মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়োজাহাজ ও ফুড ড্রিংক কিনতে চায় সরকার

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ৩১ Time View

ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।র মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা জানান।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর অংশ হিসেবে সরকারি খাতে ফুড ড্রিংক কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে উড়োজাহাজ এবং সামরিক যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন করে একটি চিঠি দিয়েছেন যেখানে বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সেটির কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে ১ আগস্ট থেকে। এর সাথে তারা আগের যে ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্টের যে খসড়া পাঠিয়েছিল তার ওপর আমাদের রেসপন্স আমরা পাঠিয়েছি। সেটার ওপর আমাদের কয়েক দফা মিটিং হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন করে একটি চিঠি দিয়েছেন যেখানে বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সেটির কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে ১ আগস্ট থেকে। এর সাথে তারা আগের যে ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্টের যে খসড়া পাঠিয়েছিল তার ওপর আমাদের রেসপন্স আমরা পাঠিয়েছি। সেটার ওপর আমাদের কয়েক দফা মিটিং হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভার্চুয়ালি আমি যুক্ত ছিলাম সবগুলো মিটিংয়ে। আমাদের উপদেষ্টা ওখানে আছেন। আমাদের সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার ছিলেন মিটিংগুলোতে। এরপর আজকে আমরা যে ডকুমেন্ট পেলাম, এটার ওপর মূলত আলোচনা হবে আগামী ১০ এবং ১১ জুলাই। সেই সভায় যোগদান করতেই মূলত আমি আজকে যাচ্ছি।

বাণিজ্য সচিব বলেন, দেখুন, তারা তো একটি চিঠি দিয়ে আরোপ করল। আরোপ করার পরেই তারা তাদের প্রস্তাব পাঠাল। সেটার ওপর যেহেতু আলোচনা হবে। আলোচনার দরজা যেহেতু খোলা আছে, কাজেই কিছু একটা আউটকাম তো আমরা আশা করি সব সময়ের জন্যই।

আলোচনায় সরকারের যুক্তিগুলো কী কী থাকবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মোটাদাগে আমাদের যুক্তিগুলো থাকবে প্রথমত শুল্ক কমানো এবং দ্বিতীয়ত আমাদের ট্রেড রিলেটেড যে ইস্যুগুলো আছে সেগুলোতে আমরা যেন অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে না পড়ি। বাংলাদেশের জন্য আমাদের প্রধান বিবেচ্য বিষয় বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের এক্সিস্টিং বাণিজ্য রক্ষা করা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে তারা কিছু জিনিস চেয়েছে, সেটা হল শুল্ক কমানো। পর্যায়ক্রমে শুল্ক, ভ্যাট, সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি এগুলো যেন আমরা কমাই। সে ধরনের প্রস্তাব তারা করেছে। আমরা সেটা এনবিআরের সাথে আলোচনা করার পরে, সরকারের অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

তিনি বলেন, এই চিঠিতে যা যা উল্লেখ করেছে তারা, তাতে যা ছাড় চেয়েছে, সেগুলো আমরা অবশ্য আগেই প্রমিস করেছি এবং সেগুলোর ওপর এমনিতেও ডিউটি খুব কম। যেমন গম, সয়াবিন, এয়ারক্রাফট, অন্যান্য মেশিনারি এগুলোর ওপর এমনিতেই ডিউটি রেট খুব কম। আলাপ-আলোচনা করে কিছু ছাড় তো দিতে সম্মত হতেই হবে।

কীভাবে কোন কোন ক্ষেত্রে বাণিজ্য বাড়াবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাণিজ্য বাড়ানোর জন্যে তারা যদি কিছু শুল্ক ছাড় দেয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবে বাণিজ্যিক ট্রেডের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সরকারি ট্রেড বাড়ানোর জন্য আমরা ফ্যাসিলিটি দেবো। আপনারা জানেন, আমাদের বিমান বহরের প্রায় সব এয়ারক্রাফট বোয়িং। আমাদের বিমানের ইনফ্রাস্ট্রাকচার যা আছে সেটাও বোয়িং। কাজেই বোয়িং ফ্লাইট কেনার জন্য আমাদের কিছু আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে শিগগিরই। আমরা সেভাবে নেগোসিয়েশন করেছি বোয়িংয়ের সাথে। এছাড়া তুলা আমদানিকে আমরা প্রমোট করব। আপনারা জানেন যে তুলার ওপর এমনিতেই শূন্য শুল্ক। কিন্তু সেখানে আমেরিকান তুলা আমদানি যাতে বেশি হয় সেজন্য আমরা কিছু ফ্যাসিলিটি এখানে তৈরি করে দেব।

সচিব বলেন, সরকারি খাতে যে সমস্ত ফুড ড্রিংক কেনা হয় সেক্ষেত্রে আমরা আমেরিকাকে একটু প্রাধান্য দেব। এভাবে আমরা আসলে আমেরিকান ট্রেডটা বাড়াবো। আর আপনারা জানেন যে, আমাদের মিলেটারি ইকুইপমেন্টের একটা বড় অংশ আসে আমেরিকা থেকে। সে সমস্ত ক্ষেত্রও আমাদের বিবেচনায় আছে।

মিলেটারি ইকুইপমেন্ট বলতে কি অস্ত্র বোঝাচ্ছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, না। আমরা আমাদের মিলিটারি হার্ডওয়্যার বলতে যেটা বুঝায়, সেটা হলো আমাদের ভিকেলগুলো, আর্মভিকেল, আদার্স‌…। আমাদের যা যা সংগ্রহ করা হয়, এর বেশিরভাগ আমেরিকা থেকে করা হয়। ওখানে তাদের দিক থেকে কোনো চাপ নেই। তারা বলেছে, যখন কেনা হবে, আমরা যেন তাদের গুরুত্ব দেই। এ ব্যাপারে তাদের কোনও বিশেষ চাহিদা নেই। আমরা যেন তাদের প্রাধান্য দেই। অন্যান্য মেশিনারিজের ক্ষেত্রেও সে কথা তারা বলেছে। তাতে সম্মত হতে আমাদের অসুবিধা নেই।

তুলার ওপর এআইটি নিয়ে কারা এক প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, আমাদের তুলার ওপর ২ শতাংশ এআইটি ইম্পোজ করা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমাদের তুলা খাতের, বিশেষ করে টেক্সটাইল খাতের যারা অংশীজন তারা সরকারের সাথে আলোচনা করছেন। সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত কিছু একটা আসবে। কিন্তু বাই রেটারাল ট্রেডের ক্ষেত্রে এটার তেমন কোনও সম্পর্ক নেই।

ভিয়েতনাম আলোচনার মাধ্যমে ২৬ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে। সেখানে আলোচনায় বাংলাদেশের খুব বেশি তৎপরতা দেখা যায়নি। সাংবাদিকের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে তিনি বলেন, তৎপরতায় পার্থক্যটা আমরা মনে করি না। যেদিন থেকে পাল্টা শুল্ক এম্পো‌জ হয়েছে, তারপর আমাদের প্রধান উপদেষ্টা, বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ আমি চিঠি দিয়েছি। আমরা প্রায় পাঁচ দফা মিটিং করেছি। এরপর তারা যে ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট খসড়া পাঠিয়েছে সেগুলোর ওপর চার দফায় আমরা অ্যামেন্ডমেন্ট পাঠিয়েছি, সেগুলোর ওপর নেগোসিয়েশন করেছি। এছাড়া ইমেইল যোগাযোগ বা টেলিফোন যোগাযোগে এগুলো চলছে। কাজেই আমরা একদম ফুলটাইম এনগেজড ছিলাম গত ২ এপ্রিল থেকে। আমরা এনগেজড না বা তৎপর।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গতকাল যে ৩৫ শতাংশের চিঠিটা এসেছে এটা আমরা আশা করিনি। কারণ আমাদের এই সপ্তাহে মিটিংগুলো নির্ধারিত ছিল। এর মধ্যেই এই চিঠিটা সম্পর্কে আমরা জানতাম না।

নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে শুল্ক কমাতে না পারলে দেশের আমদানি-রপ্তা‌নির ওপর চাপ আসবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, প্রেশার হবে, সেটা তো সবাই বোঝে। সেটা যাতে না হয় সেজন্য আমরা যাচ্ছি আলোচনা করতে। আশা করছি কিছু ভালো কিছুই পাব।

এই চিঠি আসা কি নেগোসিয়েশনে কোনও চাপ তৈরি করবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শেষ পর্যায়ে তো তারা বলেনি কখনও। এখানে বলতে পারেন মাঠ পর্যায়ে। কারণ হলো, তারা আগস্ট পর্যন্ত এই চিঠির কার্যকারিতা দিয়েছে। ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে এক মাস সময় দিলো এবং খসড়া এখন পাঠাল। এর অর্থ, নেগোসিয়েশন করে কিছু একটা করা যাবে। আমরা সেটার জন্য চেষ্টা নিচ্ছি।

তিনি বলেন, এক মাস হাতে রেখে আজ ডকুমেন্ট হ্যান্ডওভার করা হয়েছে। নেগোসিয়েশনের ডেট দেওয়া হয়েছে। যেটা তাদের পক্ষ থেকেই দেওয়া হয়েছে। তার মানে নেগোসিয়েশনের দরজা খোলা রয়েছে। আমরা নেগোসিয়েশনে এনগেজ হচ্ছি। আমরা কথা বলছি। আমাদের উপদেষ্টা সেখানে আছেন। আমি আজকে যাচ্ছি সন্ধ্যায়। আমরা কিছু একটা ফলাফল পাবো না এরকম আশা করে তো আর সেখানে যাচ্ছি না। আশা করি কিছু একটা ফলাফল আমরা পাব আলোচনা করে।

কিউএনবি/অনিমা/০৮ জুলাই ২০২৫,/বিকাল ৫:২৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit