রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানাধীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার হরিজন পল্লীতে এক সংখ্যালঘু হরিজন পরিবারের কন্যার ওপর উত্যক্ত করা, এসিড নিক্ষেপের হুমকি দেওয়া এবং তাদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় আজ ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা শ্রী জনি কুমার মতিহার থানায় একটি এজাহার (লিখিত অভিযোগ) দায়ের করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, শ্রী জনি কুমারের ১৭ বছর বয়সী কন্যা রিমিতা রায়, যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী মো. রবিউল ইসলাম আশিক (২২) দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলছাত্রীকে রাস্তায় উত্যক্ত করে আসছিলেন এবং প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। ছাত্রীটি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে অভিযুক্ত আশিক তার মুখে এসিড মারার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী পিতা আরও জানান, অভিযুক্ত আশিক নিজেকে ছাত্রদলের কর্মী এবং বিএনপি পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে হুমকি দেন যে, তার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হলে কিছুই করা যাবে না। হুমকির পাশাপাশি আশিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা পিতা মো. জাহের আলী ও ভাই মো. রুবেল স্থানীয়ভাবে গায়ের জোর দেখাতে থাকেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয় যে, গত ২৯ ডিসেম্বর তারিখ রাতে তাদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এ ঘটনার পর জনি কুমার ও তার পরিবার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো হলে মতিহার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলের আলামত সংগ্রহ করে।
পরবর্তীতে, মেয়েটির নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ঢাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রি-টেস্ট পরীক্ষার জন্য তাকে আবার রাজশাহী আনতে হয়। এই সুযোগে অভিযুক্ত আশিক পুনরায় উত্যক্ত করতে শুরু করেন। দুর্গাপূজার সময় প্রতিমা বিসর্জনের দিনও আশিক মদ্যপ অবস্থায় পরিবারটির পিছু নেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ভুক্তভোগী জনি কুমার জানান, স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি অবশেষে আইনি সুরক্ষার জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ (এজাহার) দায়ের করতে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়ে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ মো আব্দুল মালেক জানান, অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৫ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:২২