
ডেস্ক নিউজ : কভিড মহামারির টিকাদান কর্মসূচিতে বৈষম্য হওয়ার কথা বলছে বেসরকারি গবেষণা সংগঠন ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’। সরকারের দেওয়া কভিড টিকাদান কর্মসূচির তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তারা জানিয়েছে, টিকা সব থেকে বেশি পেয়েছে ঢাকা বিভাগের মানুষ, আর সব থেকে কম পেয়েছে ময়মনসিংহের মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত ‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’ আয়োজিত এক মূল্যায়ন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অতিমারির দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষের ওপর এবং এসডিজি সূচকগুলোর ওপর কী প্রভাব ফেলেছে তার মূল্যায়ন তুলে ধরতে এ সভার আয়োজন করে প্ল্যাটফর্মটি।
দেশের ৪০ জন গবেষকের সঙ্গে আলোচনা করে মূল্যায়নটি তৈরি করা হয়েছে। আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। স্বাগত বক্তব্য দেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধি ফাতেমা ইউসুফ। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এসডিজির এমন কোনো অভীষ্ট নেই যেখানে এই অতিমারির নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে প্রথাগতভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের ওপর এই প্রভাব অনেক বেশি। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু বলেন, অতিমারিতে জেন্ডার বৈষম্য অনেক বেড়েছে এবং সুশাসনের অভাব এই সমস্যাকে আরো বৃদ্ধি করেছে। দারিদ্র্য অনেকদিক থেকে নারীদের প্রভাবিত করে, বিশেষ করে যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাই আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা উচিত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী প্রধান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সাম্প্রতিক বছরে পরিবেশ ও জলবায়ুর জন্য বাজেটে বরাদ্দ অনেকখানি কমেছে। স্বাভাবিকভাবে অতিমারি চলাকালে সরকারের জন্য পরিবেশগত সমস্যাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। কারণ জলবায়ুু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই ব্যয় বহন করতে পারবে না। বেসরকারি সংস্থা নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন এসডিজির প্রভাবের একটি মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনা পরিচালনা করার জন্যও গুরুত্ব দেন। তিনি আরো বলেন, অতিমারি চলাকালে স্কুলে অনুপস্থিত থাকা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তাই এর জন্য বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন।
ঠাকুরগাঁও জেলা হরিজন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজু বাশফোর বলেন, হরিজন ও দলিত কোটা থাকা সত্ত্বেও তারা চাকরি পায় না। তাদের জন্য আলাদা ভাতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। অতিমারি চলাকালে অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে এবং বাল্যবিবাহের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য একবেলা খাদ্য প্রদান করা যেতে পারে। সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিস-এবিলিটির (সিএসআইডি) নির্বাহী পরিচালক, খন্দকার জহুরুল আলম জানান, অতিমারিতে ৪০ হাজারেরও বেশি প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী বলেন, প্রতিটি বিপর্যয়ের পর দেশের দুর্বলতাগুলো মোকাবেলা করতে এবং আরো ভালোভাবে দেশকে গড়ে তুলতে বর্তমান সংকটের শিক্ষাগুলো কাজে লাগাতে হবে।
কিউএনবি/আয়শা/১১ই মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১:০৯