শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

যুবদল নেতাকে হত্যার গুজব : নারী পোশাককর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২ মে, ২০২২
  • ১৪৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সমাজচ্যুত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝলকি খাতুন (৩৬) নামে পোশাক কারখানার (গার্মেন্ট) এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে যুবদল নেতা ও তাঁর লোকজন। নিহত ঝলকি উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম গুয়াডহরী গ্রামের ভ্যানচালক জিল্লুর রহমান মোহনের স্ত্রী। একই ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীসহ উভয় পক্ষের আটজন আহত হয়। রবিবার রাত ১০টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝলকির মৃত্যু হয়।

এর আগে রবিবার দুপুরের দিকে ঝলকিসহ তাঁর পরিবারের লোকজনকে নিজ বাড়িতে পিটিয়ে আহত করে যুবদল নেতা ও তাঁর লোকজন। থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার জামগড়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় প্রায় ১৮ বছর ধরে চাকরি করেন ঝলকি খাতুন। তাঁর স্বামী জিল্লুর রহমান প্রতিবন্ধী ছেলে মিলন রহমানকে নিয়ে বাড়িতে থেকে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। রবিবার দুপুরের দিকে ঝলকি খাতুন ছুটি নিয়ে ঢাকা কর্মস্থল থেকে স্বামীর বাড়িতে আসে।

এদিকে একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে গোসাইবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক রুহুল আমীন রতনের সমাজভুক্ত জিল্লুর রহমান ও তাঁর পরিবারের লোকজন। প্রায় তিন মাস আগে জিল্লুর রহমান প্রতিবেশী এক বিধবাকে যৌন নির্যাতন করেন। এ ঘটনায় ওই নারী সমাজপতি যুবদল নেতা রুহুল আমিনের কাছে বিচারপ্রার্থী হয়। ফলে জিল্লুর রহমান ও তাঁর পরিবারকে সমাজচ্যুত করেন যুবদল নেতা। এতে রুহুল আমিনের ওপর ক্ষুব্ধ হন জিল্লুর রহমান ও তাঁর পরিবার।

রবিবার দুপুরের দিকে বাড়ির সীমনা নিয়ে প্রতিবেশী শাহজাহান আলীর সাথে বিরোধ মীমাংসার জন্য জিল্লুর রহমানের বাড়িতে যুবদল নেতা রুহুল আমিনের নেতৃত্বে বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে কথাকাটাকাটির জের ধরে রুহুল আমিনের পেটে ছুরিকাঘাতে করে জিল্লুর রহমান। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে গুজব ছড়িয়ে পড়ে রুহুল আমিন মারা গেছে। এতে রুহুল আমিনের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে জিল্লুর রহমান, তাঁর স্ত্রী ঝলকি খাতুন, ছেলে মিলন রহমান ও ছোট ভাই মিজানুর রহমানকে পিটিয়ে আহত করে। এ ছাড়া তাঁরা হামলা চালিয়ে জিল্লুর রহমানের বাড়িঘর ভাঙচুর করে।

একই সময় জিল্লুর রহমান ও তাঁর লোকজনের লাঠি ও ছুরির আঘাতে যুবদল নেতা রুহুল আমীন রতন, তাঁর স্ত্রী নাছিমা খাতুন, প্রতিবেশী লিটন ও সোহেল রানা আহত হয়। আহতদের ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে জিল্লুর রহমান, ঝলকি খাতুন, মিলন রহমান ও মিজানুর রহমানের অবস্থার অবনতি হলে তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাত ১০টার দিকে ঝলকি খাতুন মারা যায়। এ সংবাদ পাওয়ার পর থানা পুলিশ যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতন ও প্রতিবেশী লিটন মিয়াকে আটক করে। বর্তমানে তাঁরা পুলিশ পাহারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

যুবদল নেতা রুহুল আমিন রতন বলেন, প্রতিবেশী এক নারীকে যৌন নির্যাতন করায় জিল্লুর রহমান মোহনকে সমাজচ্যুত করা হয়ে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জিল্লর রহমান আমার পেটে ছুরি মেরে আহত করে। এ খবর পেয়ে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে জিল্লুর রহমান ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে। এর মধ্যে ঝলকি মারা গেছে। তবে ঝলকি খাতুনকে আমি কোনো প্রকার মারপিট করিনি।

ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝলকি খাতুন নামে একজন মারা গেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মৃতদেহ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২রা মে, ২০২২/১৮ বৈশাখ, ১৪২৯/দুপুর ১২:৫৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit