কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আমিনুর রশীদ চৌধুরী রুমন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ।
Update Time :
শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৭৭
Time View
আমিনুর রশীদ চৌধুরী রুমন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে আজ শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চা শ্রমিকদের কাছ থেকে স্বর্ণের চুড়ি উপহার পেয়েছিলেন জানিয়ে এই ঘটনা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আপনারা গণভবনে আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উপহার নিয়ে এসেছিলেন। সেই উপহার এখনও আমি হাতে পরে বসে আছি। আমি কিন্তু ভুলিনি।
আমার কাছে এটা হচ্ছে সব থেকে অমূল্য সম্পদ। চা-শ্রমিক ভায়েরা চার আনা আট আনা করে জমিয়ে আমাকে এই উপহার দিয়েছেন। এত বড় সম্মান, এতবড় উপহার আমি আর কখনও পাইনি চা শ্রমিক সোনা মনি বলেন, আমি আপনার ওপর খুশি আছি। আগে ১২৯ টাকা পেতাম এখন ১৭০ টাকা পাই মা। আমাদের কোনো অভাব নাই। আপনি সব করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের একটা সুবিধা করিয়া দিবেন যাতে পেট ভরিয়া খেতে পারি। এসময় তিনি বাগানের স্কুলগুলো সরকারি করার দাবি জানান।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা নাগরিকত্ব দিয়েছেন। আমি সবাইকে ঘর করে দেব। ছেলেমেয়ে নিয়ে যাতে ভালোভাবে থাকতে পারেন সেটা করে দেব। চা শ্রমিক রীতা পানিকা প্রথমে চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান।
তিনি মজুরি বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এসময় অশ্রুসিক্ত নয়নে রীতা পানিকা বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আমরা সবসময় আপনার কথা ভেবে এসেছি এবং ভেবে যাব। আমরা জানি, আপনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। সেই স্বাধীনতা নিয়ে আমরা বেঁচে আছি। আমরা চাই আপনার বাবার মতো আপনিও কোনোদিন আমাদের কাছ থেকে সরে যাবেন না। আপনি আমাদের কাছে চিরজীবী থাকবেন। আমরা চা শ্রমিকরা যে কষ্টে আছি সেটা আপনি দেখেছেন এজন্য আপনাকে কোটি কোটি ধন্যবাদ। আপনাকে আমাদের কমলগঞ্জ উপজেলায় এক কাপ চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। আপনি আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আপনাকে আমরা দেখছি, এটা যে আমাদের জন্য কত আনন্দের সেটা মুখের ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
এসময় রীতা পানিকা কোনো ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা চান। প্রধানমন্ত্রী আবেগে অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, আপনারা ক্ষমা চাইবেন কেন। আপনারা যেটা করেছেন সেটা বাঁচার তাগিদে করেছেন। আমি সেটা বুঝি। এজন্য আগে আমি মালিকদের সঙ্গে বসেছি, এখন আপনাদের সঙ্গে বসলাম। পরে প্রধানমন্ত্রী চা বাগানের ঐতিহাসিক ঝুমুর নাগ দেখেন এবং প্রশংসা করেন। এসময় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মাননীয় সভাপতি, মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.মো.আব্দুস শহীদ এম.পি। মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ এম.পি , মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিছবাহর রহমান প্রমুখ।
এসময়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ,যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা সহ প্রশাসনের কমকর্তাগন,সাংবাদিকবৃন্দ, চা বাগানের শ্রমিকগন সহ আরো অনেকেই। উল্লেখ্য, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা ১৯ দিন আন্দোলনের পর গত ২৮ আগস্ট চা-বাগানে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা।তার আগে ২৭ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাগান মালিকদের সঙ্গে বসে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন।এতে চা-শ্রমিকদের মাঝে খুশির ঢেউ বয়ে যায় সেদিন। বাগানে বাগানে দিনভর ছিল আনন্দ-উচ্ছ্বাস। শ্রমিকদের মাঝে ফিরে আসে প্রাণচাঞ্চল্য। অনেক বাগানে আনন্দ মিছিল করেছেন শ্রমিকরা।
কিউএনবি/আয়শা/০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:৫৮