শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ, ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে কঠোর মুদ্রানীতির কবলে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি না মিললেও বেড়ে গেছে ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদের হার। এতে কমছে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের জুলাইয়ে যেখানে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ; এক বছর পর নেমেছে ৬.৫২ শতাংশে। তা আরও কমে আগস্ট শেষে হয়েছে ৬.৩৫ শতাংশ। যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এমন ঋণ ধারায় বিনিয়োগের খরায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সিনিয়র সভাপতি রাজীব এইচ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা স্থানীয়রা আস্থা পাচ্ছি না, বিদেশিরাও আস্থা পাচ্ছে না। এজন্য একটি স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন। স্থিতিশীল ব্যাংকিং নীতি প্রয়োজন। ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতি এমন, অনেক ব্যাংক বর্তমানে ঋণ দিচ্ছে না। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করে বসে আছে, নিরাপদ রিটার্ন নিশ্চিত হওয়ার কারণে। তারা জানে ১২ শতাংশ রিটার্ন পাবেন, তাই তারা শিল্প খাতের দিকে বিনিয়োগ করছে না।’
 
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমার বিপরীতে প্রতি তিন মাসে ২০ শতাংশের বেশি করে বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। যা গত জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকায়। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তা ছাড়িয়ে যেতে পারে ৬ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এমন শঙ্কা জানিয়ে খেলাপির ভারে নুইয়ে পড়া দেশের ব্যাংকখাতকে টেনে তুলতে ঋণের বিপরীতে থাকা সম্পত্তি স্ব-স্ব ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে নিতে কঠোর হতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘সুদের হার প্রতিনিয়ত প্রযোজ্য হচ্ছে। তাই আগামী তিন মাসে যদি কোনো খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করে, শুধু সুদ আরোপের কারণে তাদের ঋণের পরিমাণ আরও ২০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তাদের ক্ষেত্রে যত প্রকার আইনি পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব, তা নিতে হবে।’
 
এক্ষেত্রে খেলাপিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘টপ ম্যানেজমেন্ট-ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের অনুমোদন ছাড়া নিচের লেভেলের কর্মকর্তারা ঋণ দিতে পারে না। যতক্ষণ টাকা ফেরত না দেবে, ততক্ষণ তাদের জেলে থাকার কথা। তবে ফাঁকফোকর থাকায় যে কেউ তা ব্যবহার করে বের হয়ে যায়।’
 
তবে খেলাপি আদায় ও বিনিয়োগ বাড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছার অভাব দেখছেন না অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে না, এমন মত তাদের। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, ‘এটি ক্রমাগতভাবে ব্যাংকগুলোর কার্যক্ষমতাকে সংকুচিত করছে। এই সংকুচিত অবস্থায় ব্যাংক তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারবে না। সময়ভিত্তিক একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।’
 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত এক বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৭ কোটি টাকা।

 

 

কিউএনবি/রাজ/১২ অক্টোবর ২০২৫/দুপুর ১২:৫৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit