বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ লুফে নিন: আমিরাতের উদ্যোক্তাদের প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২
  • ১২২ Time View

 

ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ লুফে নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিশেষ করে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, খাদ্যপণ্য, আইসিটি ও আইটিইএস খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে আমিরাতের উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও আকর্ষণীয় সুযোগগুলো লুফে নিন। বাংলাদেশকে আপনার ব্যবসার গন্তব্য বানান। আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত করছি, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধার স্থান।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের চেম্বার্স অব কমার্স এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে দুদেশের মধ্যে যৌথ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতে সমঝোতা স্মারক সই উপলক্ষে অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী দুবাই প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আবুধাবির সফরকালীন আবাসস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশে বিশ্বের সেরা গন্তব্য হিসেবে খুঁজে পান তার জন্য বাংলাদেশ উদ্যোক্তাদের নীতিগত এবং অবকাঠামোগত সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানগত সুবিধার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের আছে দুর্দান্ত ভূ-কৌশলগত অবস্থান। সব প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন রুটের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। এছাড়াও জনবহুল এবং ক্রমবর্ধমান দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থল রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার এবং এ অঞ্চলের আশপাশের বাজারগুলোতে উন্মুক্ত প্রবেশ সুবিধা রয়েছে। এ সুবিধাগুলো বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য এবং ভবিষ্যতের উৎপাদন এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

‘বাংলাদেশ ১৬৮ মিলিয়নের বেশি মানুষের অভ্যন্তরীণ বাজার অফার করছে। এই মানুষগুলো তরুণ, উদ্যোমী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী’ -যোগ করেন তিনি। সরকারপ্রধান বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যে শ্রমিক পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের শ্রমশক্তি কঠোর পরিশ্রমী, এ শ্রমশক্তি সাশ্রয়ী এবং তারা দ্রুত শিখতে পারে। সারা দেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধার সঙ্গে বাংলাদেশের সাড়ে ছয় লাখের বেশি পুরোপুরি দক্ষ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগ সম্ভবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলো বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, কৃষি খাতে উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ, উৎপাদনশীলতা এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ণ, শিল্পায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার-উদ্ভাবন-বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে জনগণের প্রযুক্তিগত কানেকটিভিটি বাড়ছে। আমাদের লক্ষ্য আমাদের উৎপাদনগুলোকে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে আরও মসৃণভাবে সংযুক্ত করা। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি। চামড়া, পরিবেশ বান্ধব পাট-পাটজাত পণ্য, খাদ্য এবং সর্বোপরি তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য প্রযুক্তি সেবা দিতেও বাংলাদেশ ভালো করছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। আমি এখানে আপনাদের উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, আসুন আমাদের স্বপ্ন এবং লক্ষ্যপূরণের যাত্রায় সঙ্গী হোন। এই করোনা মহামারিতেও বিশ্বের যে গুটিকয়েক অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমাদের স্বচ্ছ লক্ষ্য, বিচক্ষণ পরিকল্পনা, সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, কঠোর পরিশ্রমী মানুষের অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং উদ্যোমী উদ্যোক্তাদের কারণে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। উন্নয়নের বিস্ময় এখন বাংলাদেশ। সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ তার ৪১৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিকে শিগগির বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত করার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। অন্যদিকে আমিরাতের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেইয়োদি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ মোহামেদ আল মাজরোই বক্তব্য রাখেন। পরে দুদেশের মধ্যে একটি যৌথ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতে এফবিসিসিআই এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত চেম্বার্স অ্যান্ড কমার্সের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এবং আমিরাত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান মাজরোই সমঝোতা স্মারকে সই করেন। অনুষ্ঠানে দুদেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্ভবনা তুলে ধরে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে গত সোমবার (৭ মার্চ) বিকেলে আমিরাতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন শেখ হাসিনার। ৬ দিনের এ সফর শেষে আগামী ১২ মার্চ দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সফরের পঞ্চম দিন শুক্রবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত সংবর্ধনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠান থেকে ভার্চুয়ালি তিনি রাশ আল খাইমাতে বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১১ই মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:২৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit