খোরশেদ আলম বাবুল, শরীয়তপুর তিনিধি : ইতালী ও লন্ডন প্রবাসী সহোদরের টাকা আত্মসাতের দায়ে দ্বিতীয় মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন মোখলেছুর রহমান (মিলু মুন্সী) নামের এক ব্যক্তি। তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলার কোয়ারপুর গ্রামের মৃৃত শামসুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে।
আত্মীয়তার সুবাদে ব্যবসার চুক্তিতে তিনি বিভিন্ন সময় প্রবাসী সহোদরের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে তিনি গৃহীত টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ প্রশাসন ও আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করেন প্রবাসীদের পিতা মো. আমির হোসেন। আদালতে তার অর্থ দন্ড ও সশ্রম কারাদন্ড হয়। এক পর্যায়ে মিলু মুন্সী আংশিক টাকার বিনিময়ে তার বসত বড়ি পাওনাদারদের নামে দলিল করে দিয়ে সেই বাড়িতেই ভাড়া থাকেন। এবং অবশিষ্ট টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করার অঙ্গীকার করে প্রথম পর্যায় হাজতবাস থেকে মুক্তি পায়। পরবর্তীতে তিনি অঙ্গীকারের শর্ত ভংগ করায় পুনরায় হাজতে গিয়েছেন।
প্রবাসীদের পরিবার সূত্রে জানাগেছে, শরীয়তপুর পৌরসভার নীলকান্দি গ্রামের মো. আমির হোসেন স্বপরিবারে ইতালী প্রবাসে থাকতেন। সেখানে তিনি ও তার ছেলে মোকাররম হোসেন এমিল এবং এনায়েত হোসেন ব্যবসা করতেন। একপর্যায়ে মিলু মুন্সীর ছেলে শুভ মুন্সী কৃষি ভিসায় ইতালী যায়। সেখানে ভালো কোন কাজ না পেয়ে খালাতো ভগ্নিপতি এনায়েতের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে এনায়েতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি শুরু করে। তখন ভগ্নিপতি এনায়েত ও তার বড় ভাই এমিলকে শুভ মুন্সী বুঝাতে সক্ষম হয় যে, ‘তার পিতার ব্যবসা সংক্রান্তে অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। মূলধনের অভাবে ব্যবসায় প্রসার ঘটাতে পারছে না’। এদিক থেকে মোবাইল ফোনে প্রবাসী এমিল ও এনায়েতকে শুভর পিতা মিলু মুন্সী বুঝাতে থাকে। তখন প্রবাসী সহোদর ব্যবসার চুক্তিতে মিলু মুন্সীকে ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা প্রদান করেন।
এদিকে মিলু মুন্সী সেই টাকা ব্যবসায় না খাটিয়ে নিজের বাড়ি, মরহুম পিতা-মাতার নামে স্কুল প্রতিষ্ঠা সহ ভোগ বিলাসে মেতে উঠেন। এতো টাকা বিনিয়োগ করেও যখন কোন ব্যবসা পায়না প্রবাসী সহোদর তখন তারা মিলু মুন্সীর ব্যবসার খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন। পরে মিলু মুন্সীর কাছে টাকার হিসেব চান তারা। টাকার হিসেব না দিয়ে মিলু মুন্সী তালবাহানা করতে থাকে। বিষয়টি এক পর্যায়ে প্রবাসীদের পিতা আমির হোসেন জানতে পারেন। কোন উপায়ান্ত না দেখে পুলিশ প্রশান ও আদালতের আশ্রয় নেন প্রবাসীদের পিতা আমির হোসেন।
আমির হোসেন বলেন, আত্মীয় হয়েও মিলু মুন্সী আমাকে না জানিয়ে আমার ছেলেদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অন্যায় করেছে। তারপর আবার টাকা আত্মসাৎ করেছে। এক পর্যায়ে আমি আইন ও আদালতে যাই। আদালত মিলু মুন্সীকে দেড় কোটি টাকা প্রদানে আদেশসহ এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। পরে আপোষের শর্তে জামিনে এসে ৮০ লাখ টাকার বিনিময়ে তার বসত বাড়ি লিখে দেয়। এবং সেই বাড়িতেই মিলু মুন্সী ভাড়া থাকে। অবশিষ্ট টাকা প্রতি মাসে ৫ লাখ করে দিবে মর্মে অঙ্গীকার করে।
পরে সে কোন টাকাও দেয়নি এবং বাড়ি বিক্রি অস্বীকার করে। আমি পুনরায় আদালতে মামলা করেছি। আদালত পূর্বের আদেশ বহাল রেখেছেন। এবার নিন্ম আদালতে হাজির হতে গেলে তাকে হাজতে পাঠিয়ে দেয় আদালত। এক মাসের বেশী সময় ধরে মিলু মুন্সী সশ্রম হাজত বাসে রয়েছে। সমুদয় টাকা পরিশোধ না করলে তার প্রতি কোন সহানুভুতি দেখানো হবে না।
কিউএনবি/অনিমা/১৭ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:৪৯