শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মাটিরাঙ্গা জোনের উদ্যােগে  বিশেষ মানবিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান। মাটিরাঙ্গায় পলাশপুর জোনের বিশেষ অভিযানে  ভারতীয় পিস্তল ও তাজা গুলি উদ্ধার। শিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সেক্রেটারি জেনারেল সিবগাতুল্লাহ কুষ্টিয়া সীমান্তে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে পুশইনে বিজিবি’র বাঁধা : পতাকা বৈঠকে ফেরত ভারতের রাজনীতিতে বিজেপির কৌশল ও কংগ্রেসের বিপর্যয়: বাংলাদেশের বিএনপির জন্য শিক্ষণীয় ভারত থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে ম্যান সিটির মালিকপক্ষ মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষ: ঝালকাঠিতে অ্যাডভেঞ্চার-৯’ কর্মী আটক ৪ শহীদ ওসমান হাদীর স্মরণে রাঙ্গামাটিতে নওগাঁর পত্নীতলায় তৃণমূলে গণমানুষের নেতৃত্বে গড়ে উঠছে পুষ্টি সমৃদ্ধ গ্রাম বরিশালে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড

ইসলামের অনিন্দ্য শিক্ষা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : আরো উল্লেখ রয়েছে ‘আর পৃথিবীতে তুমি অশান্তি-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৭৭) সমাজে ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী সবাই মিলেমিশে সম্প্রীতির সাথে বসবাস করার শিক্ষাই ইসলাম আমাদের দিয়েছে। 

ইসলাম হচ্ছে হীরক সদৃশ স্বচ্ছ সুন্দর এক শান্তি। যে কোন আঙ্গিক থেকেই এটাকে দেখা হোক না কেন, এটা হচ্ছে অবিমিশ্র শান্তি, খাঁটি শান্তি এবং শান্তি ভিন্ন আর কিছুই নয়। ধর্মের সার্বিক ইতিহাসে প্রথমবারের মত ইসলামের যথার্থ নামটিই হচ্ছে অনুপম, ধর্মটির এমন একটি নাম দেয়া হয়েছে, আক্ষরিকভাবেই যার অর্থ হচ্ছে ‘শান্তি’। এর আরেকটি অর্থও রয়েছে, যা হচ্ছে, খোদার ইচ্ছা ও আদেশের ওপর পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ। যে ব্যক্তি প্রকৃত অর্থেই ইসলামে বিশ্বাস করে, তাকে মুসলমান বলে। খাঁটি-মুসলমানের একটি সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা দান করেছেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)। 

তিনি (সা.) বলেছেন, 

যার হাত এবং জিহ্বা থেকে সব মানুষ নিরাপদ থাকে সেই প্রকৃত মুসলমান’ (সুনান নিসাই, ৮ম খণ্ড, কিতাবুল ইমান)। ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পৃথিবীময় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং পবিত্র নবী ও শ্রেষ্ঠনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সমগ্র মানবজাতির জন্য শান্তির বাণী বিস্তারকারী। ইসলাম যে প্রকৃতপক্ষেই ‘শান্তির বার্তাবাহক, ঘৃণা, সন্ত্রাস, হিংস্রতা অথবা রক্তপাতের বার্তা হবার-চাইতে বহু যোজন দূরে, তা বুঝতে পবিত্র কোরআন আমাদেরকে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন সর্বপ্রথম এ জোরালো বিবৃতি দান করে যে, ‘ধর্মে কোন জবরদস্তি নেই’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৬)। 

 

এ আয়াত স্পষ্টভাবে এ ঘোষণা দেয় যে, সমগ্র বিশ্বের সকল মানুষই তাদের নিজ ধর্ম-পছন্দ করতে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন, তারা যে ধর্মই পছন্দ করবে, যে ধর্মের আজ্ঞানুবর্তী হয়ে তারা সুখী হবে, সে ধর্মই তারা প্রতিপালন করবে। পৃথিবীর বুকে এমন ব্যক্তি নেই, যে কোনোভাবে কাউকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করবে অথবা সেজন্য শক্তি প্রয়োগ করবে। পবিত্র কুরআনই এ ঘোষণা দেয় যে, বিশ্বাসের স্বাধীনতা হচ্ছে সব মানুষের মৌলিক অধিকার। পছন্দমাফিক যেকোনো ধর্মেই তারা বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে এবং তাদের পছন্দ মোতাবেক তারা যে কোন ধর্মেরই আজ্ঞাবাহী সদস্য হতে পারে। 

পবিত্র কুরআন এই ঘোষণা করে,
বল, এটা হচ্ছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে আগত সত্য, সে কারণে যে চায়, এতে বিশ্বাস করুক এবং যে চায়, অবিশ্বাস করুক (সুরা কাহফ, আয়াত: ২৯)। এই আয়াত থেকে এ শিক্ষাই পাওয়া যায়, যারা এতে বিশ্বাস করতে পছন্দ করে, তাদেরকে তা করতে দাও এবং যারা এতে বিশ্বাস করতে চায় না, তাদেরকে সেটা অগ্রাহ্য করতে দাও। ধর্মের বিষয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এটাকে পছন্দ করার ব্যাপারে মানুষকে স্বাধীনতা দান করা হয়েছে। ইসলামের এমন কোন অস্ত্র নেই, যা দিয়ে কোন মানুষকে জবরদস্তি করে ধর্মান্তরিত করা যায়।

অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে আচরণের বিষয়ে ইসলামের শিক্ষা নিয়ে অন্য আরেকটি প্রশ্ন অনেকের মনে পীড়া দেয়। ইসলাম কি মুসলমানদেরকে অন্যধর্মের অনুসারীদের প্রতি ঘৃণা করতে নাকি সম্মান ও দয়া প্রদর্শন করতে শিক্ষা দেয়? মহানবী (সা.) বলেন- জেনে রাখ, যে ব্যক্তি কোন অঙ্গীকারবদ্ধ অমুসলমানের ওপর জুলুম করবে, তার অধিকার খর্ব করবে, তার ওপর সাধ্যাতীত কোন কিছু চাপিয়ে দিবে বা তার অনুমতি ব্যতীত তার কোন বস্তু নিয়ে নিবে আমি পরকালে বিচার দিবসে তার বিপক্ষে অবস্থান করবো (আবু দাউদ)। 

অমুসলমানদের উপাসনালয়ে হামলা ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। শুধু তা-ই নয় অমুসলমানরা যেগুলোর উপাসনা করে সেগুলিকে গালমন্দ করতেও বারণ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন- 

তোমরা তাদেরকে গালি দিও না, যাদেরকে তারা আল্লাহকে  ছেড়ে উপাস্য রূপে ডাকে, নতুবা তারা অজ্ঞতার কারণে শত্রুতাবশত: আল্লাহকে গালি দিবে (সুরা আনআম: ১০৯)। ফলে ইসলাম সকল ধর্মাবলম্বীদের মাঝে এক সামাজিক সম্প্রীতি সৃষ্টির ব্যবস্থাপত্র দিয়েছে। 

ইসলাম সোনালি এক নীতি নির্ধারণ করেছে, যা সকল মানুষই অনুসরণ করতে সক্ষম এবং তা থেকে সবাই উপকৃত হতে পারে। ইসলাম এ শিক্ষা দান করে যে, সব আচরণের ভিত্তি সর্বদাই ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘হে যারা ইমান এনেছো, আল্লাহর ব্যাপারে স্থির-সংকল্প হও, সাক্ষ্যদানে নিরপেক্ষতা বজায় রাখো এবং মানুষের শত্রুতা যেন তোমাদের ন্যায়-বিচারহীন কোন কাজে প্ররোচিত না করে। সর্বদাই ন্যায়পরায়ণ হও, সেটাই হচ্ছে সততার অধিকতর নিকটবর্তী এবং আল্লাহ্কে ভয় কর। তোমরা যা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ অবশ্যই অবগত আছেন’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৮)।

একথা এটাকে পর্যাপ্তভাবে খোলাসা করেছে যে, ইসলামের প্রকৃত অনুসারীদের ওপর এটা নির্ধারিত করা হয়েছে, শত্রুদের সাথেও তারা ন্যায্যতার নিরিখে আচরণ করবে। 
মূলত ইসলাম এমন এক শান্তিপ্রিয় ধর্ম, যা ঐক্য ও সহযোগিতার অনুপম শিক্ষার বিস্তার ঘটায়। এমন শান্তিপ্রিয় ধর্মের পক্ষে এমন কোন সম্ভাবনা আছে কি, সমাজে কোরো বিরুদ্ধে সহিংসতা অথবা ঘৃণার বিস্তার ঘটাবে? অবশ্যই না। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা অনুসরণ করে চলার তৌফিক দিন, আমিন।
লেখক: কলামিস্ট

 

কিউএনবি/আয়শা/১৬ এপ্রিল ২০২৫,/বিকাল ৪:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit