শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ গ্রেপ্তার ৭৯০ বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের বিরুদ্ধে ইসরাইলে ব্যাপক বিক্ষোভ গণভোট ও নির্বাচন নিয়ে যে বার্তা দিলেন প্রেস সচিব আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল থেকে ৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার : ডিএমপি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম: প্রধান উপদেষ্টা আজ থেকে নাক গলান শুরু করব: বুলবুল টাকা দিয়ে নেতাকর্মীদের মিছিল করায় আ.লীগ : তালেবুর রহমান আশুলিয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষককে মারধর; জোরপূর্বক সই নিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ  রাঙামাটিতে তরুনীকে ধর্ষণ করে নগ্ন ভিডিও ধারনের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত সালাউদ্দিন কারাগারে জাতীয় নির্বাচনের গলার কাঁটা জুলাই সনদ

হামাসের জিম্মিদশা থেকে ফিরে নিজ বাসায় ধর্ষণের শিকার ইসরাইলি তরুণী

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
  • ২৭ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তেল আবিবে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন ইসরাইলি তরুণী মিয়া শেম। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালিয়ে হামাস যাদের জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল, তাদের একজন তিনি। দ্য টাইমস অব ইসরাইল

২২ বছরের মিয়া সেদিন ইসরাইলে নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত ছিলেন ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটির যোদ্ধাদের গুলিতে আহত হন। গুলি তার হাতে লেগেছিল। হামাসের হাতে বন্দি থাকার সময় মিয়া শেম ধর্ষণের শিকার হওয়ার আতঙ্কে থাকতেন। কিন্তু তাকে যে নিজ বাড়িতে এমন ঘটনার শিকার হতে হবে, তা তার কল্পনারও বাইরে ছিল।

ইসরাইলের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মিয়া তেল আবিবের একজন সুপরিচিত ফিটনেস ট্রেইনারের বিরুদ্ধে তাকে মাদক দেওয়ার ও ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। মিয়া এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মার্চের শেষ দিকে ওই ট্রেইনারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া এক তরুণীর যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া নিয়ে নানা কথা হচ্ছিল। অবশেষে সামনে এসে এ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন মিয়া।

গত শনিবার রাতে মিয়া শেম ইসরাইলের টেলিভিশন চ্যানেল-১২–তে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি নিজ অ্যাপার্টমেন্টে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি সত্য প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লুকিয়ে থাকাদের দলে আমি নই। মিয়া বলেন, সারা জীবন এটাই আমার সবচেয়ে বড় ভয় ছিল, জিম্মি হওয়ার আগে, জিম্মি থাকার সময়। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর যেখানে আমার সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা, সেখানেই আমার সঙ্গে এটা ঘটেছে।

হামাসের হাতে জিম্মি হওয়ার ৫৫ দিন পর মুক্তি পান মিয়া শেম। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রথম যুদ্ধবিরতির সময় প্রায় ১০০ জিম্মি মুক্তি দিয়েছিল হামাস। সে সময় আহত মিয়াও মুক্তি পান। মিয়া বলেন, বাড়ি ফেরার পর ওই ট্রেইনারের সঙ্গে তার আলাপ হয়। বিভিন্ন তারকা গ্রাহকের সঙ্গে কাজ করার কারণে ওই প্রশিক্ষকের বেশ নামডাক আছে। প্রশিক্ষকের সঙ্গে তিনটি সেশনের পর তিনি মিয়া শেমকে হলিউডের একজন চলচ্চিত্র প্রযোজকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

মিয়া দাবি করেন, তাকে বলা হয়েছিল, তার জীবনের গল্প নিয়ে একটি সিনেমা তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, প্রথমে ওই প্রশিক্ষক একটি হোটেলের লবিতে প্রযোজকের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তাদের সেই সাক্ষাৎ হয়নি। পরে তাকে তার অ্যাপার্টমেন্টে ওই প্রযোজককে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। মিয়া প্রশিক্ষকের ওই প্রস্তাবে রাজি হন। সেদিনের কথা মনে করে মিয়া আরও বলেন, ওই দিন অ্যাপার্টমেন্টে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুও উপস্থিত ছিলেন। নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর প্রশিক্ষক আসেন। এ সময় প্রযোজকের সঙ্গে গোপন বৈঠক হবে উল্লেখ করে মিয়ার বন্ধুকে চলে যেতে বলেন। বন্ধুও বেরিয়ে যান।

ওই সময়ের পর থেকে মিয়ার স্মৃতি ঝাপসা। তিনি সব ঠিকমতো মনে করতে পারছেন না দাবি করে বলেন, আমার শরীর মনে রেখেছে; এটি সবকিছু অনুভব করতে পেরেছে। কিন্তু আমার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছে, সেটা আমি জানতাম না। শরীরের অনুভূতির সঙ্গে চেতনার সংযোগ ঘটাতে আমার তিন দিন সময় লেগেছে। ওই ঘটনার কয়েক দিন পর মিয়ার পরিবার ও বন্ধুরা খেয়াল করেন তিনি স্বাভাবিক আচরণ করছেন না। এতে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন।

মিয়ার মা কেরেন চ্যানেল-১২–কে বলেন, আমার মেয়ে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। সে জিম্মিদশা থেকে খুবই কঠিন শারীরিক ও মানসিক অবস্থা নিয়ে ফিরে এসেছিল। কিন্তু তারপরও তার অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না। এখন আমি তার মধ্যে যে বিধ্বস্ত অবস্থা দেখছি, তাতে আমি সত্যিই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। মিয়া যেদিন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করছেন, সেদিন বিকালের ঘটনা তার আবছা মনে আছে বলে জানান তিনি। এই তরুণী বলেন, প্রশিক্ষক যখন তার কক্ষে প্রবেশ করেন, তখন তিনি বিবস্ত্র ছিলেন। ঘরে তিনি দ্বিতীয় আরেক ব্যক্তির উপস্থিতি টের পেয়েছিলেন।

মিয়ার এক বন্ধু বলেন, সম্ভবত তাকে (মিয়া শেম) মাদক দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি পুলিশের কাছে যান এবং পুলিশ তাকে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হয়, এমন একটি সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়। ওই সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ার শরীরে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। মিয়া নিজেও এমন সব চিহ্ন দেখেন, যার ব্যাখ্যা খুঁজছিলেন। মিয়ার অভিযোগের পর পুলিশ ওই প্রশিক্ষককে গ্রেফতার করলেও পরে ছেড়ে দেয়। তবে পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করছে।

ওই প্রশিক্ষক অবশ্য মিয়ার সঙ্গে কোনো শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যদিও পরে তার বক্তব্যে পরিবর্তন এসেছে এবং পলিগ্রাফ পরীক্ষায় কিছু বিষয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর উত্তর দিয়েছেন তিনি। প্রশিক্ষক ওই দিনের পর মিয়াকে যে টেক্সট পাঠিয়েছেন, সেটাও সন্দেহজনক ছিল। তিনি লিখেছেন, ‘কী দারুণ রাত, ওয়াও’।

এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর আরও একজন নারী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন। নাম প্রকাশ না করে ওই নারী হিব্রু ভাষার একটি দৈনিককে বলেন, ওই প্রশিক্ষক তাকে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ অশ্লীল বার্তা পাঠিয়েছেন।

এদিকে হিব্রু ভাষার দৈনিক পত্রিকা মারিভ–এর বরাতে মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়, হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া তরুণী মিয়া শেম স্বীকার করেছেন, তিনি ইসরাইলের তুলনায় গাজায় অধিক নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করেছিলেন।

 

কিউএনবি/আয়শা/০৬ মে ২০২৫, /বিকাল ৫০:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit