সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাশমিকা মান্দানার ছুটির দিন কাটে চোখের জলে ফুলবাড়ী উপজেলার শিবপুর গ্রামে জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে মারপিট অধিনায়ক মুল্ডারের ব্যাটে ইতিহাস, টেস্টে ত্রিপল সেঞ্চুরি রিকশাচালক তুহিন হত্যা মামলায় ২ দিনের রিমান্ডে আইভী মাইটিভির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ওমেদা বেগম এর ১৮তম মৃত্যু বাষির্কীতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত দারুল ইহসান ট্রাস্টের সকল সম্পত্তি বৈধ কমিটির কাছে বুঝিয়ে দিতে সংবাদ সম্মেলন  লালমনিরহাটে স্কুলের শ্রেণীকক্ষ থেকে নৈশপ্রহরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার আশুলিয়ায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন  ইউটিউবে চালু হচ্ছে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নতুন নিয়ম শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভিন

মেসি না রোনালদো, কে মেটাবেন আক্ষেপ?

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২
  • ১০৯ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : আর মাত্র কয়েকঘণ্টা! রোববার থেকেই শুরু হচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। বিভিন্ন কারণে এই বিশ্বকাপ আসর আগেরগুলোর থেকে আলাদা হতে চলেছে। আয়োজন, পরিকাঠামো, সাজসজ্জা, ব্যাপ্তি- সব কিছুতেই অতীতকে ছাপিয়ে যেতে চলেছে কাতার। একইসঙ্গে যোগ হয়েছে বিবিধ বিতর্কও। 

তবে এসব ছাড়াও এবারের বিশ্বকাপটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে দু’জনের কাছে। নিঃসন্দেহে সেই দু’জন হলেন- লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

সম্ভবত এই প্রজন্মের দুই সেরা ফুটবলার, যারা কিনা সব কিছুই পেয়েছেন, শুধু একটা জিনিস ছাড়া- আর তা হলো বিশ্বকাপ। তাই এবারের প্রতিযোগিতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দু’জনের কাছেই। কাপ হাতে উঠুক না উঠুক, মাথা উঁচু করে বিদায় নেয়ার মঞ্চ তৈরি করার এটাই যে শেষ সুযোগ!

প্রথম জনের বয়স ৩৫। দ্বিতীয় জনের ৩৭। কোনও দ্বিধা না রেখেই বলে দেওয়া যায়- এটাই তাদের শেষ সুযোগ। নিজের দেশে এখন নন্দিত হলেও বন্দিত নন মেসি। কারণ একটাই। তার ক্যাবিনেটে নেই কোনও বিশ্বকাপ শিরোপা। 

আর্জেন্টিনাবাসী যাকে ঈশ্বরের মতো জ্ঞান করে, সেই প্রয়াত দিয়েগো ম্যারাডোনাই কেবল দেশবাসীকে একটি বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন, একবারই ফাইনালে তুলেছেন। মেসিও ফাইনালে দেশকে তুলেছেন, তবে ঢের দূরত্ব থেকে গেছে কাপ আর হাতের মাঝে। সব পেয়েও তাই যেন কিছুই পাওয়া হয়নি তার। 

৭টি ব্যালন ডি-অর জয়ী এই তারকা বেশ কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, একটি বিশ্বকাপের বদলে তিনি সবকটি ব্যালন ডি-অর ট্রফি দিয়ে দিতে রাজি। তিনি যে কতটা মরিয়া- এই সামান্য কথা থেকেই বোঝা গিয়েছিল। মেসি কিন্তু দেশকে কোপা আমেরিকা দিয়েছেন। জিতেছেন ফাইনালিসিমাও। বিশ্বকাপটাই কেবল বাকি।

ঠিক উল্টো চিত্র রোনালদোর পর্তুগালের ক্ষেত্রে। একবারও বিশ্বকাপ জেতেনি তারা। মেসির আর্জেন্টিনায় ফুটবল যতটা উন্মাদনা নিয়ে দেখা হয়, রোনালদোর দেশে অবশ্য ততটা নয়। তার কারণ হয়তো একটাই, বিশ্বকাপে আহামরি কিছু কোনওদিনই করে দেখাতে পারেনি পর্তুগাল। তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল ১৯৬৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠা, যেবার প্রয়াত ইউসেবিয়ো একাই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন গোটা দেশকে। তবে দেশের হয়ে রোনালদোর সাফল্য খুব একটা কমও নয়। প্রথমবার ইউরো কাপ এবং নেশনস লিগ জিতিয়েছেন তিনি। দু’টি আন্তর্জাতিক ট্রফি আছে তারও।

ধরা হয় যে, ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে বালন ডি-অর হলো যে কোনও ফুটবলারের জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার। হাতেগোনা কয়েকজন ফুটবলারই এতদিন এই ট্রফি জিতেছেন। মার্কো ফন বাস্তেন, জোহান ক্রুয়েফ, মিশেল প্লাতিনিরা একাধিক বার এই পুরস্কার জিতেছেন। কিন্তু মেসি এবং রোনালদো যেভাবে এই পুরস্কারকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন, তা নজিরবিহীন। 

২০০৮ থেকে ২০১৭- মাঝের এই কয়েকটা বছর মেসি-রোনালদোর বাইরে বালন ডি-অর জেতেন নি কেউই। এত দিন ধরে মাত্র দু’জন ফুটবলারই গোটা বিশ্বকে শাসন করছেন- এমন ঘটনা অতীতে দেখা যায়নি।

ফুটবলে এই দু’জনের দাপট তুলনা করা যায় টেনিসের সঙ্গে। রজার ফেদেরার এবং রাফায়েল নাদালের অবিশ্বাস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবারই জানা। মেসি-রোনালদোও সমগোত্রের। মেসি কিছুটা ফেদেরার ধাঁচের, যিনি ভরসা রাখেন শিল্পের ওপরে। রোনালদো যেন নাদালের মতো, যার কাছে শিল্প কম, শারীরিক শক্তিই বেশি। 

ব্যক্তিগত স্তরে ফেদেরার-নাদালের বন্ধুত্ব অবশ্য অতুলনীয়। ফেদেরারের শেষ ম্যাচে তো হাউ হাউ করে কাঁদতে দেখা গেছে নাদালকে। রোনালদোর অবসরের দিন মেসি অথবা মেসির অবসরের দিন রোনালদো তেমনটা করবেন- এটা বিশ্বাস করবেন না কেউই। অবশ্য পরস্পরের ওপর সমীহ, সম্ভ্রম রয়েছে তাদের।

দু’জনের ব্যক্তিগত জীবন অবশ্য একে অপরের উল্টো। মেসি দীর্ঘ দিন প্রেম করে বিয়ে করেছেন ছোটবেলার বান্ধবীকে। তিন সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার। অন্য কোনও নারীর সঙ্গে তার নাম জড়ায়নি। চুলের স্টাইল, জামাকাপড়, কোনওটাই নজরকাড়া নয়। 

রোনালদো সেখানে অনেক বেশি রঙিন। ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সঙ্গিনী বদলেছেন একাধিক বার। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেও চুলের পরিচর্যা করতে ভোলেন না। গোল করলেও কারও সাহস নেই রোনালদোর মাথার চুলে হাত দেওয়ার। তার পোশাক গোটা বিশ্বের কাছে আদর্শ। 

তবে একটা ব্যাপারে মিল রয়েছে। দু’জনের কেউই রাজনীতি, কূটনীতিতে জড়াননি। বরাবর এই দুটোকে আলাদা রেখেছেন। 

যেটা দেখা গেছে নেইমারের মধ্যে। সম্প্রতি ব্রাজিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেয়ার বলসোনারোর হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন এই তারকা। মেসি-রোনালদোর ক্ষেত্রে যা ভাবাই যায় না।

এই দুই ফুটবলারের ওপর নির্ভর করে বিশ্বের অর্থনীতি। কে ভালো খেলছেন, কে খারাপ খেলছেন- তার ওপরেই ওঠানামা করে শেয়ার বাজারের দর। বিশ্বের নামীদামী সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর তারা। একটা সামান্য ভুলচুক গোটা সংস্থার ভবিষ্যৎ ধসিয়ে দিতে পারে। তারা যে ক্লাবে খেলেন, সেই ক্লাবের শেয়ার দর হয় আকাশচড়া। লাইন দিয়ে আসতে থাকে স্পনসর। মেসি-রোনালদোকে দেখেই সেই ক্লাবকে ভালোবাসতে শুরু করেন সাধারণ ফুটবলপ্রেমীরা। আর এই কারণেই নিজেদের ক্লাবে মেসি-রোনালদোর প্রতিপত্তি থাকে বেশি। তা না হলে কী মেসির বিরুদ্ধে মুখ খোলায় চাকরি খোয়াতে হয় বার্সেলোনার এক কর্মীকে?

তবে এবার দু’জনেরই ফুটবল জীবন পৌঁছে গেছে সায়াহ্নে। ক্লাবস্তরের সেই প্রতিপত্তি কবেই উবে গেছে। পিএসজিতে খেললেও মেসি এখন আর দলের প্রধান ফুটবলার নন। আর নিজ ক্লাবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় রোনালদোর তো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ভবিষ্যৎ-ই অনিশ্চিত। 

আবার জীবনের শেষ পর্বে এসেও কোনও ফুটবলার যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু, এমনটাও দেখা যায়নি অতীতে। পেলে জীবনের সেরা ছন্দে থাকতেই ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন। ম্যারাডোনার ফুটবল জীবন শেষ হয়েছে কোকেন নিয়ে নির্বাসিত হয়ে, এক বিষাক্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

তবে এখানেই আলাদা হতে পারেন মেসি ও রোনালদো। হয়ে উঠতে পারেন অনন্য উদাহরণ। ফুটবলজীবনের শেষ প্রান্তে এসে বিশ্বকাপ হাতে তোলার সৌভাগ্য সবার হয় না। মেসি-রোনালদো কী পারবেন সেই সৌভাগ্য বয়ে আনতে? উত্তরটা পাওয়া যাবে ১৮ ডিসেম্বর। সেই পর্যন্ত সঙ্গেই থাকুন।

কিউএনবি/অনিমা/১৮ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৫১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit