আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় দ্বিতীয় দফায় বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে এই চার নারী সেনাকে মুক্তি দেয়া হল। মুক্তির আগে গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) তাদের নাম ঘোষণা করে হামাস। তারা হলেন যথাক্রমে করিনা আরিভ, ড্যানিয়েলা গিলবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। এর বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারে বন্দি ২০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হবে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত চার নারী সেনা সুস্থ রয়েছে। মুক্তির সময় তাদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে ব্যাগ ছিল। তাদেরকে হাসিমুখে জনতার দিকে হাত নাড়তে দেখা যায় এবং তারা বিজয়সূচক চিহ্নও দেখিয়ে ছবিও তোলেন। এই চার নারীর সেনার মুক্তির বিনিময়ে আজ শনিবারই ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে ইসরাইল। এর মধ্যে ৭০ জনকে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরের বাইরে মুক্তি দেয়া হবে।
বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হলে গাজার নেটজারিম করিডোর থেকে সরে যাবে ইসরাইলি বাহিনী। এর ফলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তরে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম হবে। আল জাজিরা জানিয়েছে, উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিরা এরই মধ্যে তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছে এবং নেটজারিমের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের কয়েক মাসের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর গত সপ্তাহে (১৫ জানুয়ারি) গাজায় দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। পাঁচদিন পর স্থানীয় সময় রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দফায় ওইদিন তিন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেয় ইসরাইল।
যুদ্ধবিরতি শুরুর পর হামাস তিন বন্দিকে গাজায় রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর তাদের ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন ৩১ বছর বয়সি ডরন স্টেইনব্রেচার, ২৮ বছর বয়সি ব্রিটিশ ইসরাইলি নাগরিক এমিলি ডামারি ও ২৪ বছর বয়সি রমি গোনেন।
বিপরীতে ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৯০ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে ৬৯ জন নারী ও ২১ জন কিশোর। হামাস জানায়, তারা পশ্চিম তীর ও জেরুসালেমের বাসিন্দা। তাদের সম্প্রতি আটক করা হয়েছিল এবং তাদের বিচার বা শাস্তি দেয়া হয়নি।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে আক্রমণ করে। ইসরাইল সরকারের তথ্য মতে, অতর্কিত হামলায় ওইদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ওই বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে প্রথম যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। সাতদিনের যুদ্ধবিরতিকালে ১১০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ইসরাইল ২৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়, যাদের সকলেই নারী ও শিশু।
প্রায় ১৫ মাস পর গত সপ্তাহে দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী ছয় সপ্তাহের মধ্যে হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরাইলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল তাদের হাতে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। সেই হিসেবে হামাস আগামী পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আরও ২৬ জন বন্দি মুক্তি দেয়ার কথা।
কিউএনবি/আয়শা/২৫ জানুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৪:৪৩