মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ০২:০২ পূর্বাহ্ন

হার্ভার্ডের ২.২ বিলিয়ন ডলারের তহবিল স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫২ Time View

আন্তর্জাতিক  ডেস্ক : হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি প্রত্যাখ্যান করায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতিষ্ঠানটির ২.২ বিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ৬০ মিলিয়ন ডলার চুক্তিভিত্তিক অর্থায়ন স্থগিত করেছে। এই পদক্ষেপটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের চাপে নতি স্বীকার না করে স্পষ্টভাবে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপর যে রক্ষণশীল নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাকে ‘অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপ’ বলে বর্ণনা করে হার্ভার্ড তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির এই অবস্থান প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের জন্য নির্ধারিত ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এর আগে গত মাসে, ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে উদ্ভূত কথিত ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবেলার অংশ হিসেবে হার্ভার্ডের ৯ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান ও চুক্তি পর্যালোচনার ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এক খোলা চিঠিতে বলেন, সরকারের এই দাবি ‘হার্ভার্ড সম্প্রদায়ের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা’ এবং একটি বেসরকারি জ্ঞানকেন্দ্রের ‘মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার প্রতি হুমকি’। চিঠিতে আরও বলা হয়, এই চাহিদাগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোড লঙ্ঘনের অভিযোগ রিপোর্ট করা, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কাঠামো ও নেতৃত্বে সংস্কার আনা, বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক (ডিইআই) কর্মসূচি বাতিল করা, এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়োগ ও ভর্তি নীতিমালায় পরিবর্তন আনা।

গারবার বলেন, ‘এই ধরনের হস্তক্ষেপ নজিরবিহীন এবং ফেডারেল সরকারের এখতিয়ারের বাইরে।’তিনি আরও বলেন, ‘কোনও সরকার, তা যে দলই হোক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিতে পারে না—তারা কী পড়াবে, কাকে ভর্তি বা নিয়োগ দেবে, এবং কী নিয়ে গবেষণা বা অনুসন্ধান চালাবে।’যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ টাস্কফোর্স এক বিবৃতিতে জানায়, গারবারের বক্তব্য ‘দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে বিদ্যমান এক বিপজ্জনক মনোভাবের প্রতিফলন, যারা মনে করে সরকারি অনুদানের সঙ্গে নাগরিক অধিকার রক্ষার দায়বদ্ধতা আসে না।’

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক প্যাটি কালহেইন জানান, হার্ভার্ড প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যারা খোলাখুলি এই চাপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং এমনকি আইনি লড়াইয়েরও ইঙ্গিত দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে চুপ থেকেছে, হার্ভার্ড সেখানে ব্যতিক্রম। আর যদি কেউ লড়াই করতে পারে, সেটা হার্ভার্ডই।’ 

উল্লেখযোগ্য, এই পদক্ষেপ হার্ভার্ডের ক্ষেত্রেই প্রথম নয়। এর আগে মার্চ মাসে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান স্থগিত করা হয়েছিল।  ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ওই ক্যাম্পাসে ‘নিরবচ্ছিন্ন সহিংসতা, ভয়ভীতি ও ইহুদিবিদ্বেষমূলক হয়রানি’ চলছিল। ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন বিদেশি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এবং শত শত শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

 

কিউএনবি/আয়শা/১৫ এপ্রিল ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit