বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ১৯ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার নাছরীন নবী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা হাসিনা আক্তারকে অবশেষে ওই স্কুল ছাড়তে হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই শিক্ষিককে অন্য কোনো বিদ্যালয়ের শূণ্য পদে সাময়িকভাবে সংযুক্তির জন্য বলা হয়।
ওই কর্মকর্তার চিঠিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ সংক্রান্ত অনুমতির জন্য কাগজপত্র পাঠাতে বলা হয়। ওই শিক্ষক দীর্ঘ সময় একই বিদ্যালয়ে থাকায় এলাকাবাসীর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বদলি বন্ধ থাকায় অন্য বিদ্যালয়ে সাময়িক সংযুক্তির কথা বলা হয়। এর আগে দীর্ঘ এই সময়টায় একই বিদ্যালয়ে থেকে ওই শিক্ষক ‘মানুষকে মানুষ মনে করেন না বলে’ অভিযোগ তুলে তাঁকে বদলির দাবি তুলেছেন শিক্ষা কমিটির সকল সদস্য। বদলির একই দাবি করেছেন ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম আব্দুল্লাহ মনসুর। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে দেওয়া এক আবেদনে তিনি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মেও অভিযোগ আনেন।
তবে প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এক অভিভাবকের কাছ থেকে আট ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, বরাদ্দ না পেলেও টাকা আত্মসাতের মতো অবাস্তব অভিযোগ আনা হয়েছে। মূলত পছন্দের একজন প্রধান শিক্ষককে এখানে পদায়ন করতে এটা করা হয়েছে। এ কথাটা আমাকে আগে বললে নিজেই চলে যেতাম।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে নাছরীন নবী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম আব্দুল্লাহ মনসুর অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দ তছনছ করেছেন প্রধান শিক্ষক। এছাড়া পরীক্ষায় সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়া তিনি এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এ বিষয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গত ২৩ মে তদন্ত করেন।
এদিকে গত ২২ মে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তারের বিষয়ে অভিযোগ সম্পর্কে পূর্ব নির্ধারিত আলোচনা হয়। সভার রেজুলেশন অনুযায়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও, বর্তমানে বদলি) রুমানা আক্তারের সভাপতিত্বে ওই সভায় পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন, নাছরিন শফিক আলেয়া, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে হাসিনা আক্তারক বদলির ‘সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হয় বলে রেজুলেশনে উল্লেখ রয়েছে।