বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৪ অপরাহ্ন

সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি নিয়ে বিভক্তি

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫
  • ৪৩৮ Time View

সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি নিয়ে বাড়ছে বিভক্তি। দেখা দিয়েছে অস্থিরতাও। আন্দোলনে না থাকা ছাত্র এবং ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন- এমন শিক্ষার্থীদের কমিটিতে রাখা নিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে মিছিল-সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

কমিটি থেকে পদত্যাগও করেছেন এক সদস্য। অস্থিরতার কারণে সম্মিলিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও সম্মিলিত মেডিকেল কলেজ সিলেটের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া আটকে গেছে। তবে কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, সুবিধা না পেয়ে কেউ কেউ অপপ্রচার করছেন। তাদেও শোকজ করা হয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিবকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অবাঞ্ছিত  ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলন করেন পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ।

তারা ১৬ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত সংগঠনের সিলেট মহানগর আহ্বায়ক গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন। নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হাসান আহমদ চৌধুরী মাজেদকে মুখ্য সংগঠকের পদ  দেওয়া হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন। এ নিয়ে বিভক্তি দেখা দিলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মহানগর কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেন সমন্বয়ক আসাদল্লাহ আল গালিব। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটিতে অনাকাঙ্কিত অনেক ভুল থাকায় পেজ থেকে কমিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সংশোধনের পর কমিটি প্রকাশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহিদ হাসান অভিযোগ করেন, আসাদুল্লাহ গালিব আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি ঘোষণা দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট মহানগরের কমিটির আহ্বায়ক পদ ছাত্রলীগ নেতাকে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও জেলা কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। সম্প্রতি নগর কমিটি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসমন্বয়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক ফয়সাল হোসেন। পোস্টে তিনি জুলাই আন্দোলনের মূল যোদ্ধাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ করেন।

গত ১৩ অক্টোবর গোলাম মর্তুজা নামে জেলা কমিটির এক সমন্বয়ককে সুযোগসন্ধানী আখ্যা দিয়ে তাঁকে অবাঞ্ছিত  ঘোষণা করে বিবৃতি দেন ২৫ জন সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়ক। বিবৃতিতে তারা অভিযোগ করেন, গোলাম মর্তুজা ৫ আগস্টের আগের কর্মসূচিতে অংশ না নিয়েও নিজেকে প্রধান সমন্বয়ক দাবি করে সিলেটের আন্দোলন সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছেন। গত ৫ ডিসেম্বর সিলেট জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২৭২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।  জেলা পর্যায়ে এটি ছিল সংগঠনের ১৬তম কমিটি। সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ছয় মাসের জন্য এ কমিটি অনুমোদন করেন।

একই ভাবে তারা গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মহানগর কমিটির অনুমোদন দেন। জেলার আহ্বায়ক কমিটিতে মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করা হয়। সদস্য সচিব করা হয় আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুরুল ইসলামকে। কমিটিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মচারী ও একাধিক নিষ্ক্রিয় কর্মীকে রাখাসহ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত একাধিক ব্যক্তিকে রাখায় অসন্তোষ দেখা দেয়। একদিনের মাথায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুয়েল আহমদ পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, কমিটিতে অছাত্র, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও আন্দোলনে ছিলেন না- এমন ব্যক্তি রাখায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।

এদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদের কক্ষে ঢুকে এলোপাতাড়ি মারধরের প্রতিবাদে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীতে বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে মিছিল করেন কিছু শিক্ষার্থী। পরদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার মুখপাত্র মালেকা খাতুন সারা দাবি করেন, তাদের কোনো মিছিল  বের হয়নি। সংগঠনের নাম ভাঙানো হয়েছে। জানতে চাইলে জেলা আহ্বায়ক আকতার হোসেন বলেন, একটি পক্ষ সুবিধা না পেয়ে এসব করছে। সবাইকে পছন্দমতো জায়গা দেওয়া অসম্ভব।

সংগঠন নিয়ে কোনো বিভক্তি বা অস্থিরতা নেই বলে দাবি করেন আকতার। সিলেটের সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত  ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণার এখতিয়ার কারও  নেই। যিনি করেছেন, তাঁকে শোকজ করা হয়েছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৮ মার্চ ২০২৫,/দুপুর ১:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit