“সম যোগ সার”
আমার দৃষ্টিতে সংসার মানে, আমার রান্নাঘরে থাকা প্রতিটা মশলার কৌটা, তোশকের নিচে থাকা সমস্ত শপিং ব্যাগ, জানালার গ্রীল, ভাতের চামচ, ঘর ঝেড়ে বের হওয়া যতো ধুলা, মানিপ্লান্টের হলুদ পাতা, ফার্নিচারের প্রতিটা স্ক্রাচ, প্রতিদিন ভ্যান থেকে কেনা পটল আর শাক, বিশ্বস্ত ছুটা বুয়ার উপর চাবী ফেলে রেখে বিকালে ফিরে পাওয়া গোছানো ঘর,কষ্টে উপার্জিত টাকায় ডিসকাউন্টে কেনা সুপারশপের টুকিটাকি, মেহমান আসবে জানলে অতি আগ্রহে তৈরী আমার আনাড়ী রান্না, পরিশোধিত নানবিধ বিলের কাগজ ভরা ড্রয়ার, বাসা ভাড়ার রসিদ, বাজারঘাট আর ঘরের হাজার টা প্রয়োজনীয় ঘাটতি দেখেও না দেখার ভান করে থাকা এক লোকের নামে মনে মনে গজগজ করা.., কাজ শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে খুজে পাওয়া সন্তানের মুখের হাসি।
আমার ছাপোষা ক্লেষ্ট জীবনের যতো অভিযোগ, অনুযোগ, সফলতা বা ব্যর্থতা সব মিলিয়ে, না শেষ হওয়া এক গরল সমীকরণ ই হয়তো সংসার।
মানুষ তার সমস্ত জীবনে কোনো না ক্ষুদ্র জায়গা কে ঘিরে হলেও স্বেচ্ছাচারী হতে চায়। চায়, প্রতিবেলা নিজে রান্না না করলেও কি কি আইটেম টেবিলে সার্ভ হতে পারে, সেই সামান্য সিদ্ধান্ত টা নিতে। কারো ক্ষেত্রে এক জীবনেও এই সাধারণ সিদ্ধান্ত টা নেয়া হয় না। কারো আবার যুগ পার হওয়ার পরেও সেই সুযোগ আসে কিংবা আসে না।
সংসার হচ্ছে একজন নারীর কাছে সেই স্বেচ্ছাচারী Non harmful স্বাধীনতার জায়গা। এই Non harmful স্বেচ্ছাচারীতার তীব্রতা থেকেই কারো ঘর হয় খুব পরিপাটি, কারোটা হয় খানিকটা এলোমেলো।
প্রতিদিনই অন্য সবার মতো হাজার টা চড়াই উৎরাই পার করে, কাউকে বিরক্ত না করে, জীবন সংসারে ঘটা শত গল্পের মাঝেও আমি খুজে পাই এক প্রকার Self Satisfaction বাংলায় যাকে বলে আত্মতৃপ্তি।
তাই আমি বলি কি, প্রত্যেকের ই উচিত, তার নিজ নিজ জায়গায় (নিজ ভূবনে) satisfied থাকার আস্থা রাখা। আপনি যখন আপনার অবস্থানে থেকে Satisfied থাকার চেষ্টা করবেন, সেটা একজন আরেকজনের প্রতি এক রকম উদ্দীপক হিসেবে কার্যকর হবে।
লেখিকাঃ ফায়াজুন্নেসা চৌধুরী, শিক্ষক, ডিপার্টমেন্টে অফ সিএসই, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
কিউএনবি/বিপুল/১৮.১১.২০২২/রাত ৮.৪০