বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন

খাওয়ার আগে নাকি পরে, ওজন কমাতে কখন শসা খাবেন?

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৮ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : শসা মুখে দিলেই যেন এক ধরনের সতেজতার ঝাপটা আসে। পানিতে ভরপুর এই সবজি গরমকালের জন্য দারুণ একটি স্ন্যাক। এটি শুধু শরীর ঠাণ্ডা-ই রাখে না, বরং পেট ভরায় কিন্তু অস্বস্তিকরভাবে ফাঁপা ফাঁপা অনুভূতি সৃষ্টি করে না। সালাদে কেটে, লবণ ছিটিয়ে, কিংবা স্মুদি বা ডিটক্স ড্রিঙ্কে মিশিয়েও খাওয়া যায় এই সবজি।

শসা
শসায় পানিতে পরিপূর্ণ থাকলেও এতে রয়েছে ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং কিউকারবিটাসিন নামের উদ্ভিজ্জ যৌগ, যার প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। শসা শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখে, হজমে সহায়তা করে এবং কম ক্যালরিতে পেট ভরানোর মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

এক কাপ কাটা শসায় মাত্র ১৬ ক্যালরি থাকে, যা যেকোনো ডায়েটে সংকোচ ছাড়াই যোগ করা যায়। তবে এর স্বাস্থ্যগুণ কেবল ক্যালরি কম থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—কখন খাচ্ছেন, সেটিও পুষ্টি ব্যবহারে পার্থক্য আনতে পারে।

শসা সিলিকা খনিজে সমৃদ্ধ, যা সংযোগকারী টিস্যুকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। আর এতে থাকা ফাইবার মলত্যাগ নিয়মিত রাখতে সহায়তা করে। তাই এটি কেবল সতেজ স্ন্যাক নয়, বরং একটি সুষম খাদ্যাভ্যাসের জন্যও দুর্দান্ত সংযোজন।

খাবারের আগে খেলে কী হয়

খাবারের আগে শসা খাওয়া একটি প্রাকৃতিক ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের কৌশল হতে পারে। পানি ও ফাইবারের কারণে এটি পেট ভরিয়ে দেয়, ফলে মূল খাবারে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

পুষ্টিবিদরা সাধারণত খাবারের আগে শসা খাওয়ার পরামর্শ দেন, বিশেষত যদি আপনার লক্ষ্য ওজন নিয়ন্ত্রণ বা হজমের উন্নতি হয়। পানি ও ফাইবার দ্রুত পেট ভরায়, যা পরে খাওয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

আরো পড়ুন

নাক ডাকার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে মারণরোগ, ওষুধ ছাড়া স্বস্তি মিলবে যে উপায়ে শসায় থাকা অদ্রবণীয় ফাইবার মলকে ভর দেয় এবং হজম প্রক্রিয়া মসৃণ রাখে। ভারি খাবারের আগে খেলে এটি আপনার অন্ত্রকে ভালো হজমের জন্য প্রস্তুত করতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত পানি পাকস্থলীর আস্তরণকে হাইড্রেট করে, ফলে হজম এনজাইমগুলো ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

খাবারের পরে খেলে কী হয়

খাবারের পরে শসা খাওয়াও সমানভাবে উপকারী। বিশেষত যদি লক্ষ্য থাকে হজম উন্নত করা। এই ক্ষেত্রে শসা এক ধরনের সতেজ প্যালেট ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। এতে থাকা পানি মুখের বাকি স্বাদ মুছে দেয়, আর হালকা ক্ষারীয় গুণ মসলাদার বা তৈলাক্ত খাবারের এসিডিটি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

শসার ফাইবার খাবারকে হজমপথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে এবং খাবারের পর ফাঁপাভাব প্রতিরোধ করতে পারে। তবে, আপনার খাবার যদি বেশি স্টার্চ বা ফ্যাটসমৃদ্ধ হয়, তাহলে শসা খাওয়ার ফলে ক্যালরি শোষণ ধীর হবে না। তাই খাবার হালকা ও সতেজ হওয়া ভালো।

দু-এক দিন ব্যবহারেই তোয়ালে থেকে গন্ধ বের হয় কেন?

এ ছাড়া আপনার খাবারে যদি বেশি সোডিয়াম থাকে (যেমন রেস্তোরাঁর খাবার), তবে শসার পটাশিয়াম ইলেক্ট্রোলাইট তার ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং পানি জমে থাকা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

রাতের খাবারের পর শসার একটি টুকরা কম ক্যালরির ডেজার্টের বিকল্প হতে পারে, যা অতিরিক্ত চিনি বা ফ্যাট ছাড়াই মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে।

সকাল নাকি সন্ধ্যা, কখন খাবেন

রাতে অনেকক্ষণ না থাকার পর সকালে শসা খেলে শরীর পুনরায় হাইড্রেট হয়। সন্ধ্যায় এটি হালকা, কম ক্যালরির স্ন্যাক হিসেবে ভালো। এটি ভারী হজমের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় না।

যাদের এসিড রিফ্লাক্স আছে, তাদের জন্য শসা উপকারী হতে পারে। এটি কোমল ও এসিডিক বা ফ্যাটসমৃদ্ধ নাশতার তুলনায় রাতে অস্বস্তি কমায়।

শিশুর মন ভালো কি না, বুঝুন এই ৫ প্রশ্নোত্তরে

প্রতিদিন কতটা শসা খাবেন

যদিও শসা স্বাস্থ্যকর, তবে অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়। প্রতিদিন ১–২টি মাঝারি আকারের শসা খাওয়া বেশিরভাগ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের জন্য নিরাপদ। এতে যথেষ্ট ভিটামিন, খনিজ ও হাইড্রেশন পাওয়া যায়। কিন্তু অতিরিক্ত ফাইবারের কারণে পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি হয় না।

যাদের কিডনির সমস্যা আছে বা পটাশিয়াম সীমিত খাদ্যাভ্যাসে আছেন, তাদের শসা বেশি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। কারণ যদিও এতে পটাশিয়াম খুব বেশি না, তবে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিলিয়ে খেলে পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।

ওজন কমাতে কখন শসা খাবেন

ডায়েটে মুঞ্চি খাবার যোগ করার চমৎকার উপায় হচ্ছে শসা। এটি খাওয়ার পর অপরাধবোধ হয় না। এতে পানি বেশি, ক্ষুধা কমায়, অতিভোজন রোধ করে এবং ফাঁপাভাব দূর করে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা, ওজন কমাতেও সহায়ক!

ইউরিক এসিডের ভাণ্ডার যে শাক

তাই, আপনার যদি ওজন কমানো লক্ষ্য হয়, তবে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের জন্য খাবারের আগে শসা খান। আর সতেজ ও হাইড্রেটেড অনুভূতির জন্য খাবারের পরে খান। আদর্শ পরিমাণ প্রতিদিন একটি মাঝারি শসা, সুষম খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে, সালাদে কেটে, স্মুদিতে মিশিয়ে বা খাস্তা স্ন্যাক হিসেবে শসা খাওয়া যেতে পারে। এটি হাইড্রেশন, হজম ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপায়।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১০ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৭:৪৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit