সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১:২৬ অপরাহ্ন

ফায়াজুন্নেসা চৌধুরীর বিশ্লেষণধর্মী লেখা : ইতিবাচক চর্চা

ফায়াজুন্নেসা চৌধুরী, শিক্ষক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
  • Update Time : সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২
  • ৫১৪ Time View

 ইতিবাচক চর্চা

———————-

বড় বড় এচিভমেন্টের বাইরেও ব্যক্তিগত ক্রিয়েটিভ কাজের, ঘরের যতো পরিশ্রমের কাজের, অফিসের রেগুলার রুটিন কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজের বা ইভেন্ট রিলেটেড দায়িত্বের… এমন হাজারটা কাজ সফলভাবে সম্পাদন করলেও সবসময় কেউ আপনাকে এপ্রিশিয়েট কিংবা প্রশংসা করার ঝুড়ি হাতে বসে থাকবে না।

তাই প্রত্যেক সফল কাজের পর নিজেকেই নিজে মনে মনে অভিবাদন জানাতে হবে। কারো আশায় এই প্রাপ্য এপ্রিশিয়েশন জমিয়ে রাখলে হতাশার শ্বাস ফেলতে হবে দিনে কমপক্ষে ৩২ টা।

ছোট্ট একটা সাধারণ কাজ থেকে শুরু করে বড় বড় কাজ, সব কাজেই এই এপ্রিশিয়েশন জানাবার প্র্যকটিস জীবনে কখনো একঘেয়েমী প্রবেশ করতে দেয় না। এটা একধরনের সেল্ফ রিচার্জের নিঞ্জা টেকনিক ও বলা যায়।

আপনি যদি নতুন মা হন, বাচ্চার ডায়াপারটাও সঠিক নিয়মে চেইঞ্জ করতে পারলে আপনি নিজেকে নিজে এপ্রিশিয়েট করতে পারেন, কারন এই কাজ আপনি আগে কখনো করেন নাই। প্রতিবেলার খাওয়া দাওয়া শেষে থালাবাসন ধুয়ে, ডাইনিং খালি করে, রান্নাঘর ক্লিন করে চকঁচকঁ করতে দেখলেও আমি নিজেকে নিজে থ্যাক্স দিতে থাকি।

মনে মনে এপ্রিশিয়েশন জানাই।কজনই বা গোছানো জীবনে অভ্যস্ত হতে পারে? কত মানুষের জীবনে দেখেছি চার বেলা খাওয়া আর অন্যদের খাওয়ানোকেই মৌলিক কাজে পরিনত করে ফেলে। এই ছকের বাইরে তাদের জীবনে নাই কোনো বিশেষ চর্চা কিংবা সৌন্দর্য্যবোধ।

আবার কতো চাকুরীজীবী ব্যস্ত নারীকেও আমি দেখেছি অফিস শেষে বাড়ী ফিরে নিজের বারান্দা আর ছাদের গাছপালার চর্চা করতে, বাচ্চাদের গল্পের বই পড়ে শোনাতে। এই চর্চাগুলা সে না করলেও পারে। বাইরের কাজ শেষে ঘরে ফিরে সে রান্নাবান্না করে খাওয়া শেষ করে ল্যটকা দিয়ে শুয়ে থাকতেই পারে, তাতেই তার শারীরিক রেস্ট হবে। কিন্তু তবুও সে নতুন উদ্যমে বাসায় ফিরেও বাগানের পরিচর্যা করে কিংবা বাড়ীর অন্য সদস্যদের দরকারী কাজে আবারও বাইরে যায়, এগুলা মূলত তাকে মানসিক শান্তি দেয়। এক প্রকার Mental Satisfaction হয় তার। সৃষ্টিশীলতার চর্চা, জীবন কে মূলত গতিময় আর অর্থবহ করে।

কত মানুষ প্রচুর ফাকাঁ আর আবাদি জায়গার মালিক হওয়া সত্ত্বেও উদ্যোগ নিয়ে বাগান করে না। অনেক জমিজমা, স্থাবর সম্পত্তির কর্ণধার হয়েও নিজেদের বসোবাসের জায়গা টা সাধ্যের মধ্যে সব উপকরন দিয়ে আরও পাচঁ ছয়টা মানুষ নিয়ে থাকার মতো উপোযোগী করে গুছিয়ে রাখে না। একে অন্যকে ঠেলতে থাকে।

আবার কেউ এক ইঞ্চি জায়গা পেলেও কারো অপেক্ষা না করে সেখানে একটা ধনেপাতার বীজ বপন করে। মূলত ঘরে কিংবা বাইরে নিজের কর্মদক্ষতা আর সৃষ্টিশীলতা দিয়েই নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হয়। কেনোনা… জীবন এক ক্রমাগত ইতিবাচক চর্চার নাম..। অলসতা, অনিয়মের দিবসযাপন, শোয়া আর খাওয়া কিংবা সময় ক্ষেপনকারী অর্থহীন কর্মচর্চার নাম কখনো জীবন নয়।

 

 

লেখিকাঃ ফায়াজুন্নেসা চৌধুরী, শিক্ষক, ডিপার্টমেন্টে অফ সিএসই, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।

 

 

 

 

কিউএনবি/বিপুল/০৭.১১.২০২২/সকাল ১১.৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit