবং দামেস্কের গ্রামাঞ্চল ধ্বংসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
বিশ্বব্যাংকের মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের পরিচালক জিন-ক্রিস্টোফ ক্যারেট বলেছেন, সামনের চ্যালেঞ্জগুলো বিশাল, তবে বিশ্বব্যাংক পুনরুদ্ধার এবং পুনর্গঠনকে সমর্থন দেওয়ার জন্য সিরীয় জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।
বিশ্বব্যাংক অনুমান করেছে, পুনর্গঠন ব্যয় ২০২৪ সালের সিরিয়ার পূর্বাভাসের চেয়ে দশগুণ বেশি হবে।
আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার নতুন সরকার দেশ পুনর্গঠনে বিনিয়োগ আকর্ষণ করার কাজ করছে।
তারা উপসাগরীয় দেশগুলোসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি এবং সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
সিরিয়ার অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ বার্নিয়েহ বলেছেন, প্রতিবেদনটিকে বিস্তৃত ধ্বংসের পরিমাণ এবং ভবিষ্যতে পুনর্গঠন ব্যয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেছেন, এখন আগের চেয়েও বেশি সিরিয়াকে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো পুনরুদ্ধার, সম্প্রদায়গুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং তার জনগণের জন্য আরও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপনে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং অংশীদারিত্ব একত্রিত করা অপরিহার্য। সূত্র: এপি, এএফপি
কিউএনবি/অনিমা/২২ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:৪০