ডেস্ক নিউজ : প্রশ্ন: আমাদের মহল্লার মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। তাই মসজিদের কাছাকাছি এক ব্যক্তির মালিকানাধীন জায়গায় মসজিদের আদলে টিন দিয়ে একটি নামাজের জায়গা বানানো হয়েছে। আগত রমজান মাসেও এখানেই হয়ত নামাজ পড়তে হবে। রমযানের শেষ দশকে এই অস্থায়ী মসজিদটিতে ইতিকাফ করা যাবে কি না?
ইতিকাফ কিভাবে করবেন
ইতিকাফ অর্থ আটকে রাখা, মগ্ন থাকা, কোনো জিনিসকে আঁকড়ে ধরা। ইতিকাফের শাব্দিক অর্থ হলো অবস্থান করা, কোনো বস্তুর ওপর স্থায়ীভাবে থাকা। ইতিকাফের মধ্যে নিজের সত্তাকে আল্লাহতায়ালার ইবাদতের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হয় এবং নিজেকে মসজিদ থেকে বের হওয়া এবং পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকা।
পরিভাষায় বলা হয়-‘আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মসজিদের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখে সেখানে অবস্থান করা এবং দুনিয়াবি সব কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখা।’ আল্লাহতায়ালা ইতিকাফ সম্পর্কে বলেন-‘(আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈল (আ.)কে অঙ্গীকারবদ্ধ করলাম, তোমরা উভয়ে আমার (কাবা) গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকু ও সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।’ (সূরা বাকারাহ-১২৫)।
ইতিকাফ তিন প্রকার, প্রথম প্রকার ওয়াজিব ইতিকাফ কেউ যদি কোনো কারণবশতঃ ইতিকাফের মান্নত করে তাহলে তার ওপর ওই মান্নত পূরণার্থে ইতিকাফ করা ওয়াজিব।
দ্বিতীয় প্রকার মুস্তাহাব ইতিকাফ; এক বা দুদিন নফল ইতিকাফকে বলা হয়।
তৃতীয় প্রকার সুন্নাতে মুআক্কাদায়ে কিফায়া ইতিকাফ। ওই ইতিকাফকে বলা হয় যা রমজানের শেষ দশকে করা হয়। রাসূল (সা.) সারা জীবন রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন তবে জীবন সায়াহ্নের বছর ২০ দিন ইতিকাফ করেছিলেন।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন-‘রাসূল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেছিলেন।’ (সহিহ বুখারি-২০৪৪)।
তবে উম্মতের ইজমা হলো, ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদায়ে কিফায়ার অন্তর্ভুক্ত। যা গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে যে কোনো একজন পালন করলে সবাই দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। আর কেউ যদি পালন না করে তাহলে সুন্নাতের খেলাপ হবে।
সূত্র: সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৪/৩১৬; কিতাবুল হুজ্জাহ ১/২৬৪; মাবসূত, সারাখসী ৩/১২১; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৪/৪৬১; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯০
কিউএনবি/আয়শা/২৩ মার্চ ২০২৫,/রাত ১:৪০