খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলার আবুড়া গ্রামে প্রভাব বিস্তার নিয়ে গত ৯ আগস্ট আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে রমিজ খানের পুত্র ওহেদ খান নিহত হয়। আহত হয় আরো প্রায় ২০ জন। এই নিয়ে উভয় পক্ষে ৫টি মামলা হয়েছে। মামলায় দুই শতাধিক আসামী করা হয়েছে। নাম পরিচয় অজ্ঞাত রাখা হয়েছে আরো প্রায় শতাধিক আসামীর। এখন এলাকায় গ্রেফতার আতঙ্ক চলছে। আবুড়া ও সুজনদোয়াল গ্রাম দুইটি প্রায় পুরুষ শূণ্য হয়ে পরেছে। অপ্রীতিকর কর্মকান্ড এড়াতে এলাকায় সার্বক্ষনিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার পরেও বাড়িতে বাড়িতে চলছে লুট, চুরি ও অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলে দখল করা হচ্ছে ভিটি। ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ। এই পর্যন্ত তিন জন আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে তাদের।
হত্যা মামলার আসামী আবুড়া গ্রামের মোছলেম মাদবরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বপরিবারে তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পাকা বাড়ির প্রধান ফটক অক্ষত রয়েছে। তবে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে জানালা ও পিছনের দরজা। লুট করে নিয়ে গেছে আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও ধান-পাট। ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে রান্না করার চুলাও। চিকন্দী বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলে সেখানে নতুন করে ঘর তোলার পায়তারা করছে আর্শেদ মাদবর নামে এক ব্যক্তি। ইসমাইল মাদবর ও ওসমান গনি সরদার হত্যা মামলার আসামী মোসলেম মাদবরের ভাই ও শ্যালক হওয়ায় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। সুজনদোয়াল গ্রামের আবদিন খানদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তারা ৬ ভাই সেই বাড়িতে বসবাস করতেন।
হত্যাকান্ড ঘটার পর থেকেই তারা এলাকা ছেড়ে স্বপরিবারে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের পাকা ঘরের আসবাবপত্র সহ দরজা-জানালও খুলে নিয়েছে প্রতিপক্ষ। পাশেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দেলোয়ার বেপারী ঘর। ভাংচুর ও লুট হয়েছে আলমাছ খান, মন্নাফ সহ অনেক বাড়িঘর। শেষ পর্যন্ত ঘরের বেড়াও খুলে নিতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা জানায়, বিশেষ করে হত্যা মামলায় যারা আসামী পরেছে তারাই বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রথমে তাদের বাড়িতে ভাংচুর করে দামি দামি জিনিসপত্র লুট করেছে। তার পরে দরজা জানানা খুলে নিয়েছে। এখন দেখি ঘরের বেড়াও খুলে নেয়। একসময় হয়তো ঘরও থাকবে না। চিকন্দী বাজারে একটা দোকান ঘর ভেঙ্গে ফেলেছে। প্রতিপক্ষ এখন অন্য জায়গায় ঘরের চাল, বেড়া, দরজা তৈরী করতেছে। এক রাতে সেখানে ঘর উঠিয়ে ভিটি দখল করে নিবে। এই ধরণের ঘটনাই ঘটছে এলাকায়।
পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে অনেকে স্বপরিবারে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। সেই সকল বাড়ি পুলিশের পাহাড়া দেওয়া সম্ভব না। তার পরেও ১০-১৫ জন পুলিশ সার্বক্ষণিক সেখানে ডিউটি করতেছে। এক মহিলার বাড়িতে চুরি হয়েছে এমন শুনে তাকে ডেকে এনে মামলা নিয়েছি। যার যার বাড়ি সে সে পাহাড়া না দিলে পুলিশের কি করার আছে। মামলার তদন্ত চলছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেছি। এই নিয়ে পুলিশের ঘুম নাই। ছবির ক্যাপশন-হত্যা মামলার আসামীদের লুট হওয়া বাড়ি। ছবির ক্যাপশন-হত্যা মামলার আত্মীয়ের দোকানঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/৩০ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:৫০