তোবারক হোসেন খোকন দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : বর্তমান সমাজে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনই পড়াশোনার মানও উন্নত হচ্ছে। টাকার অভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে এমনটা হতে পারে না। মেধাবী সীমা রানীর লেখাপড়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে সকল সহযোগিতা করবো। পড়াশোনা করে সীমা রানী এগিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা করি। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ প্রতিনিধি কে কথা গুলো বলছিলেন দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের নাগেরগাতী গ্রামের গরীব মেধাবী ছাত্রী সীমা রবিদাস। ২০২২ সনে নাগেরগাতী অনির্বান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করে সীমা রানী। টাকার অভাবে বই কেনা তো দুরের কথা কলেজে ভর্তি হওয়ারই টাকা নাই বাবা সুনীল রবিদাসের কাছে। সীমা রানীর বাবা জুতা সেলাইয়ের কাজ করে মেয়েকে পড়াশোনা করাতেন। মা গৃহিনী। দিন রাত পরিশ্রম করে মেয়েকে এ পর্যন্ত এনে থমকে গেলেন বাবা সুনীল রবি দাস। সীমার ১ বোন ২য় শ্রেনীতে, ১ ভাই ৫ম শ্রেনীতে অন্য ১ ভাই সেলুনে কাজ করে। মা শ্বাস কস্টের রোগি আর বাবা অসুস্থ্যতার দরুন আর চালাতে পারছিলেন না। এমন মেধাবী শিক্ষার্থী সীমা পড়াশোনা বাদ দিয়ে শহরে কাজে চলে যাবে এ খবর পেয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন ইউএনও রাজীব-উল-আহসান। সীমা রানীকে কলেজে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করলেন। শুধু তাই নয়, পুরো একসেট মানবিক শাখার বই কিনে দিলেন সীমা রানীকে।
মেধাবী সীমা রানী চোখ মুছতে মুছতে এ প্রতিনিধি কে জানায়, এসএসসি পাশ করার পরে মনের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করছিলো। ইউএনও স্যারের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। সবার কাছে দোয়া চাই। যাতে ভালো লেখাপড়া করে দেশের সেবা করতে পারি। ভগবান স্যারের মঙ্গল করুন। সীমা‘র বাবা সুনীল রবি দাস বলেন, অর্থকষ্টে থাকার পরও মেয়েকে পড়াতে বিভিন্ন জনের কাছে হাত পেতেছি। এমনও দিন গেছে না খেয়ে থেকেছি, কাউকে বুঝতে দেইনি। সীমা মেট্রিক পাশ করার পর অনেক চিন্তিত ছিলাম। ইউএনও স্যার সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় এখন একটু ভারমুক্ত হয়েছি। আমি ভগবানের কাছে স্যারের উন্নতি কামনা করছি। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজীব-উল-আহসান এ প্রতিনিধি কে বলেন, ‘‘মানুষ মানুষের জন্য – জীবন জীবনের জন্য’’ টাকার অভাবে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খবরটি জানতে পেরে তার খোঁজ নিলাম। কলেজে ভর্তি করানো সহ তার বই গুলো কিনে দেয়ার ব্যবস্থা করলাম। সীমা রানী যাতে নির্বিঘেœ তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে তারও ব্যবস্থা করলাম। আসুন, আমাদের আশ-পাশে এমন অনেক সীমা রানী রয়েছে, তাদেরকে সামনে এগিয়ে নিতে একটু সহায়তা করি। তাদের পাশে আমাদের যেটুকু সামর্থ আছে তা নিয়ে দাঁড়াই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
কিউএনবি/আয়শা/০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৫:২১