বন্ধুত্ব
——-
কোথাও কোন একদিন পড়েছিলাম ভাগ্যবানের বন্ধু হয়, আর স্বার্থপরেরা আফসোস করেই যায়! কথাটা কতটুকু খাঁটি আমার জানা নেই।
আমি সমাজে খুব বুদ্ধিমান আর জ্ঞানীর তকমা গায়ে লাগানো মানুষকেও বিশেষ সময়ে বলতে শুনেছি, জীবনে বহু মানুষের সাথে মিশেছি, বহুদেশ ঘুরেছি, বহু মানুষকে কাছ থেকে দেখেছি, আফসোস একজনও ভালো মানুষ দেখলাম না! একজনও প্রকৃত বন্ধু পেলাম না! সবাই প্রচন্ড আত্মকেন্দ্রিক আর স্বার্থপর!
আসলে কি তাই?
আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বাস্তবতা হলো যে স্বার্থপর সে নিজে কখনো কারো ভালো বন্ধু হতে পারবে না। অন্যকেও নিজের বন্ধু ভাবা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। সে সবাইকে তার মতোই চৌকষ আর স্বার্থপর দেখে। প্রকৃতপক্ষে রক্তের সম্পর্কের বাইরে সময়ের প্রয়োজনে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ি আমরা। সেই সম্পর্ক সময়ের সাথে সাথে হয়তো খানিকটা ফিকেও হয়ে যায়। তবে যদি সম্পর্কে সততা আর হৃদয়ের সংযোগ থাকে তবে সেই সম্পর্ক ফিকে হলেও প্রাণ থাকে তাতে।
জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ের বন্ধু যার সাথে দিনের অধিকাংশ সময় একসাথে অতিবাহিত করেও কর্মজীবনে এসে সেই সম্পর্ককে অনেক মানুষ ধরে রাখে না। পদমর্যাদা, অর্থবিত্ত, ব্যক্তিগত অর্জনের লালসায় এক অলিখিত প্রতিযোগিতা শুরু করে প্রিয় মানুষের সাথেই।
হয়ত ব্যস্ততা নামক অজুহাতে একে অপরকে এড়িয়েও চলা শুরু করে। এভাবেই একসময় বহুদূরে চলে যায় একে অন্যের থেকে, হারিয়ে যায় বন্ধুত্ব।
আবার কিছু কিছু মানুষ থাকে তাদেরকে মনে রাখতে হয়না,তারা নিজেরাই অন্যের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। তারা সম্পর্ক কে আগলে রাখে, লালন করে বিপদে না ডাকলেও হাজির হয়, দীর্ঘদিন যোগাযোগ নাই তবুও হঠাৎ করেই সুখ দুঃখের দিনে পাশে দাঁড়িয়ে যায়।
আসলে এই যে, যে কোন অবস্থাতেই পাশে দাঁড়িয়ে যাওয়া মানুষটিই কিন্তু আপনার বন্ধু। সে সম্পর্কে আপনার যেই হোন।
আসলে বন্ধু বা শুভাকাঙ্ক্ষী আপনা আপনি তৈরি হয়না। তৈরী করতে হয় আপন শক্তিতে আর সে বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতেও আপন যোগ্যতাই প্রয়োজন।
আসুন বন্ধুত্ব দিবসে বন্ধুত্ব গড়ার চেয়েও টিকিয়ে রাখার ব্রত নিই। Happy friendship day.
লেখিকাঃ গুলশান আরা ইসলাম সাহিত্য চর্চা করেন নিয়মিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর লেখালেখি ব্যাপক জনপ্রিয়। উপরোক্ত পোস্টটি তাঁর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে সংগৃহিত।
কিউএনবি/বিপুল/৩১.০৭.২০২২/ রাত ১১.৩৭