শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

যারা আল্লাহর বন্ধু ও শয়তানের শত্রু

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫
  • ২৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : পৃথিবীর এক শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ তাঁর বন্ধু বলেছেন। যাঁদেরকে ওলি বা আউলিয়া বলা হয়। অন্য একদল মানুষ শয়তানের বন্ধু। যাদের আউলিয়াউশ শয়তান বলা হয়।

কোরআন-হাদিসে উভয় শ্রেণির গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে।

নবীগণ আল্লাহর সর্বোত্তম বন্ধু

পৃথিবীতে আল্লাহর নবী ও রাসুলগণ তাঁর সর্বোত্তম ওলি বা বন্ধু। কেননা তাঁরাই ছিলেন আল্লাহর সবচেয়ে অনুগত বান্দা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন দ্বিন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নুহকে।

আর যা আমি প্রত্যাদেশ করেছিলাম তোমাকে আর যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহিম, মুসা ও ঈসাকে, এই বলে যে, তোমরা দ্বিনকে প্রতিষ্ঠিত কোরো আর তাতে মতভেদ কোরো না।’ (সুরা শুরা, আয়াত : ১৩)

আল্লাহ আরো বলেন, ‘যখন আমি নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম আর তোমার কাছ থেকেও আর নুহ, ইবরাহিম, মুসা ও মারিয়ামপুত্র ঈসা (আ.)-এর কাছ থেকে, তাঁদের কাছ থেকে গ্রহণ করেছিলাম দৃঢ় অঙ্গীকার। সত্যবাদীদের তাঁদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করার জন্য। তিনি কাফেরদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন পীড়াদায়ক শাস্তি। (সুরা আহজাব, আয়াত : ৭-৮)

যারা আল্লাহর বন্ধু

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাঁর বন্ধুদের পরিচয় তুলে ধরে বলেছেন, ‘সাবধান! আল্লাহর বন্ধুদের না কোনো আশঙ্কা আছে, আর না তারা বিষণ্ন হবে। তারা হচ্ছে সেই লোক, যারা ঈমান এনেছে ও আল্লাহকে ভয় (তাকওয়া অবলম্বন) করেছে। তাদের জন্য সুসংবাদ রয়েছে পার্থিব ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথায় কোনো পরিবর্তন হয় না; এটা হচ্ছে বিরাট সফলতা। (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৬২-৬৪)

বন্ধুদের প্রতি আল্লাহর অঙ্গীকার

আল্লাহ তাঁর বন্ধুদের সাহায্য-সহযোগিতার অঙ্গীকার করে বলেছেন, ‘তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ ও তাঁর রাসুল আর মুমিনরা—যারা নামাজ আদায় করে, জাকাত প্রদান করে আর তারা বিনয়ী।

আর যে ব্যক্তি বন্ধুত্ব রাখবে আল্লাহর সঙ্গে, তাঁর রাসুলের সঙ্গে, আর মুমিনদের সঙ্গে, তবে (তারা আল্লাহর দলভুক্ত হলো আর) নিশ্চয়ই আল্লাহর দলই বিজয়ী। (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৫৫-৫৬)

যারা শয়তানের বন্ধু

অন্য আয়াতে আল্লাহ শয়তানের বন্ধুদের পরিচয় এভাবে বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লাহই হচ্ছেন মুমিনদের বন্ধু (বা অভিভাবক)। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যান; আর যারা অবিশ্বাস করেছে, শয়তান তাদের বন্ধু (ও পৃষ্ঠপোষক) সে তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। তারাই জাহান্নামের অধিবাসী আর তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৫৭)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন তুমি কোরআন তিলওয়াত করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে আর তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে, তাদের ওপর তার (শয়তানের) কোনো কর্তৃত্ব নেই। তার কর্তৃত্ব শুধু তাদের ওপর যারা তাকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে, আর যারা তার (আল্লাহর) সঙ্গে শরিক করে।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৮-১০০)

শয়তানকে বন্ধু বানানো নিষিদ্ধ

শয়তান মানবজাতির শত্রু সুতরাং তারা তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি যখন ফেরেশতাদের বলেছিলাম তোমরা আদমকে সিজদা কোরো, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করল। সে ছিল জিনদের একজন। সে তার প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করল; তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে তাকে ও তার বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছ? আর তারা তো তোমাদের শত্রু, জালিমদের জন্য নিকৃষ্টতম বিনিময়।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত : ৫০)

শয়তানের বন্ধুদের কাজ

পৃথিবীতে শয়তানের বন্ধুরাই অপরাধপ্রবণ। তারা অশ্লীল কাজ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি শয়তানকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, যারা অবিশ্বাসী। যখন তারা কোনো অশ্লীল কাজ করে, তখন তারা বলে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের এরূপ করার ওপর পেয়েছি।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৭-২৮)

বন্ধুদের প্রতি শয়তানের অঙ্গীকার

শয়তান বন্ধুদের কোনো ভালো উপহার দেয় না, বরং তারা সঙ্গী-সাথিদের ক্ষতিসাধন করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই শয়তানরা নিজেদের সঙ্গী-সাথিদের মনে এমন কুমন্ত্রণা প্রবেশ করিয়ে দেয়, যাতে তারা তোমাদের সঙ্গে ঝগড়া ও বিতর্ক করে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২১)

শয়তানকে বন্ধু বানানোর ক্ষতি

আল্লাহ শয়তানকে বন্ধু বানানোর পরিণতি সম্পর্কে বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করবে সে স্পষ্ট ক্ষতির মধ্যে পতিত হবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৯)

লেখক : ইসলামী গবেষক

কিউএনবি/অনিমা/২৫ মে ২০২৫, /সকাল ৬:৫৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit